আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন ক্রসফায়ারকে রুখে দাড়াই

Only I know what is my goal, My heart is my temple.

দেশে আইন আছে, আদালত আছে। আমরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছি। এর মাধ্যমে পেয়েছি একটি সংবিধান। ক্রসফায়ারের মাধ্যমে এ সংবিধানকেই অবমাননা করা হয়। আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে ক্রসফায়ার সংবিধান, মানবাধিকার ঘোষণা ও ক্রিমিনাল আইনের লংঘন।

সংবিধানের ৩১ থেকে ৩৫ ধারা পর্যন্ত ফৌজদারী অপরাধের বিচার ও শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আদালতের এখতেয়ার ছাড়া অন্য কোথাও কারও বিচার হতে পারবেনা। ওই আদালতও আইনানুযায়ী কৃত অপরাধের প্রাপ্য শাস্তির বেশি কাউকে দিতে পারবেনা। এছাড়াও জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোসণার ৫ নং ধারা অনুযায়ী কেউ কারও অংগহানী, আত্ম সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট করা এবং মানসিক কষ্ট দিতে পারেনা। যতবড় সন্ত্রাসী হোকনা কেন তাকে বিচার ছাড়া মেরে ফেলা যায়না।

অবৈধভাবে মানুষ মেরে কোনকিছুর সমাধান হয়না। হেফাজত মানে সংরণ করা। কোন ব্যক্তি আইন শৃখলা রাকারীর হেফাজতে নিহত হলে সংরক্ষণে অবহেলা করা হয়। এসব ক্ষেত্র একই গল্প বারাবার বলা হয়। জনগণ বিশ্বাস না করলেও তারা ক্রস ফায়ারের কথা বলে।

একজন ব্যক্তির হাত-পা বাধাঁ থাকে। এসময় গুলি হলে সে কিভাবে ক্রসফায়ারে পড়ে। তার সঙ্গী পুলিশ বা র‌্যাব সদস্যদের আহত হতে দেখা যায়না। লোকজন ক্রস ফায়ারে খুশী হয় এটা ঠিক। তবে এর কারণ রয়েছে।

তারা সন্ত্রাস নির্মূল চায়। সন্ত্রাসীদের সুষ্ঠু বিচার হলেই কোন মানুষকে আর মারতে হবেনা। বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেলফ ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার কথা বলেছেন। আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা একই কথা বলে গেছেন। আমি সাংবাদিক হিসেবে ক্রসফায়ারে নিহত অনেক লাশ দেখেছি।

কোন নিহত ব্যক্তির পিছনে গুলি দেখা যায়না। এগুলো একই ধরনের অজুহাত। আইন শৃংখলা বাহিনী ক্রসফায়ারের পর জনগণের আনন্দ দেখে আত্মহারা হন। আসলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করবে। কেননা এতে প্রমাণিত হয় সন্ত্রাস দমনে পুলিশ ব্যর্থ।

তাদের ওপর জণগণের আস্থা নেই। র‌্যাবের মহাপরিচালক কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থাকে বলেছেন, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ভূল হয়ে গেছে। এজন্য তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেয়া হয়েছে। এগুলো জনসমাক্ষ প্রচার করলে র‌্যাব, পুলিশ নৈতিক মনোবল হারাবে। তবে আমরা জণগন এ ধরনের শাস্তির কথা শুনিনি।

এসব তদন্ত কারা করছে তাও জানিনা। একজন ম্যাজিষ্ট্রেটকে এ ধরনের তদন্ত করতে হয়। এজন্য হাইকোর্টের নির্দেশনাও রয়েছে। পুলিশের অপরাধের তদন্ত পুলিশ করলেতো কিছুই হবেনা। সবকিছুর নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার।

আমার কথা হলো, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেনা । এতে সাধারণ জণগনও আইন নিজের হাতে তুলে নেবে। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে আদালতের দরকার কি। মামলার দরকার হবেনা। আইন বলে দেশে কিছু থাকবেনা।

অপরাধীর অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তবে তাকে আত্মপ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। বিচারে ফাঁিস হলে তাকে অবশ্যই ফাঁসি দিতে হবে। আমি মনে করি দেশে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা পরোপুরি কার্যকর করতে না পারায় রাষ্ট্র হত্যাকারীদের দায়মুক্তির সুযোগে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটে চলছে। এ ঘটনা মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লংঘন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমূর্তিও এতে ুন্ন হয়। এ কারণে দেশের স্বাধীনত লাভের পর এ পর্যন্ত যত বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে তার বিচার হওয়া প্রয়োজন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।