আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আড্ডা রিভিউ : বুয়েটিয়ান ব্লগারদের স্মরণী্য় একটি সন্ধ্যা

আজি হতে শতবর্ষ পরে কে তুমি পড়িছো বসি আমার ব্লগখানি কৌতুহল ভরে

২৮/২৯ তারিখের দিক অদ্রোহের মেইল , বুয়েটের ব্লগারদের নিয়ে একটা গেট টুগেদার করার প্ল্যানের কথা জানালো । ঝটপট সায় দিলাম , আগে কখনও ব্লগার আড্ডায় যাওয়া হয়নি । এমনকি বুয়েটের ব্লগারদের মাঝে বন্ধু সীমান্ত আহমেদ , ফারহান আর জুনিয়র শিটসুজি ছাড়া কাউকে চিনিও না । বেশ অবাক ব্যাপার , ব্লগেও কোন পোস্ট দেয়া হয়নি । ফেসবুকে মাত্র তিনটা মেইল চালাচালির পরেই খুব ঝটপট দু'দিনের মাঝেই ২২ জন ব্লগার সম্মতি দিয়ে ফেলল , ভেন্যু ঠিক হল বুয়েট ক্যাফে , ২ রা সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইফতার +আড্ডা ।

আমি আর সীমান্ত গুলশান থেকে সিএনজি নিয়ে ডিরেক্ট বুয়েট ক্যাফেতে যখন পৌঁছেছি , তখন ৪:৪৫ । তখন ক্যাফেতে ৩/৪ টা গ্রুপ বসে আছে , যেহেতু আগে থেকে কাউকে চিনি না , তাই দু'জন মিলে ঘুরে ঘুরে মনযোগ দিয়ে একটু নিরীক্ষা করে বুঝলাম এদের কেউই ব্লগার সম্প্রদায়ের না । একবার মনে হল , কাউকে ফোন দিই , কোন ফোন নাম্বারও নেই কারও শেষে ঠিক করলাম রশীদ হলে আমাদের ফ্লোর থেকে ঘুরে আসি , অনেকদিন যাওয়া হয় না । ফ্লোরে গিয়ে চমৎকার ১ টা ঘন্টা কাটলো । হঠাৎ সীমান্ত স্মরণ করিয়ে দিল , হায় হায় আমরা তো কেউ চাঁদা দিই নাই ।

এমনকি কত চাঁদা , কখন দিতে হবে তাও জানি না । পড়িমরি করে ক্যাফের দিকে ছুটলাম ৫:৪০ এর দিকে । আসলেই ..... অদ্রোহ আর আবীর কারও কাছ থেকে আগে থেকে চাঁদা না নিয়েই যেভাবে ম্যানেজ করে ফেলেছে , তাতে আমি মুগ্ধ । ২৪ জন ব্লগার ২৪ দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে , ওরা ম্যানেজ না করলে আয়োজনটাই সম্পন্ন করা যেত না । ক্যাফেতে যাবার পথে শেরে বাংলা হল থেকে আমাদের সঙ্গী হল শিটসুজি আর হিমালয়৭৭৭ .... ক্যাফের সামনে গিয়ে দেখি অডিটোরিয়ামের সামনে কয়েকজন বসে আছে , একটা মেয়ে আছে তাদের মাঝে ।

আমি যথারীতি সবার মাইন্ড রিড করে বুঝে গেলাম এরাই সেই স্বজন , ওরাও যেন অপেক্ষা করছে কারও জন্য। আর নাহিন যে একটা মেয়ে সেটা জানা ছিল , তাই একটা মেয়ে দেখে নিশ্চিত হয়ে গেলাম । সবার লেখা পড়ার সাথে সাথে একটা ছবি কল্পনা করে নিতাম মনে মনে । ওখানে গিয়ে অবাক হয়ে খেয়াল করলাম কোন ছবিই মিলছে না । তবে , সাদাত ভাইয়ের টা মিলে গেল একদম পারফেক্ট : নিপাট ভদ্রলোক , নূরানী চেহারা ।

হাতটা বাড়িয়ে দিয়েই বললাম ...."সাদাত ভাই ?" । আবিরকে কেন যেন কার্টুন কার্টুন ভাবতাম , দেখি এই ছেলে বেশ রাশভারী , ভদ্রছেলে (দাড়ির কারণে ??) । মুক্তবয়ান দেখেই চিনে ফেললাম , এই ফেস আমার খুবই চেনা , বুয়েটেই দেখেছি অনেক । পরে কারণটা বুঝলাম , মুক্ত রশীদ হলে আমার ঠিক ওপরের ফ্লোরেই থাকে ....... হলেই তাহলে অনেকবার দেখেছি । অদ্রোহের আউটওয়ার্ড অ্যাপায়ারেন্সও মিলল না , ওকে কেন যেন আমার সেমিনার করে এমন বুদ্ধিজীবি মনে হত (ওর লেখার দারুণ ফ্যান কিনা) , কিন্তু ওর হাসি দেখেই মনটা ভাল হয়ে গেল , দারুণ আন্তরিক আর লাজুক একটা ছেলে বলেই মনে হল ।

হিমালয়৭৭৭ কথা বলে খুবই কম , এই চুপচাপ ছেলেটা লেখা নিয়ে অনেক এক্সপিরিমেন্ট করে , দেখে বুঝার একদমই অবকাশ নেই । ওর সাথে কথা বলে অসম্ভব ভাল লেগেছে (এত কম কথা বলে , তারপরও যে ৪/৫ টা কথা হয়েছে তাতেই ভাল লেগে গেল) । রুমমেট শিটসুজি তো এমনিতেও হ্যান্ডসাম , পাঞ্জাবী পড়ে তো আরও মাঞ্জা । ফোন করে ডেকে আনল ক্ষুরধার লেখনী দিয়ে একটা সময় ব্লগে বহুল পরিচিত আরিফুল হোসেন তুহিনকে । তুহিনের সুদর্শন চেহারায় ওর লেখনীর একটা ছাপ আছে , একটু রিজার্ভ মনে হল (হয়ত হঠাৎ দেখা বলেই) ।

অডিটোরিয়ামের সামনে দাঁড়িয়েই আড্ডা শুরু হল । গরমে সবারই খারাপ লাগছে , কিন্তু কোন এক বিচিত্র কারণে কেউ বসছে না । নাহিনের সাথে কথা হল , তখন পর্যন্ত যারা এসেছে তাদের মাঝে কেবল নাহিনই কবিতা লেখে , এটা ধরিয়ে দেয়ার পর মনে হল নাহিন খানিক বিব্রত । কিন্তু সবাই যখন রায় দিল যে আমরা তাহার কবিতা ভাল পাই , তখন ওর সংকোচ খানিক কাটল । সাদাত ভাইয়ের সাথে ততক্ষণে পুটপুট করে আলাপ জুড়ে দিয়েছি ।

সবাই অপেক্ষা করছে সেলিব্রিটি ফারহান দাউদের (মাফ চাই, আমি কিন্তু এই ট্যাগিং করি নাই , অন্যদের কথা শুনে বুঝা যাচ্ছিল ফারহানই সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগার ) এর মাঝে রিকশায় করে আসল টোনা(শুভ) । শুভ , তোমাকে দেখে আমার প্রথমে কি মনে হইসে জানো ? মনে হইসে , একটু বেশি করে খাওয়া দাওয়া করা উচিত তোমার । কল্পনায় তোমার যে চেহারা ছিল , সেটার সাথে তোমারটাও মিলল না একদম । আমি গম্ভীর রাগী টাইপ কাউকে ভাবতাম , এই ছেলে দেখি মহা হাসি খুশি , পাতলা একটা পাঞ্জাবি পড়ে জামাই সেজে এসেছে । খানিক পর ক্যাপ মাথায় দিয়ে যখন ফারহানের আগমন ঘটল , সবাই হাততালি দিয়ে ওকে স্বাগত জানাল (আফসোস , আমরা কেউ হাততালি পাই নাই ) ।

সবাই এগিয়ে এসে ফারহানের সাথে হ্যান্ডশেক করল (মনে মনে বলছিলাম , সোয়াইন ফ্লুর কালে এত হ্যান্ডশেক ভাল না) । তো ফারহান শুরুতে কি কারণে যেন খানিক ঝিম মেরে বসে থাকল , কথা বার্তা বিশেষ বলছিল না । একবার বলতে চাইলাম "ওই , সেলিব্রিটি ভাব ধরলা নাকি ?" । কিন্তু বললাম না , অপেক্ষা করছিলাম কখন ফারহান তার কথার ফোয়ারা ছোটাবে । সিউল রায়হান আসল প্রায় একই সময় ।

ব্লগের লেখা পড়ে সিউলকেও রুদ্রমূর্তির মোটাসোটা কেউ ভেবেছিলাম (কুংফু পান্ডা প্রোফাইল পিক দেখেই হয়ত) । কিন্তু দেখা গেল , সে তার ধারে কাছেও নেই , একদম নরমাল । একটু পরেই আসল গুহামানব , আকাশনীল (আরে , এই ছেলেকেও তো অনেক দেখেছি , আমাদের বাসে করেই বুয়েট থেকে বাসায় ফিরত) , বোহেমিয়ান কতকথা , ভীষণ চুপচাপ চুপচাপ অঞ্জন সানি , ব্লগীয় বিচারে সবার সিনিয়র হাজ্জাজ বিন ইউসুফ । কেউ মনে করিয়ে দিল ইফতারের সময় হয়েছে , ক্যাফেতে গিয়ে সবাই বসলাম । আমি ত্খনও বুঝতে পারছিলাম না , কিভাবে আয়োজন করা হয়েছে ।

কারণ কেউই চাঁদা দিই নাই , ইফতারের মাত্র কয়েক মিনিট বাকি । গিয়ে দেখি আবির অদ্রোহ সব ব্যবস্থা করে রেখেছে । ক্যাফের জুস , কেনা জুস , ফল , চিকেন গ্রিল , পরোটাও রেডি । আর রেগুলার আইটেম তো আছেই । খাওয়া দাওয়ার সময় গ্রুপ গ্রুপ করে আড্ডা চলছিল ।

আরাফাত ভাই আসলেন , সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিলাম আরাফাত ভাইয়ের সাথে । আরাফাত ভাই , সাদাত ভাইয়ের জুনিয়র জেনে সাদাত ভাইয়ের সে কি আহাজারি !! সাদাত ভাইয়ের সাথে সিএসই বিষয়ক আলাপ করলাম বেশ কিছুক্ষণ । ইফতারের শেষ দিকে হঠাৎ একটা জিনিস খেয়াল করেছি , দেখে একটু মন খারাপ হয়ে গেছে । আবির , অদ্রোহ ....... তোমরা মনে হয় নিজেরা স্যাক্রিফাইস করে আমাদের খাওয়াইসো ..........(কৃতজ্ঞ আমরা সবাই অনেক) । আকাশনীলের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা হল জব , ফিউচার প্ল্যান নিয়ে ।

বোহেমিয়ান জানাল সামহোয়্যারের বুয়েটিয়ান গ্রুপে ৪ দিন আগে অ্যাপ্লাই করেছে , এখনও সাড়া মেলেনি । ওর কথা শুনে সবার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাবার জোগাড় , কারণ অনেকেই আছে দু'মাস অপেক্ষার পর অ্যাপ্রুভাল পেয়েছে , আর ও কিনা ৪ দিনেই ?? ওকে সান্ত্বনা দিয়ে জানানো হল , ব্লগের বুয়েটিয়ান গ্রুপে কোন কার্যক্রম নেই । ছেলেটা এখনও ফার্স্ট পেইজে আসতে পারেনি , ওর পেইজে আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখল । হঠাৎ মনে হল হাট ভাঙতে চলেছে । হিমালয়ের গেস্ট আছে , তাই চলে যাবে ।

সিউলও চলে যাবে , ওর তাড়াহুড়া দেখে নাহিন সন্দেহ প্রকাশ করল সিউল নোয়াখাইল্যা কিনা । এর মাঝে আমরা সাদাত ভাইয়ের সৌজন্যে জুস খেলাম । স্মার্ট ছেলে নকীবুল বারীকে দেখা গেল ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ভাই ফারহানের সাথে আড্ডা দিতে । বলাবাহুল্য নকীব আমাদের মাঝে সবচেয়ে স্মার্ট সেজে এসেছিল , কাজেই স্মার্টনেসের অভাবে ওকে একটা ফার্মের রিসিপশনিস্ট বের করে দিয়েছে বলে যে পোস্টটা দিয়েছিল , সেটার কথা ভেবে নিজের জন্য আতঙ্কিত হলাম (একবার মনে হল , নকীব চাপা মেরেছে নাকি ? ) এরপর শুরু হল ফুটবল পর্ব । ম্যানচেস্টারের সমর্থকদের ভীড়ে টেকা দায় হয়ে পড়ল , আর্সেনালের সহযোদ্ধা আবীরকে পেলাম ।

সাদাত ভাই যখন জানাল উনি ম্যানচেস্টারের রেজিস্টার্ড ফ্যান , তখন আর যায় কোথায় ? চেলসির উপর ম্যানচেস্টারিয়ানদের মহাক্ষ্যাপা বলে মনে হল , আমাদের রেহাই দিল , ফাঁকে জানিয়ে দিলাম যে ম্যানচেস্টার বধের জন্য চেলসিকে মোরাল সাপোর্ট দিই মাঝে মাঝে । পরিস্থিতি প্রতিকুল দেখে সোজা মোহামেডান-আবাহনীর কথা তুললাম । এবার সাপোর্টে খানিক সাম্য আসল । কথায় কথায় বাড্ডা জাগরণী , ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল , আরামবাগ ক্লাবের কথাও আলোচনা হল । জীবন্ত এনসাইক্লোপেডিয়া সীমান্ত আহমেদ একের পর এক ঢাকা লীগের ইনফো দেয়া শুরু করল ।

ব্যাপারটায় সবাই মজা পাচ্ছিলাম । কলুর বলদ আর সুহান ততক্ষণে বিদায় নিল । ব্রাজিল আর্জেন্টিনার ব্যাপারটা খানিক আলোচনা হল , তবে সিরিয়াস কোন মারামারির দিকে যায়নি । হঠাৎ নাহিন জানাল , গরমে সে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছে । সবাই বের হয়ে আসলাম ।

আড্ডার মেইন আইটেম যে বাইরে , সেটা তখনও বুঝিনি । দেয়ালের উপর বসা জনৈক আরাফাত ভাই , স্বল্পভাষী ফসিল ব্লগার হাজ্জাজ ভাই , নাহিন , আর সাদাত ভাই । সীমান্ত তো বাংলা সিনেমার যুগান্তকারী তিনটা ঘটনা বলে হাসির রোল ফেলে দিল । ব্লগ প্রসংগ উঠে এল বারবার , ব্লগের ঘটনা , ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা , ব্যান-ব্যানানি , এটা কার নিক , ওটা কার নিক ? বুয়েটিয়ান আর কে কে আছে , লুল , এ-টিম সব নিয়েই অল্প বিস্তর কথা হল । মিথিলা প্রসঙ্গ উঠতেই আমি জানালাম ব্লগে আমার পড়া প্রথম পোস্ট ছিল মিথিলার লেখা একটা পোস্ট ।

মিথিলার শোকে ব্লগবাসীরা কিভাবে সব বিভেদ ভুলে একাট্টা হয়ে শোকাভিভূত হয়েছিলেন , আর ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হওয়ার পর ব্লগারদের সংহারমূর্তির সেসব কথাও বাদ থাকল না। সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর মিথিলা কাহিনী শুনে গেল । সিএসই এর ব্লগারদের প্রাধান্য ছিল একটু বেশি , সে কারণেই হয়ত সিএসই ডিপার্টমেন্ট নিয়ে আলাদা করে আলোচনা হল । মুভি নিয়ে কথা হল আবীর , অদ্রোহের সাথে । সময়ের অভাবে ওদের কাছ থেকে মুভি আনার কথা ভেবেও আনা হলো না ।

মুক্ত ১ বছর আগে ছাপা বুয়েটের সিএসই ডে'র স্যুভেনির এগিয়ে দিল , যেখানে আমার একটা লেখা ছাপা হয়েছে । ছাপার অক্ষরে এই প্রথম নিজের কোন বড় লেখা পেয়ে ভাল্লাগলো অনেক । ব্লগের কারও নিক উচ্চারণ করার সাথে সাথে কেউ একজন তার সম্পর্কে ডিটেলস ইনফো যখন দিয়ে দিচ্ছিল , সাদাত ভাইয়ের বিস্ময়ের সীমা তখন আর কাটে না ...। তার কথা ..."একেকজন দেখি ব্লগিপিডিয়া" । ফারহানের তাড়া খেয়ে বিদায় জানালাম , তারপর নাহিন , মুক্ত , টোনা , আবির , আরাফাত ভাই , সীমান্ত , হাজ্জাজ ভাই , অদ্রোহের সাথে আবার আড্ডায় মেতে উঠলাম ।

এমন বিদায় পর্ব চলল তিনবার , শেষমেশ যখন বিদায় নিলাম , ১০ টা বাজতে চলেছে । সবাই ফোন নাম্বার শেয়ার করার কথা বলছিলাম , কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে খেয়াল করলাম , আমার মোবাইলে চার্জ নেই (জরুরী প্রয়োজনের সময় সবসময় এমনটা ঘটে) একটা অসাধারণ সন্ধ্যার অভিজ্ঞতা নিয়ে বুয়েট ছেড়ে রওনা হলাম ...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.