আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
আগে থেকেই ধরে নিয়েছিলাম এই পোস্ট আমাকে লিখতেই হবে, কিন্তু কিভাবে লিখবো সেটা নিয়ে তেমন ভাবা হয়নি। তবে পোস্ট টা এজন্য লিখবো বলেই ধরে নিয়েছি যে হয়তো আজ হতে ২০-৩০ বছর পর যখন লেখাটা পড়বো তখন যেনো আজকের দিনের কথা মনে পড়ে একটু নস্টালজিক হতে পারি আর কি!
বস টানা ৭ দিনের ইন্ডিয়া ট্যুর দিয়ে অফিসে ঢুকলেন ১ টায়। আমি আর আরেক সিনিয়র বসকে নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম!
: কি গোপন কিছু বলবে নাকি তোমরা?
: ভাইয়া, আপনার ট্যুর কেমন হলো?
: এইতো, সাকসেসফুল ট্যুর!
পকেট থেকে পাসপোর্ট টা বের করে ভিসার সিলটা দেখিয়ে বললাম," ভাইয়া এটা একটু দেখেন!"
: আরে এতো চেনা চেনা লাগছে! কিন্তু এতো দেরীতে কেনো?
: ভাইয়া আমি নিজেও শিউর ছিলাম না!
: হুমম...তাহলে সমস্যা নাই, রিজাইন দিয়ে দাও, আমি এ্যাপ্রুভ করার ব্যাবস্হা করছি আর কিছু ঠিকানা নিয়ে যাও, ওখানে কাজে দেবে! আমি মান্নানকে বলে দিচ্ছি, সে তোমাকে যথেস্ট হেল্প করবে!
: বস, সে তো আমারে বানতেও পারে, তার কাজের কাজ কিছুই করলাম না, শেষ দিকে সে আমারে দেখলে কপালে এরশাদের ভাজ পড়তো!
সবাই হেসে দিলাম একসাথে! ধরা যাক, গ্রামীনে এটাই শেষ অফিসিয়াল ডে! পাশে গিয়ে দেখি রুবাবা দৌলা সবার কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে এবং চারিদিকে আবেগ ঘন একটা পরিবেশ। সবাই কাদছে আর আমি যাওয়াতে সবাই হাসছে! তবে তাহকিক ভাই নাছোড়বান্দা, তার সিএসআরিডি উদ্বোধন করানোর সময় থাকতে হবে, বলে," আখেরাতের জন্য একটা ভালা কাজ করে যান!"
আমি তেমন কিছুই বললাম না।
বের হয়ে শুভ্রকে ফোন দিলাম। ও টিকিট কেটে ফেলেছে। আজকের এই পোস্ট শুভ্রকে নিয়ে!
শুভ্রর সাথে আমার পরিচয় হোয়াওয়েতে যখন কাজ করতাম। মাঝখানে আমার ফ্রগ জাম্পিং এ ওদের সাথে বিচ্ছেদ ঘটে। তবে এই যাবার প্লানটা করি মূলত এবছরের জানুয়ারীর দিকে।
তখন আমি কেবল রিকোভারী আমার সাম্প্রতিক ব্রোক আপ থেকে। তবে রাসেলের ইংল্যান্ড চলে যাওয়াটা আমার জন্য বেশ হতাশাজনক হয়ে যাচ্ছিলো। রাসেল একজন ছেলে যার কাছে সুখের পরশপাথর আছে, আছে যেনো সকল সমস্যার সমাধান, তবে নিজের সমাধান কখনোই ও খোজেনি। আমরা ওরা সব একই ক্লান। এই ব্লগেও এমন একজনকে পেয়েছি সেও একাজটি করে।
সেও আমাদের রিসেন্ট ক্লান!
যাই হোক, শুভ্রর সাথে আমার রেগুলার দেখা হতে থাকে প্রতি শুক্রবার বোটানিক্যাল নাহলে চিড়িয়াখানায় নাহলে আশুলিয়ায়। ও বলতো ওর পরিবারের কথা। বোনকে বিয়ে দিয়ে পাঝাড়া হলেও নিজের বেতনে সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো,সাথে যোগ দিয়েছে মা-বাবার ট্রিটম্যান্টের খরচ। কোনো মতেই যেনো কিছু হচ্ছিলো না। বললো কি করা যায়!
আমি ভাবলাম ওকে নিজের প্রোজেক্টে নিয়ে নিতে।
নিজের যেখানে যেখানে টাকা ইনভেস্ট ছিলো সেখানটা ওকে দেখালাম। ও খুব ইন্টারেস্ট অনুভব করলো কিন্তু ওর সমস্যা হলো ওর হাতে কোনো ক্যাশ কোনো টাকা নাই। অপশন এ বাদ হয়ে গেলো ১ সপ্তাহের মাথায়।
অপশন বি তে চিন্তা করেছিলাম আমরা ২-৩ মাসের মধ্যে ভিওআইপি করবো। আমাদের জন্য ওটা পারফেক্ট ছিলো এ কারনে যে শুভ্র ম্যাংঙ্গো আর সিএসএলে কর্মরত (যারা ব্যান্ডউইডথ আর আইএসপির ব্যাবসা করেন তাদের কাছে ম্যাংঙ্গো নামটা খুব পরিচিত থাকার কথা) থাকার কারনে ও জানে কিভাবে গ্রে ভিআইপি করলে সেটা ধরা খাবে না।
খরচ একটু যাবে হয়তো এনক্রিপ্টার/ডিক্রিপ্টারে তবে ও ওটায় সস্তায় করিয়ে দিতে পারবে আর ভয়েসের জন্য যত রকম সুইচ, রাউটার সব গুলোর খোজ হাতের মধ্যে চলে আসলো। ডায়াগ্রাম আকলাম বোটানিক্যাল গার্ডেনের পূর্বদিকের জঙ্গলে। নাস্তার মেন্যু ছিলো বড়ই। যেদিন আমার সুইচ আর রাউটার কিনার কথা সেদিন একটা জটিলতার কারনে আমরা কিনতে পারিনি, কারন যার আনার কথা ছিলো সে অন্যজায়গায় ভালো দামে বিক্রি করে দিয়েছে। উল্লেখ্য এসব সবই ছিলো পলিটিক্যাল কিছু পরিচিত লোকের আন্ডারে।
যাই হোউক, শুভ্র তখন খুব হতাশ হয়ে পড়ে। একদিন বাসায় আসলে আমার সাথে বসতে বসতে খেয়াল করলাম আমরা দুজনে সব একই জায়গায় সিভি প্লেস করছি। দুজনেই নানা জায়গা থেকে কল ও পাচ্ছি। আবার এদিকে আমার পিসিতে জার্মানীর আনচেন ইউনিভর্সিটি, অফেন্ডবার্গ, কার্লসরুহিতে আমার এ্যাপ্লিকেশন দেখতে পায়। শুভ্র তখ বলে ওঠে ও এ্যাপ্লাই করবে।
আমি তখন সুইডেন, ফিনল্যান্ড, জার্মানীর তাবৎ আই এলটিএস ছাড়া ফ্রী অথচ থেসে র্যান্কিং আলা ভার্সিটির খোজ নিয়ে দিলাম।
ও শুধু সুইডেনেই এ্যাপ্লাই করে তাও হলো লাস্ট ডেটের সামান্য এক দিন আগে সুইডেনে কাগজ পৌছায়। স্টুডেরার সার্ভার শেষের দিকে ডাউন থাকায় রেজিস্ট্রেশন জটিলতায় ও খুব টেনশনে পড়ে গিয়েছিলো। এদিকে আমার আনচেন থেকে নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে মাস্টার্স থেকে কাগজ এসে পড়ে! আমি ভাবলাম কার্লসরুহি না হলে আমি যাবো না। কার্লসরুহি আমার জন্য এক বিশাল ফেসিনেশনের কাজ করছিলো।
যাই হোউক, এ্যাপ্লিকেশন করার পর ও একটু নিশ্চিন্তে হলেও ওর টেনশন যায় না। তবে আমি অনেকটা নিশ্চিহ্ন ছিলাম এই জন্য তখন গ্রামীন ফোনে বিশাল এক রিস্ট্রকাচার হয়। আমাদের এজিএম সাহেবের প্রোফাইল ঈর্ষান্বিত ভাবে বেড়ে যায়। সে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের মতো কিছু কিছু ছেলেকে পিক করে আর গ্রামীনের ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের এমন কিছু টেকনোলজী নিয়ে কাজ করতে বসিয়ে দেয় যেগুলো নিয়ে কাজ সম্ভবত কেউ করেনি। হয়তো চিন্তা করেছিলো কিন্তু বিজনেস কিভাবে করবে সেটা বুঝতে না পেরে এগোয় নি! আমার ভার ছিলো গ্রামীনের টেকনিক্যালের সব বসদেরকে খুজে একটা আম্ব্রেলায় এনে টেকনোলজী অনুসন্ধান আর ওগুলো কিভাবে ইমপ্লিমেন্টেশন করা যায়।
বস আমাকে দিয়ে দিলেন অগাধ স্বাধীনতা আর ক্ষমতা সবার সাথে ফ্রীতে কাজ করার!
এদিকে শুভ্রকে জানালাম অপশন সি মানে বাইরে যাওয়াটা যদি কাজ না করে তাহলে যেহেতু ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের টেকনিক্যাল দিক আমার হাতেই রান হবে সেহেতু আমাদের কিছু পছন্দের জায়গায় কিছু একটা করবো। কি করবো তার পসিবিলিটি ব্রেকডাউন করলাম। এমন সময় একদিন রাতের বেলা শুভ্র ফোন দিলো, বললো ওর বাবার নাকি টয়লেটের রাস্তা কোনো কাজ করছে না গত দুদিন ধরে ডাক্তার নাকি সন্ধ্যায় বলেছে ১২ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন করাতে। হাতে একটা টাকাও নাই। আমি শুনে কি করবো বুঝতে পারলাম না শুধু জেনে নিলাম কত লাগবে! যাই হোউক, পরের দিন অপারেশন হয়, শুভ্রর চেহারা দিকে তাকালে মনে হতো একজন যুবকের বয়স কিভাবে হতাশায় বেড়ে যায় আর স্বপ্ন গুলো ভেঙ্গে গেলে তার ধ্বংসাবশেষ মানুষকে কি করে ফেলে।
রাসেল মাঝে মাঝে ফোন করতো ফ্লোরার ছবির জন্য, আমি বললাম পালতে পারবি না। ও তাও নাছোড়বান্দা! পরে যতটুকু খবর নিয়ে জানলাম আমার মাধ্যমে পরিচিত হয়ে আমাকে পাশ কাটিয়ে ওরা চুটিয়ে প্রেম করছে, ফ্লোরা থাকে ফরিদপুরে আর রাসেল তখন লন্ডন! হায়রে মানুষ এদিকে ঐশী সমানে মাথা খাচ্ছে ইংল্যান্ডে যাবার স্পন্সরের জন্য!
যাই হোউক একদিন শুভ্রর রেজাল্ট দিয়ে দিলো স্টুডেরায় অর্থাৎ সুইডেনের লীনশপিং রিনিউয়্যাবল এনার্জিতে মাস্টার্সের চান্স পেয়েছে। ওর সেইদিনের আনন্দ দেখে মনে হলো চাদে গেলেও মানুষ এতো খুশী হতো না। এদিকে আমি আমার কাজ আর ইন্টারভিউগুলো নিয়ে বেশ বিজি ছিলাম তখন। সমানে ইন্টারভিউ দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু ফাইনাল রেজাল্ট কেউ জানায় না।
শুভ্র ভিএফএস গেলো তার পরের দিন। জানতে পারে ওর নামের এ্যাকাউন্টে ১৬ লাখ টাকা দেখাতে হবে, সাথে আমি আমার বিষয় গুলো নিয়ে একটু আলাপ করলাম। তাহলেই ভিসা হবে।
তাজ ক্যাসেলিনায় দেখি একসাথে অনেক দেশের কাগজ পত্র জমা নেয়, একসাথে একটা গেটওয়ে নিঃসন্দেহে বেশ ভালো সিস্টেম আর আমার অফিস ফাকি দিয়ে একসাথে এক ঢিলে দুই পাখিটাও মারা হয়ে গেলো!
তবে ১৬ লাখ টাকার স্পন্সরের কথা শুনে ওর মাথায় হাত পড়লেও একটা ইনফো বেশ ভালো ছিলো সেটা হলো টাকা যেকোনোদিন থেকে রাখলেই হয়ে যায় আর যেদিন খবর নিবে সেদিন ঐ ব্যালেন্স থাকলেই হয়ে যায়! তবে জার্মানীর থেকে এই সিস্টেম নিঃসন্দেহে সহজ কারন আমি জার্মানীর অভিজ্ঞতা থেকে জানি ৮ লাখ টাকার একটা ব্লক এ্যাকাউন্ট দেখাতে হয় যেটা জার্মানীতে নিয়ে যেতে হয়। ততদিনে অফেন্ডবার্গে মিডিয়া কমিউনিকেশন ইন্জ্ঞিনিয়ারিং থেকে কাগজ এসে পড়ে কিন্তু কার্লসরুহি থেকে কিছু আসছে না।
এদিকে জানতে পারলাম আমাদের জিপি থেকে একজন স্পেসমাস্টারসে স্কলারশীপ পেয়েছে!
স্পেসমাস্টারসে স্কলারশীপ পাওয়া অনেকটা স্বপ্নের ব্যাপার। এটাশলো স্পেস সায়েন্স এন্ড টেকনোলজীতে মাস্টারসের জন্য এই স্কলারশীপ। প্রথম সেমিস্টার জার্মানী দ্বিতীয় সেমিস্টার সুডেনের লুলিয়া, তৃতীয় আর চতুর্থ সেমিস্টার ইচ্ছা মতো ইতালী, ফ্রান্স, চেকোস্লোভাকিয়া অথবা ইংল্যান্ডের এ্যারোনটিক্যাল স্পেস শীপ ডিজাইনের ইউনি ক্রানফিল্ডে। এখানে স্কলারশীপের পরিমান জনপ্রতি ১১০০০ ইউরো!
শুভ্রর কথায় ফিরে আসি, শুভ্র মাথা তখন খারাপ হবার মতো জোগাড়, কারন এতো টাকা ও জীবনে চোখে দেখে নাই। শুভ্র আমার দেখা মতে খুবই ভালো ছেলে, পাচ ওয়াক্ত নামাজ, টেকনিক্যাল কাজে দক্ষ একজন ইন্জ্ঞিনিয়ার।
মাই ডীয়ার টাইপের ছেলেটা এভাবে হেরে যাবে এটা ভাবতেও আমার তখন খুব খারাপ লাগছিলো। ও ওর মামাকে যিনি জার্মানীর ইমিগ্রান্ট ফোন দিলেন, কিন্তু তার অপারেশনের কারনে তিনি এখন আউট অব রিচ! মাথাটা আরেকটু খারাপ হলো যখন দেখলাম ও সবার কাছে হাত পেতে টাকা চাইছে!
মাঝে মাঝে আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতাম কেনো সবকিছু এমন হয় কিন্তু ইদানিং খুব আশ্চর্য্য ব্যাপার হয় আমার সাথে। যেদিনই আমি আকাশের দিকে একটা নতুন প্রশ্ন নিয়ে তাকাই সেদিনই অঝোর ধারায় বৃস্টি নামে আর তার উত্তর বৃস্টির পরেই পেয়ে যাই!
শুভ্ররটাও পেয়ে গেলাম। আমাদের আরেক বন্ধু ইরিকসনে চাকরি করতো সে প্রথমে দিলো ৪ লাখ। ওর এক কাজিন দিলো ৫ লাখ সেদিনই।
আমাকে শুভ্র ফোন দিয়ে বললো আর মাত্র ৭ লাখ। এধার ওধার করে মামাদের কাছ থেকে আরও ৫ লাখ। এখন বাকি ৩লাখ কোথায় পায় বুঝতে পারলো না। তার দুদিন পরে পাশের বাসার ভাড়াটিয়া দেড় লাখ দিলো আর গয়না গাটি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বাকি দেড় লাখ। শেষের ৩ লাখ জোগাড় করতে দেখেছি শুভ্র ক্ষণে ক্ষণে কেদে দিচ্ছিলো! যাই হোউক কাগজ পত্র জমা দিয়ে ও হাতছাড়া হয়ে যায়।
তার এক মাস পরেই ওর কাজিন ওকে ফোন দিয়ে বলে তার মা নাকি হজ্বে যাবে সেজন্য টাকার দরকার। ও তখন সোজা লোন করে দেড় লাখ। ওর কাজিন তার কিছুদিন পর আর কিছু না বললেও শুভ্রর বাবার আবার অসুবিধা শুরু হয়ে যায়। মাথা খারাপ হয়ে ও তখন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়, হাসপাতালে রাখে কিছু দিন। তখন সিএসএলে বসের কাছে কিছু টাকা চেয়েও না পেয়ে কি করবে বুঝতে পারে না।
যাই হোউক তখনকার মতো পরিস্হিতি সামাল দিয়ে আর ৩ সপ্তাহ না পেরুতেই ওর বন্ধু ফোন দিয়ে বলে ওর ভাই নাকি এক্সিডেন্ট করে মাথা ফাটিয়েছে। ওর টাকা যে মুহুর্তেই হোক দরকার!
এবার আর রক্ষা নাই। যশোরে এক্সিডেন্ট করে ওখানকার একটা হাসপাতালের আইসিইউ তে রাখা হয়। অবস্হা বেগতিক দেখলে সোজা স্কয়ার। তাই ৪ লাখ টাকা যেকোনো সময়।
ও তখন বন্ধুর দুঃখে ব্যাথিত হয়ে আশা ছেড়েই দেয়। আমি বললাম যতক্ষণ না টাকা না চাইছে ওয়েট করো আর এ্যাম্বাসীর ভিসা সেকশনে মেইল করতে। ও সেদিন মেইল করে বেসে, তার এক ঘন্টা পর খবর আসে ওর এ্যাপ্লিকেশন গ্রান্ট করেছে। আমার তখন মনে হলো আল্লাহ মনে হয় কিছু একটা চাইছেন বলেই এই অসম্ভব কাজটা হলো। যাই হোউক তার দুদিন পরই ওর বন্ধুর ভাইটার অবস্হার উন্নতি ঘটে, কিন্তু ভিসা পাবার পর আমি শুভ্রকে বললাম," রিসিশনে সুইডেনে কোনো কাজ নেই।
"
ও তখন বললো," রিসিশন বাদ দাও, মার চোখের অপারেশনের জন্য টাকা দরকার, বাবার ফের অপারেশন করাতে হবে। লোনের টাকা ভাইঙ্গা ফেলাইছি। তার জন্য টাকা দরকার! এতো কিছু করার পর টিকিট কাটার টাকা নাই, যাওয়া হবে কিনা সেটা আমি বুঝতে পারছি না!"
আসলেই হতাশার তাই না? কিন্তু ঐযে বললাম আল্লাহ যখন চায়, তখন কারো ঠেকানোর উপায় থাকে না। ওর মার অপারেশনে মাত্র ৭ হাজার টাকা খরচ হয় আর ওর বাবার অপারেশন হবে ৭ তারিখ, ৯ তারিখ সকালে ওর স্টকহোমে ফ্লাইট। কাকতালীয়ভাবে সেদিন বিকালে আমারটাও।
আর ওর টাকা আসলো কিভাবে?
ওর মামা জার্মানী থেকে ফিরে এসে গ্রামের কিছু জায়গা বিক্রি করার বায়না নেয়, তারপর সবাই মিলে কিছু কিছু করে সব হয়ে যায়। কিন্তু টেনশন একটা থেকেই গেলো। গত পরশু আমাকে ফোন দিয়ে শুভ্র আরেকটা গুড নিউজ শোনায়, ওর ভাড়াটিয়ার দুরসম্পর্কের একভাই নাকি ওখানে নাকি নিজের কিছু একটা মনে হয় ফ্যাক্টরী টাইপ। বললো নেটওয়ার্ক বা আইটি রিলেটেড কাজ জানা লোকের নাকি ওর খুব দরকার! শুভ্র তখনই ওনার সাথে কথা বলে পাকাপোক্ত করে নিচ্ছে, এদিকে জার্মানী ফেরত মামা বললো নভেম্বরের দিকে আবার উনি চলে যাচ্ছেন, তখন কাজ যোগাড় করা কোনো ব্যাপার না অন্তত চেনাজানা লোক দিয়ে!
আমার দেখা মতে শুভ্রই একমাত্র ছেলে যার সুইডেনে যাবার আগেই ওখানে দু দুটো জবের অফার নিয়ে যাচ্ছে!
কি দারুন একটা ঘটনা, তাই না?
তবে এটা ঠিক, আমি দেশে থাকি অথবা বাইরে, বন্ধুশূন্য আমি হবোই। হতে পারে যেখানেই যাই আবার এক দঙ্গল জুটবে কিন্তু পুরোনো বন্ধুদের কথা ভোলা কখনোই যায় না।
ভালো থাকো বন্ধুরা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।