আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেস্টুরেন্টের দিনগুলি-১

ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....

কালকে এক বন্ধু ভাল চাকরি পাবার সুবাদে বার্মিংহামের একটা বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়ালো। সেখানে গিয়ে খুব ভালো লাগলো। কারণ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার আমার ইউনিভার্সিটি থেকেই মাস্টার্স পাশ করেছেন। তিনি জানালেন, এটা তাদের পারিবারিক ব্যবসা। এ কারণেই তিনি অন্য ভালো চাকরির অফার পেয়েও সেখানে যাচ্ছেন না।

আরো ভালো লাগলো যে, তার এক ভাই এখানকার ব্যাংকে চাকরি করেন অন্য ভাই বৃটিশ পুলিশে চাকরি করেন। তবে সবাই উইকএন্ডে রেস্টুরেন্টেই কাজ করেন। বুফে খাবার পাশাপাশি তাদের সবার সাথেই বেশ ভালোভাবে পরিচিত হলাম। খুব অমায়িক তাদের ব্যবহার। কিন্তু তাদের সাথে কথা বলার সময় বারবার আমার মনে পড়ছিলো পুরনো সেইসব দিনগুলোর স্মৃতি।

পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য যে সময় আমি ছিলাম একজন রেস্টুরেন্টের কর্মচারী। বৃটেনের ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট বলতে মূলত বাংলাদেশী মানুষদের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টই বুঝায়। এগুলোর প্রায় সবগুলোর মালিকই আবার সিলেট অঞ্চলের মানুষেরা। বৃটেনে আসার আগেই আমি ধারণা করেছিলাম যে জীবিকার তাগিদে এখানকার কোনো রেস্টুরেন্টে আমার কাজ করতে হতে পারে। এখানে আসার পরে ইউনিভার্সিটির বিপুল অঙ্কের টিউশন ফি শোধ করার উপায় নিয়ে যখন চিন্তায় হাবুডুবু খাচ্ছি তখনই এখানকার এক বড়ভাইয়ের সাথে আলাপ হলো।

তিনি সিলেটি। এখানকার এক স্কুলে চাকরি করেন। তিনি জানালেন, বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টের জব করা খুবই কঠিন। কারণ এদের ব্যবহার ভালো না। নানা ভাবে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করবে।

বিশেষ করে সিলেটের বাইরের মানুষ হলেতো কথাই নেই। তিনি জানালেন, তিনি নিজেই এক রেস্টুরেন্টে ঢুকেছিলেন। কিন্তু তাদের খারাপ ব্যবহারের কারণে তিনি ২য় দিনে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। উনি নিজেই নাকি কোন একটা সিলেটি শব্দ বুঝেন নাই। এ কারণে রেস্টুরেন্টের লোকজন তার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছিলো।

ইউনিভার্সিটির ক্যারিয়ার সার্ভিসের কল্যানে একটা ব্রিটিশ কোম্পানিতে পার্ট টাইম কাজ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে সপ্তাহে কাজ পাচ্ছিলাম ১০ ঘণ্টার মতো। অন্যদিকে ইউনিভার্সিটিতে বিপুল অঙ্কের টাকা শোধ করতে হবে। শুনলাম টাকা না দিলে কয়দিন পরে ইউনিভার্সিটিতে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিবে। তখন ক্লাস, পরীক্ষা ইত্যাদিও বন্ধ হয়ে যাবে।

ইউনিভার্সিটির টিউশন ফি দেয়ার জন্য আমার অন্য কোনো উপায় ছিল না। এ কারণে আমি বিভিন্ন মানুষকে বলে রাখলাম, যে কোনো চাকরি দরকার। এমনকি রেস্টুরেন্টেও কাজ করবো। কিছুদিনের মধ্যেই পরিচিত একজনের মাধ্যমে খবর পেলাম যে এক রেস্টুরেন্টে মানুষ নিবে। সেখানে শুধু শুক্র ও শনিবার কাজ করতে হবে।

বেতন দুই দিনে ৫০ পাউন্ড। আমার রাজি না হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। ফোন নাম্বার নিয়ে মালিকের সাথে কথা বললাম। ---------------------------------- সময় মতো মালিক গাড়ি নিয়ে এসে আমাকে বাসা থেকে তুলে নেবে বলে জানালো। তবে আসার আগে একটা ফোন দিবে এমনই শুনলাম।

সেমতে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পড়ে বসে আছি। বাইরে একটা গাড়ির হর্নের শব্দ হয়েছিলো। কিন্তু মালিকের ফোন করে আসার কথা ছিলো তাই দরজা খুলে দেখিনি। এমন সময় কলিংবেলের শব্দে গিয়ে দরজা খুললাম। আনুমানিক ৪০ বছর বয়স্ক একজন লোক দরজা ধাক্কাচ্ছে।

আমি দেখেই সন্দেহ করলাম রেস্টুরেন্টের মালিক হবে। তাই তাড়াতাড়ি সালাম দিয়ে দিলাম। ছাই রঙের একটা মাইক্রোবাস দাড়িয়ে আছে। তিনি সেটাতে আমাকে উঠিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে রওনা দিলেন। ভদ্রলোক বেশ গম্ভীর।

গাড়িতে উঠানোর পরে আমার নাম আর কোথায় পড়াশুনা করি তা জিজ্ঞাসা করলেন। এরপর গাড়িটা দুইটা গলি ঘুরে আর এক বাসার সামনে গিয়ে হর্ন দিলো। এখানে দিনেদুপুরে এভাবে গাড়ির হর্ন বাজানো হয়, ব্যাপারটা আমার জানা ছিলো না। যাই হোক বাড়ির ভেতর থেকে একটা তরুণ ছেলে বের হয়ে আসলো। গাড়ির দরজা খুলেই সালাম দিলো।

কিন্তু সালামটা সে কাকে দিলো তা ঠিক বোঝা গেল না। কারণ মালিক সালামের জবাব দেবার কোনো প্রয়োজন মনে করলো না। আমি একবার ভাবলাম, আমাকে সালাম দিলো নাকি। কিন্তু পরে মনে হলো তা হয়তো দেয়নি। কিছুক্ষণ পর আরেকটা বাসার সামনে গিয়ে গাড়ি দাড়ালো।

সেখান থেকে আরেকজন লোক গাড়িতে উঠলো। সেও একটা সালাম দিলো। কিন্তু মালিক কোনো জবাব দিলো না। মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে এক দোকানে গিয়ে কিছুক্ষণ কথা বললো। কয়েকটা জিনিস গাড়িতে উঠিয়ে নিলো।

মালিকের অনুপস্থিতির সুযোগে পিছন থেকে কয়েকজন কর্মচারী আমার সাথে পরিচিত হলো। আমাকে ‘নয়া ভাই’ বলে সম্বোধন করে ২৪-২৫ বছর বয়স্ক এক ছেলে আমার সাথে পরিচিত হলো। জানালো, তার নাম মনোয়ার। রেস্টুরেন্টের পেছনে নিজস্ব গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য জায়গা আছে। সেখানে গাড়ি থামালো হলো।

মালিক আমাদের নামিয়ে দিয়ে উল্টো দিক দিয়ে গিয়ে নিজেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে আমাদের ঢোকার ব্যবস্থা করে দিলো। ----------------------------- রেস্টুরেন্টের ক্যাশ কাউন্টারে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো। তার পেছনে থরে থরে সাজানো আছে নানা ধরনের কয়েক’শ মদের বোতল। নানা ধরনের বোতল সাজানো এ স্থানটিকে বলা হয় বার। এ বারেই আমার দাড়ানোর জায়গা হলো।

এখানে সবাই সিলেটি উচ্চারণে কথা বলে। আমার কথা শুনে তারা বেশ অবাক হলো কারণ এ রেস্টুরেন্টে আমিই সিলেটের বাইরের প্রথম কর্মচারী। আমি সিলেটি উচ্চারণে ভালভাবে কথা বলতে পারি না। কিছুক্ষণ পর পর বিভিন্ন লোকজন এসে আমার নাম জিজ্ঞাসা করছিলো। নাম বলার পরে আমিও তাদের কয়েকজনের নাম জিজ্ঞাসা করছিলাম।

তার মধ্যে কয়েকজন তাদের নাম জানালেও ৩৪-৩৫ বয়স্ক শুকনো মতো এক লোক নাম বললো না। হাবভাবে বোঝা গেল তিনি এ রেস্টুরেন্টের বড় কোনো পদে আছেন। পরে জেনেছিলাম তিনি এ রেস্টুরেন্টের হেড ওয়েটার। কিছুক্ষণ পরে আরো কয়েকজন এসে আমার সাথে কিছুক্ষণ আলাপ করলো। আমি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের উপর মাস্টার্স করেছি শুনে তারা হাসাহাসি করলো (এমবিয়ে কথাটাকে তাদের বুঝার সুবিধার্থে মাস্টার্স বলতে হলো)।

একজন জানালো আমাদের মনোয়ার অনেক আগেই লিকুয়ারের (মদের) উপরে মাস্টার্স করেছে। পাশে দাড়িয়ে থাকা আরেকজনকে দেখিয়ে দিয়ে জানানো হলো, ও কারির (অর্থাৎ-মাংস/ঝোল) উপর মাস্টার্স করেছে। বুঝলাম তারা মজা করছে। কিছুক্ষণ পরে শায়খ নামে আরেকজন আসলো। আচার আচরণে অন্যদের চেয়ে ভদ্র।

মালিককে সে চাচা বলে ডাকছিলো। পরে জানলাম তার বাবাও রেস্টুরেন্টের একজন মালিক। পরে জেনেছিলাম এ রেস্টুরেন্টের মোট চারজন মালিক। যার মধ্যে শুধু একজনই সব সময় রেস্টুরেন্টে থাকে। অন্যদের আমি কখনো দেখিনি।

--------------------------- আমাকে যে বারটিতে দাড় করিয়ে দেয়া হলো তাতে কতো রকমের পানীয় যে আছে তা বলার মতো না। বাম পাশের ফ্রিজে সবচেয়ে বেশী আছে ইন্ডিয়ান কোবরা নামের বিয়ার। তার পাশাপাশি সাজানো আছে, কোক। শুধু পানিই আছে বেশ কয়েক ধরনের। যেমন সাধারণ পানি ছাড়া আছে স্টিল ওয়াটার, সোডা ওয়াটার, স্প্রিং ওয়াটার ও স্পার্কলিং ওয়াটার।

জুসের মধ্যে অরেঞ্জ জুস সবচেয়ে বেশী দেখলাম। এছাড়াও আছে পাইনঅ্যাপেল, ম্যাংগো, রাসবেরি, টম্যাটো ইত্যাদি জুস। তার পাশের ফ্রিজে আছে বিভিন্ন ধরনের ওয়াইন। যেমন ড্রাই হোয়াইট ওয়াইন, মিডিয়াম ড্রাই ওয়াইন ইত্যাদি। এর পাশাপাশি কয়েকটা ব্র্যান্ডের শ্যাম্পেইন এবং রোজ ওয়াইন রাখা আছে।

রেড ওয়াইন ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হুইস্কি ফ্রিজের বাইরে রাখে। শায়খ ভাই জানালো, সে আগে এই বারে ডিউটি করতো। এখন থেকে আমি তার জায়গায় ডিউটি করবো। ব্রিটেনেই তার জন্ম এবং কথাবার্তা খুব স্মার্ট। বিভিন্ন ধরনের ড্রিংক্স কোনটা কোথায় থাকে এগুলো সে আমাকে চেনানোর চেষ্টা করছিলো।

জানালো স্প্রিঙ ওয়াটার, সোডা ওয়াটার, লেমনেড ইত্যাদি দেখতে এক রকম মনে হলেও প্রতিটার স্বাদই আলাদা। তাই একটার বদলে কোনো ক্রমেই অন্যটা দেয়া যাবে না। এ সুযোগে বোতল খুলে আমাকে অনেকগুলো হালাল পানীয় টেস্ট করালো। এ রেস্টুরেন্টগুলোর কাস্টমার আসা শুরু হয় বিকাল ৫ টার দিক থেকে। প্রথম অর্ডার আসলো কোবরা ও পানি।

তারা কিছুক্ষণ আগেই কোবরা জিনিসটা আমাকে দেখিয়ে দিয়েছিলো। জানতে পেরেছিলাম, কোবরা এক ধরনের বিয়ার। কিন্তু এবার অর্ডার পাওয়ার পরই আমি সেটা খুজে পাচ্ছিলাম না। কারণ হঠাৎ করে এ ধরনের কয়েকশ অপরিচিত জিনিসের নাম মনে রাখা এতো সহজ ব্যাপার নয়। পাশে মদের সাথে দেয়ার জন্য ছোট বরফের টুকরো রাখা ছিলো।

কোবরার সাথে একটা গ্লাসে কিছু বরফ দিয়ে দিলাম। কিন্তু সেটা ছিলো আমার বিরাট ভুল। কোবরা নামের বিয়ারের সাথে কখনো বরফ দিতে হয় না । আমার এ বিষয়টা জানার কোনো কারণ নেই। ওয়েটাররা এ বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবেই আমাকে বলতে পারতো।

কিন্তু তারা এমন ভাব করলো যেন আমি কি বিরাট এক ভুল করেছি। ওয়েটারদের ঝারি খেয়ে খেয়ে সবকিছু শিখতে লাগলাম। ব্রিটিশদের পরিচালিত অন্য একটা কোম্পানিতেও আামি কাজ করি। সেখানে ব্রিটিশরা নতুনদের অনেক সময় নিয়ে ধৈর্য্য ধরে শিখায়। কাজে মারাত্মক কোনো ভুল না করলে সধারণত মাথা গরম করে না।

সেই তুলনায় এখানকার লোকজনের ব্যবহার আকাশ পাতাল পার্থক্য। কিছুক্ষণ পরে মালিক এসে আমাকে গ্লাস ধোয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দিল। গ্লাসগুলো সাবান মেশানো গরম পানিতে ডুবিয়েই আবার তুলে নিতে হয়। তারপর একটা শুকনো কাপড় দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুছতে হয়। প্রথম দিন দেখে এই কাজেও আমি কোনো দক্ষতা দেখাতে পারলাম না।

তার মধ্যে নতুন সমস্যা দেখা দিলো, গরম পানি নিয়ে। যেই পানিতে গ্লাসগুলো ডুবিয়ে আবার উঠাতে হয় সেই পানির তাপমাত্রা অনেক। হাত পুড়ে যাবার দশা হয়। তার মধ্যে আবার সেখানে খুব কড়া ওয়াশিং লিকুইড দেয়া থাকে। এই পানিতে হাতের বারোটা বেজে যায়।

তবু তাদের কথামতো কাজ করতে থাকলাম। রাত ১১টার দিকে রেস্টুরেন্টের ভিড় কমে গেল। হেড ওয়েটার বলে গেল, তোমার জন্য ভাত রেডি হয়েছে, খেয়ে আস। রেস্টুরেন্টের কিচেনে স্টাফদের জন্য পুরনো কিছু প্লেট রাখা আছে। অন্য স্টাফদের দেখাদেখি সেগুলোতে ভাত বেড়ে নিলাম।

স্টাফদের জন্য ল্যাম্বের আলাদা কারি রান্না হয়েছে। তার সঙ্গে কিছু সালাদ আর গরম ভাত। খাবারটা খুবই সুস্বাদু হয়েছিলো। খেতে খেতে আমার চোখে পানি চলে আসলো। কোনো আবেগঘন কারণে নয়, খুব সুস্বাদু খাবার খেলে আমার চোখে এমনিতেই পানি চলে আসে।

------------------------------ খাওয়া শেখ করে আবার কাজে ফিরে গেলাম। আরো কয়েকজন কাস্টমার সার্ভ করার পরে শায়খ ভাই বলে গেল ক্লোজিং (বন্ধ করার প্রক্রিয়া) শুরু করতে। সুজা ভাই নামে আরেকজন ওয়েটারের সাথে পরিচিত হলাম। সুজা ভাই জানালো, সে আমেরিকায় সাত বছর ছিল। বৈবাহিক সূত্রে সে ব্রিটিশ নাগরিক।

আপাতত এ রেস্টুরেন্টে কাজ করছে। ভবিষ্যতে নিজের একটা ব্যবসা খোলার ইচ্ছা আছে। সে জানালো যে সে ব্রিটেনে ও লেভেল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। কিন্তু এ রেস্টুরেন্টের হেড ওয়েটার ছোটবেলা থেকেই ব্রিটেনে থাকলেও জীবনেও স্কুলে যায়নি। এ কারণে তার ব্যবহার এতো খারাপ।

হেড ওয়েটারের কথায় কোনো পাত্তা না দিলেই চলে বলে জানালো সুজা ভাই। সুজা ভাইয়ের কাছ থেকে বার ক্লোজিংয়ের পদ্ধতি শিখছিলাম। গ্লাস রাখার শেলফটা খালি করে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে নিতে হবে। এরপর প্রতিটা গ্লাস নতুন করে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে তারপর সেখানে রাখতে হবে। প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য এই বারে কোবরা গ্লাস, দুই ধরনের ওয়াইন গ্লাস, সাদা পানির গ্লাস, শ্যাম্পেইন গ্লাস সহ প্রায় কয়েকশ গ্লাস আছে।

প্রথম দিন দেখে ওয়াইন গ্লাসগুলো আমাকে সে ধরতে দিলো না। কারণ ওয়াইন গ্লাসগুলো অনেক হালকা। আমি ধরলে সেগুলো ভেঙ্গে যেতে পারে বলে জানালো সুজা ভাই। কয়েকশ গ্লাস সাজানোর পরে এদিনের কাস্টমারদের শেষ করা প্রায় একশ খালি বোতল ফেলে দিয়ে আসলাম। এরপর রাত দুইটার দিকে গাড়িতে চড়ে বসলাম।

কিছুক্ষণ পরে গাড়ি আমার বাসার সামনে এসে নামিয়ে দিয়ে গেল। বাসায় ফিরে আমার রুমমেট সুমনকে দেখে একটু হিংসাই হলো। কারণ বহু পরিশ্রমের পর আমি বাসায় ফিরে দেখি রুমমেট পায়ের উপর পা তুলে কোকে চুমুক দিতে দিতে ইন্টারনেট থেকে মিউজিক ডাউনলোড করছে। তার পারিবারিক আর্থিক সামর্থ আমার চেয়ে ভাল। তাই পড়ার খরচ চালানোর জন্য টাকা পয়সা উপার্জনের কোনো চিন্তা ছিলো না।

আমার রেস্টুরেন্টের কাজ কেমন হলো, কিভাবে করলাম, আরো করতে পারবো কিনা এসব বহু প্রশ্নের জবাব দিতে হলো তাকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.