মক্কার অবিশ্বাসী(আবু জেহেল, আবু লাহাব, উতবা, শাইবা ইত্যাদি)দেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হতো, এই আকাশ-পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা কে ? মানব-দানব কে সৃষ্টি করেছেন ? তাহলে তারা আল্লাহ্ তায়ালার কথাই বলত। তারপরও তারা কাফের তথা অবিশ্বাসী ছিল কারণ তারা আল্লাহ্ তায়ালার ওয়াহদানিয়াত এবং সার্বভৌমত্ব মানতো না। তারা জানতো সার্বভৌমত্ব শুধুমাত্র আল্লাহ্র এটা মেনে নিলে মানুষের উপর তাদের জুলুম, শোষন, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্দ হয়ে যাবে। ক্ষমতার অন্যায় ব্যবহার এবং অবৈধ সম্পদের প্রাচুর্য তাদের আর অবশিষ্ঠ থাকবে না। সেজন্য তারা মানুষদেরকে বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত মহানবী মোহাম্মাদ(সঃ) এর দেয়া ধর্মীয় শিক্ষা থেকে দূরে রাখতো।
মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে শয়তান। সে চায় যেকোনভাবে, যেকোনমূল্যে মানুষের অধঃপতন ঘটাতে। মনুষ্যত্বের স্তর থেকে পশুত্বের স্তরে নামিয়ে দিতে। মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে কিন্তু সে কখনো ক্লান্ত হয়না। দুনিয়ায় মানুষের জীবন সীমিত।
মাত্র কয়েক বছরের। কিন্তু শয়তানের জীবন কিয়ামত পর্যন্ত। একজন পরিণত বয়স্ক মানুষ জীবনের নানা ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মাধ্যমে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে। জ্ঞ্যান অর্জন করে। সেগুলোর সাহায্যে অনেক সময় সে শয়তানের অনেক অপকৌশল বুঝে নিজেকে বাঁচাতে পারে।
একজন মানুষের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞ্যান অর্জনের যে সময় লাগে শয়তান তার চেয়ে অনেক দ্রুত নিজের পূর্ব-অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞ্যানের আলোকে নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করে মানুষকে সহজেই পথভ্রস্ট করে ফেলতে পারে।
মক্কার সেই সব আবু জেহেল, আবু লাহাব, উতবা, শাইবারা আজ নেই। কিন্তু শয়তানের গবেষণাগারে আবিস্কৃত ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ইত্যাদি গ্রহণ করে এসবের অনুসারীরা সেই শুন্যস্থান পূরণ করে রেখেছে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা জনসম্মুখে "সব ধর্ম সমান", "ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার" ইত্যাদি মুখরোচক শ্লোগান দিয়ে সব ধর্মকে বিনষ্ট করে, সমাজ থেকে সব ধর্মের প্রভাব মুক্ত করে নিজেদের অন্যায় ক্ষমতা এবং অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়তে চায়। এদের পেছন থেকে উসকানি দিচ্ছে ধর্মবিদ্ধেষী কমিউনিস্টরা।
মতিয়া চৌধুরী বললেন "সংবিধান থেকে ধর্মের কালো ছায়াও তুলে ফেলবো। " ধর্মের কালো ছায়া বলতে তিনি কি বুঝাতে চান ? নীতি-নৈতিকতা, শান্তি-সম্পৃতি, মানবতা এবং ন্যায়-অন্যায়ের শিক্ষা ধর্ম ছাড়া আর কোথায় আছে ?
সৈয়দ আশরাফ সাহেব বললেন, "আমি হিন্দুও নই, হিন্দু মুসলমানও নই"। আমি বলবো তিনি মানুষও নন। তিনি মানুষ নন তাই বিদ্যুৎ বন্দ করে রাতের আঁধারে ইবাদাতরত লোকজনদের উপর দেড় লক্ষাধিক গোলাবারুদ ব্যবহার করে হাজার হাজার মানুষ মাড়ার আদেশ উনি করেছিলেন। এদের মত আরো অনেক নামধারী মন্ত্রী-এমপি আছেন যাদের সংসদে মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করার কথা ছিল।
কিন্তু উনারাই নিজেদের ক্ষমতা এবং সম্পদের লোভে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুধিতা করছে।
আজ এক সাইটে দেখলাম "বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট" সংসদে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ৬০টি আসনের দাবী করেছে যা সংসদের মোট আসনের শতকরা প্রায় সতেরো ভাগ। বাংলাদেশের হিন্দুদের সংখ্যা সর্বোচ্চ শতকরা পাঁচ ভাগ হবে। পাঁচ ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্বের জন্য সতেরো ভাগ সংসদীয় আসন ন্যায্য নাকি অন্যায্য সেই দিকে আমি যাবো না। শুধু বলবো মুসলিম নামধারী আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির অনেক নামধারী মুসলিম সাংসদ সংসদে থাকা পরও যেভাবে মুসলমানদের ইমান-আকীদা, আদর্শ-ঐতিহ্যের উপর আঘাত আসছে, সুরঞ্জিত সেনের মত লোকদের জন্য সংরক্ষিত আসন সতেরোভাগ কেন সাতানব্বইভাগ করা হলেও মানুষের জান,মাল,ইজ্জতের নিরাপত্তা ঘুষের টাকায়, ক্ষমতার দাপটে বিক্রি হয়ে যাবে।
মহাত্বা গান্ধী বলেছিলেন, "আমি যদি ভারতের ক্ষমতা পাই, হযরত উমরের শাসন কায়েম করবো"। খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমরের শাসনে এমন কী ছিল যা হিন্দুদের প্রসিদ্ধ এই নেতাকে প্রভাবিত করেছিল? হ্যা ভাই, হযরত উমরের শাসন ছিল সেই শাসন যেখানে একজন নজরকাড়া সুন্দরী যুবতী মেয়ে বাগদাদ থেকে মদীনা পর্যন্ত একাকী পায়ে হেটে সফর করে গেলে এই বিশাল এলাকায় কোন উছৃঙ্খল,বখাটে ছেলের সাহস হত না সেই সুন্দরী যুবতীর দিকে কুদৃষ্টি দেওয়ার সাহস পেতো না। যে শাসন ব্যবস্থায় বাঘ এবং ছাগল একই ঘাটে পানি খেত কিন্তু একজন আরেকজনের উপর হামলা করার সাহস পেত না। যে শাসন ব্যবস্থায় শাসক রাতভর ঘুরে ঘুরে জনসাধারণের সমস্যার খোজ-খবর নিতেন। এবং সকালে নিজের পিঠে তাদের বোঝা বহন করতেন।
জনগণের জান,মাল,ইজ্জতের সুরক্ষা এবং জীবন যাত্রার উন্নয়নের জন্য আমাদেরকে সেরকমই একজন শাসকের সন্ধান করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।