অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি
জনৈক সাদত তার পূর্বসূরীদের ঐতিহ্য মেনে সম্প্রতি একটি পোস্ট দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায় নামের বইটি থেকে কপিপেস্ট মেরে কিছু নিজস্ব বক্তব্য কৌশলে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এর মন্তব্য হিসেবে যা দিয়েছি, তা ব্লগারদের অনুরোধে এই পোস্টে ফের তুলে ধরা হলো।
আপনি পুরো ইতিহাসটা তুলে ধরলে অবশ্য আপনার এই ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টাটা মাঠেই মারা যাবে। যাহোক, আপনি যা তুলে ধরেননি, আমি সেটা তুলে ধরছি।
শুধু ৫৫জন বুদ্ধিজীবি নন, হুবুহু একই বিবৃতি এসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ জন অধ্যাপকের বরাতেও।
মূলত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য সাজ্জাদ হোসেনের তৎপরতায় এই ঘটনাটা ঘটেছিলো, যিনি সেসময় তাবেদারীতে অনেক রাজনৈতিক নেতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের এই অন্যতম সদস্য (বাকিরা হামিদুল হক চৌধুরী, মাহমুদ আলী, বিচারপতি নুরুল ইসলাম ও ড. কাজী দীন মোহাম্মদ) স্বাধীনতার পর থেকেই দেশ ছাড়া, এখন সৌদি আরবে।
আসা যাক ৫৫ জন বুদ্ধিজীবির বিবৃতিতে (যদিও নাম আছে ৫৭ জনের, কারণ শিল্পী আবদুল আলীম দুইবার স্বাক্ষর করেছেন, আবার কবির চৌধুরী সাক্ষর না করলেও তার নাম দেওয়া হয়েছে)। এদের মধ্যে অধ্যাপক মুনির চৌধুরী ডিসেম্বরে আল-বদর ঘাতকদের (জামাতে ইসলামীর কিলার গ্রুপ) হাতে নিহত হয়েছিলেন।
'৭২ সালে গঠিত নীলিমা ইব্রাহিম কমিশনে অনেকেই সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রাণভয়ে তারা সাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এবং তাদের বেশীরভাগই যে দালাল না, সেটা তারা স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই প্রমাণ রেখেছেন।
যাহোক ১৯৮৭ সালে এই বিষয়ে সাপ্তাহিক বিচিন্তা একটি সিরিজ করেছিলো। সেখানে ১ জুলাই সংখ্যায় কবি তালিম হোসেন বলেছিলেন : সম্ভবত ১৪ মে দুজন লোক আসেন আমাদের ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় এই বিবৃতি নিয়ে। দুজনই পরিচিত, একজন রেডিওতে চাকুরীরত হেমায়েতউদ্দিন, অন্যজনের নাম মনে পড়ছে না।
তারা যে বিবৃতির কপি নিয়ে এসেছিলেন তাতে সবার নাম লেখা ছিলো, কিন্তু সাক্ষর ছিলো না। দু'জনই আমার পরিচিত এবং আমাকে সম্মান করতেন। আমি ওদের বললাম, সবার সাক্ষর নিয়ে আসুন তারপর সাক্ষর দেব। তারা বলেছিল অন্য কপি নিয়ে বিভিন্ন জন সাক্ষর সংগ্রহ করছে। অবশ্য পরদিন তারা আবার এলো, সবার সাক্ষর দেখে (দু'য়েকজন বাদ ছিলো) সাক্ষর দিই।
তখন এমন অবস্থা ছিল যে সাক্ষর না দেওয়া আর মৃত্যু পরোয়ানায় সাক্ষর দেওয়া সমান কথা।
ইসলামিক একাডেমির প্রাক্তন পরিচালক ও লেখক শাহেদ আলী বলেন... 'একদিন হঠাৎ সন্ধায় কয়েকজন লোক এসে হাজির হয়। তারা রেডিও পাকিস্তানে কাজ করতো। আমার পরিচিত ছিলো। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সৈয়দ শামছুল হুদা আর অন্যরা হলেন আবু তাহের ও ফজলে খোদা।
তারা আমাকে বললো স্যার একটা বিবৃতিতে সই করতে হবে। কিসের বিবৃতি- একথা জানতে চাইলে তারা বললো, বিদেশী কাগজে মিথ্যা ছাপা হয়েছে এ দেশে বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করা হয়েছে। এ কথাটা যে মিথ্যা তা জানিয়ে একটা বিবৃতি প্রকাশ করতে হবে। আমি বললাম, নিহতদের মধ্যে কি আমার নামও আছে? তখন তারা বললো হ্যা আপনার নামও আছে। তখন আমি জানতে চাই- কই সেই বিবৃতি।
বলা হয় যে, বিবৃতিতে আমরা যে বেচে আছি সে কথাই যাবে। আমি তখন মনে করলাম এই বিবৃতিতে তো আপত্তির কোনো কারণ নাই। কিন্তু কি বিবৃতি প্রকাশিত হবে তা আমাকে দেখানো হয় নাই। পরে যখন সেটা ছাপানো হলো তখন আমি ভয়ানক আপত্তি করলাম। এরকম পলিটিকাল বিবৃতি ছাপা হওয়ার জন্য আমি খুব বিরক্ত হই এবং রেডিওতে হেমায়েত হোসেনকে প্রতিবাদ জানাই।
পরে তারা বললো- আপনার জান বাচানোর জন্য একাজ আমরা করেছি। ' আমাকে ভুল বুঝিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে। আমি ছাপানো বক্তব্যটিকে গর্হিত মনে করি না। (বিচিন্তা, ১২ জুলাই,.১৯৮৭)
সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব খান আতাউর রহমান বলেন- 'আপনাদের প্রকাশিত তালিকায় পূর্বে বলা হয়েছে রাজাকারের তালিকার সম্পূরক হিসেবে আপনারা ৫৫জন বুদ্ধিজীবি শিল্পীর নাম প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য হচ্ছে ইব্রাহিম খা, মুনীর চৌধুরী, আশরাফ সিদ্দিকী, সরদান জয়েনউদ্দিন, সরদার ফজলুল করিম- এদের সঙ্গে আমি খান আতা যে কোনো গোত্রভুক্ত হতে রাজী আছি।
তবে বিবৃতির পটভূমি যতটুকু মনে পড়ে, টেলিভিশন কেন্দ্র তখন ডিআইটিতে। একদিন সাদেক সাহেব একটি বিবৃতি নিয়ে এসে বললেন সই করে দিতে। অবস্থা এমন ছিল যে, সই না দিয়ে কোনো উপায় ছিলো না। কেনো না সই না দিলে আমার অবস্থা আলতাফ মাহমুদের মতোই হতো। এ তো বেঁচে থাকার জন্যই বলেন আর মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে' বলেন- বেচে থাকার জন্য আমরা সই করেছি।
(বিচিন্তা, ১২ জুলাই, '৮৭)
বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন পরিচালক ড. আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, ১ এপ্রিল পরিবারসহ টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়িতে যাই। ৫ এপ্রিল ঢাকায় আসি অফিসের কর্মচারীদের বেতন দিতে। সে সময় শুকুর নামে একজন কর্মচারী আমাকে আনতে গ্রামের বাড়ী গিয়েছিল। এসময় আমি ঢাকা এলে ঢাকার সঙ্গে টাঙ্গাইলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ও আমি ঢাকায় আটকা পড়ি। তখন টেলিভিশনের আমিরুজ্জামান সাহেব আমাকে টেলিফোন করতে থাকেন একটি বিবৃতি দিতে যে, আপনাদের নামে ভারত যে হত্যার সংবাদ প্রচার করেছে তা অস্বীকার করুন।
' বিবৃতিতে সাক্ষর নিতে রেডিওর মোঃ জাকারিয়া ও কবি হেমায়েত হোসাইন আমার বাসায় আসেন। এরা দুজন প্রথমদিন আমাকে না পেয়ে দ্বিতীয় দিন এলে তাদেরকে আমার উপরস্থ কর্মকর্তার অনুমতির কথা বলে পরে আসতে বলি। এ ফাকে আমি আমার বন্ধু মুনির চৌধুরী, সরদার ফজলুল করিম, সৈয়দ মুর্তজা আলী এদের সঙ্গে আলাপ করি। এরা বলে এমন একটা বিবৃতি আমাদের কাছেও এসেছে, আমরা সাক্ষর দিয়েছি, তুমিও দিও। তৃতীয়দিন ঐ কবি হেমায়েত হোসেন ও জাকারিয়া সাহেব আসেন।
তার আগে আমি আমার কন্টোলিং অফিসার ফেরদৌস খানের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করি। তিনি তাদের কোনো সাক্ষর না দিয়ে তাকে (ফেরদৌসকে) একটি চিঠি দিতে বলেন এ মর্মে- আমি বেচে আছি। হেমায়েত হোসেন ও জাকারিয়া, ফেরদৌস খানকে লেখা চিঠির একটি কপি নিয়ে যান। আমার দস্তখত এ এইচ সিদ্দিকীর বদলে আশরাফ সিদ্দিকী লিখিয়ে নিয়ে যান। যেদিন আমার কাছ থেকে এ কাগজখানি হেমায়েত ও জাকারিয়া নেয়, সেদিন আসাফউদ্দৌলা রেজা, পূর্বানী সম্পাদক শাহাদত হোসেন, সিরাজউদ্দিন হোসেন খান এরা সবাই উপস্থিত ছিলো।
( ১৯ জুলাই, '৮৭)
এ বিষয়ে প্রায় একই ধরণের বক্তব্য প্রদান করেন সানাউল্লাহ নুরী, আশকার ইবনে শাইখ প্রমূখ। শামসুল হুদা চৌধুরী বলেন উক্ত বিবৃতিতে তিনি সই করেননি। সরদার ফজলুল করিম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। বিচিন্তার সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেন ফওজিয়া খান, ড. কাজী দীন মোহাম্মদ, ফেরদৌসী রহমান প্রমূখ।
ডা. আশরাফ সিদ্দিকী সাক্ষাতকারের এক জায়গায় বলেছেন এদের মধ্যে অনেকে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, যেমন সানাউল্লাহ নুরী, আশকার ইবনে শাইখ, শাহেদ আলী আরো অনেকে।
প্রকৃত সত্যি হচ্ছে এই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে অনেকে যেমন বাধ্য হয়ে সাক্ষর দিয়েছেন, অনেকে দিয়েছেন স্বতোপ্রণোদিত হয়ে। যেমন সরদার ফজলুল করিম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও এদেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার অবদান চল্লিশের দশক থেকে স্বীকৃত। সাহিত্য ক্ষেত্রে কবি আহসান হাবিবও একইরকম প্রগতির পক্ষেই ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালিকায় হায়াত মাহমুদের নাম থাকলেও তার রচনা ও কর্ম প্রগতির আন্দোলনকে সহায়তা করেছে। কিন্তু যেসব ব্যক্তি উদ্যোগি হয়ে সাক্ষর সংগ্রহ করেছেন এবং প্ররোচিত করেছেন পাক হানাদার বাহিনীর পক্ষ সমর্থন করতে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথকভাবে দালালদের তালিকায় চিহ্নিত করতে হবে।
মূল সূত্র : একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায়
এ ছাড়াও এ বিষয়ে কবি সুফিয়া কামালের সাক্ষাতকারেও কিছু কথা আছে।
উক্ত ব্লগার এবং তার সঙ্গে গলা মেলানোদের রাজনৈতিক পরিচয় ও উদ্দেশ্য ইতিমধ্যেই স্বাধীনতার চেতনাধারীরা ধরে ফেলেছেন। আমার আর নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে তার সবচেয়ে বড় দুই নাম্বারীটা হচ্ছে শামসুর রাহমানকে দৈনিক পাকিস্তানের সম্পাদক হিসেবে চালিয়ে দেওয়া। তার প্রকাশিত তালিকাতেই আবুল কালাম শামসুদ্দীন সই করেছেন, দৈনিক পাকিস্তানের সম্পাদক হিসেবে
মূল তালিকা :
১. ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
২. প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, সাবেক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান সরকার, লেখক, নাট্যকার
৩. এম কবীর, ইতিহাস বিভাগের প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৪. ড. মীর ফখরুজ্জামান, মনস্তত্ব বিভাগের প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৫. ড. কাজী দীন মোহাম্মদ, রিডার বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৬. নুরুল মোমেন, নাট্যকার, সিনিয়র লেকচারার, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৭. জুলফিকার আলী, ওএসডি, বাংলা একাডেমী
৮. আহসান হাবিব, কবি
৯. খান আতাউর রহমান, চিত্র পরিচালক- অভিনেতা ও সঙ্গীত পরিচালক
১০. শাহনাজ বেগম (রহমতউল্লাহ) গায়িকা
১১. আশকার ইবনে শাইখ, নাট্যকার, সিনিয়র লেকচারার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১২. ফরিদা ইয়াসমিন, গায়িকা
১৩. আব্দুল আলীম, পল্লী গায়ক
১৪. আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম, চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, লেখক, ঢাকা টেলিভিশন
১৫. এ এইচ চৌধুরী, পরিচালক-প্রযোজক, লেখক, ঢাকা টেলিভিশন
১৬. ড. মোহর আলী, রিডার ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৭. মুনীর চৌধুরী, বাংলা বিভাগের প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৮. ড. আশরাফ সিদ্দিকী, বাংলা উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা
১৯. খন্দকার ফারুখ আহমেদ, গায়ক
২০. সৈয়দ আবদুল হাদী, গায়ক
২১. নীনা হামিদ, গায়িকা
২২. এম এ হামিদ, গায়ক
২৩. লায়লা আর্জুমান্দ বানু, গায়িকা
২৪. শামসুল হুদা চৌধুরী, চীফ ইনফরমেশন অফিসার, ইপিআইডিসি (পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার)
২৫. বেদারউদ্দিন আহমেদ, শিল্পী
২৬. সাবিনা ইয়াসমিন, গায়িকা
২৭. ফেরদৌসী রহমান, গায়িকা
২৮. মোস্তফা জামান আব্বাসী, গায়ক
২৯. সরদার জয়েনউদ্দীন, ছোট গল্পকার
৩০. সৈয়দ মুর্তজা আলী, লেখক, সমালোচক
৩১.কবি তালিম হোসেন, নজরুল একাডেমী
৩২.শাহেদ আলী, ছোট গল্পকার, ইসলামিক একাডেমী
৩৩. কবি আবদুস সাত্তার, সম্পাদক, মাহে নও
৩৪. ফররুখ শীয়র, নাট্যকার, সুপার ভাইজার, রেডিও পাকিস্তান (ঢাকা কেন্দ্র)
৩৫. কবি ফররুখ আহমেদ, প্রাইড অব পারফরম্যান্স
৩৬. সম্পাদক আবদুস সালাম, পাকিস্তান অবজারভার
৩৭. সম্পাদক এস জি বদরুদ্দিন, মর্নিং নিউজ
৩৮. সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন, দৈনিক পাকিস্তান
৩৯. ফতেহ লোহানী, চিত্রপরিচালক, অভিনেতা, প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক প্রাপ্ত
৪০. হেমায়েত হোসেন, লেখক, প্রাক্তন সম্পাদক, এলান, রেডিও পাকিস্তান (ঐ)
৪১. বিএম রহমান, লেখক, ঢাকা
৪২. মবজুলুল হোসেন, নাট্যকার, রেডিও পাকিস্তান (ঐ)
৪৩. আকবরউদ্দীন, লেখক, গ্রন্থকার, ঢাকা
৪৪. আকবর হোসেন, লেখক, ঢাকা
৪৫. এএফএম আব্দুল হক, লেখক, প্রাক্তন পরিচালক, পাবলিক ইন্সট্রাকশন, সদস্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন
৪৬. অধ্যক্ষ এ কিউএম আদমউদ্দিন, শিক্ষাবিদ
৪৭. আলী মনসুর, নাট্যশিল্পী
৪৮. কাজী আফসারউদ্দীন আহমেদ, লেখক
৪৯. সানাউল্লাহ নুরী, লেখক
৫০. শামসুল হক, কবি ও লেখক
৫১. সরদার ফজলুল করিম, লেখক
৫২. বদিউজ্জামান, লেখক
৫৩. শফিক কবীর (সাক্ষর শফিকুল কবীর), লেখক
৫৪. ফওজিয়া খান, গায়িকা
৫৫. লতিফা চৌধুরী গায়িকা
সংযুক্তি : এদের মধ্যে দালাল বুদ্ধিজীবি ঘোষণা করে যাদের বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয় তাদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেয়ে সৌদি আরব চলে যান।
ড. মোহর আলী যান যুক্তরাজ্যে। দীন মোহাম্মদ, মুস্তাফিজুর রহমানদের বিরুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবিদের অনেকের তালিকা সরবরাহের অভিযোগ উঠলেও এরা স্রেফ বরখাস্ত হয়েই বেচে যান। রেডিও ও টেলিভিশনের যারা মুক্তিযুদ্ধকালে নিয়মিত অনুষ্ঠান করেছেন এমন শিল্পীদের ব্যাপারে নীলিমা ইব্রাহিমের নেতৃত্বে একটি কমিশন কিছু সুপারিশ দেয় সরকারকে। এদের মধ্যে তালিকায় থাকা (সাক্ষর করাদের) নুরুল মোমেন ও মোহর আলীকে আজীবন নিষিদ্ধ এবং ফতেহ লোহানী, শফিকুল কবীর, শাহনাজ বেগম, আবদুল হাদী, খান আতাউর রহমানকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ ও এরপর বিবেচনা সাপেক্ষে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়। ৫৫ জন বুদ্ধিজীবির ব্যাপারে নীলিমা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
সম্পূরক তথ্য : একাত্তরের নেতৃস্থানীয় দালাল বুদ্ধিজীবিরা
ছবি কৃতজ্ঞতা : মাহবুবুর রহমান জালাল
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।