বড়াইগ্রাম(নাটোর) উপজেলার সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে এই ব্লগে আলোচনা করা হবে। বেশী করে নিমগাছ লাগান, আপনার পরিবেশ ভাল থাকবে।
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ১২৯ জন চালকল মালিক চলতি ধান চাল ক্রয় অভিযানের সময় গুদামে চাল বিক্রি করতে পারছেন না। মিলারদের অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও সরকারী দলের নেতাদের আধিপত্যের কারণে তারা গুদামে চাল বিক্রি করতে পারছেন না। অন্যদিকে, স্থান সংকুলানের অজুহাতে ধান ক্রয় বন্ধ রাখায় এ উপজেলার কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রতি মণ ২২ টাকা দরে বড়াইগ্রাম উপজেলা খাদ্যগুদামে প্রথম কিস্তিতে ৬৭০৯ মেট্রিকটন চাল এবং ১৪ টাকা কেজি দরে ৪৪৪ মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী উপজেলা ধান চাল ক্রয় কমিটি গত ২০ মে থেকে ধান চাল কেনা শুরু করে। কিন্তু গত ২৮ মে তারিখে মাত্র ৫.৮ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করে ল্যমাত্রা পূরণ না হলেও ধান ক্রয় বন্ধ রাখা হয়। এতে উপজেলার প্রকৃত কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে, সরকারদলীয় কিছু নেতাকর্মীরা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে মিলার না হয়েও মতার দাপটে উপজেলা খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করছেন।
নিয়ম অনুযায়ী কেবলমাত্র চুক্তিবদ্ধ মিল মালিকরা খাদ্যবিভাগের রেশিও অনুপাতে চাল সরবরাহ করার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। চলতি আগষ্ট মাসে পুনরায় ১২৮৪ মেট্রিকটন চাল ক্রয়ের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে একই নেতারা কোন মিলারদের মধ্যে বন্টন না করে নিজেরাই এককভাবে সম্পুর্ণ চাল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এভাবে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের দূর্নীতি, সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের দৌরাত্ব ও নানা অনিয়মের কারণে মিলাররা গুদামে চাল বিক্রি করতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রায় ৮/১০ জন মিলার জানিয়েছেন, বৈধ চুক্তিপত্র থাকা স্বত্ত্বেও বারবার ঘুরে ঘুরে তারা গুদামে চাল বিক্রি করতে পারছেন না। অন্যদিকে, সরকারদলীয় কিছু নেতারা হাট থেকে কম দামে নিুমানের চাল কিনে চুক্তিপত্র ছাড়াই অসাধু গুদাম কর্মকর্তাদের সহায়তায় অবাধে গুদামে চাল সরবরাহ করছেন বলে তারা অভিযোগ করেন।
এমনকি এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি করা হলে মিলারদেরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও তারা জানান।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে আমরা প্রতি কেজিতে ৪/৫ টাকা লোকসান দিয়ে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। আর এখন সরকার দলীয় কিছু লোকের কারণে ব্যবসাই টিকিয়ে রাখতে পারছি না। আমরা নিয়মানুযায়ী চাল সরবরাহ করতে না পারলে প্রয়োজনে আদালতের স্মরণাপন্ন হতেও পিছপা হবো না।
বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান বলেন, স্থান সংকুলানের অজুহাতে ধান না কেনার এবং কৃষকদের নানাভাবে নাজেহাল করার বিষয়ে তিনি শুনেছেন।
তিনি বলেন, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ক্রয় কমিটিকে না জানিয়ে নিজেদের ইচ্ছে মাফিক কাজ করছেন।
অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন বলেন, আমরা মিলারদের নিকট থেকেই চাল নিয়েছি। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে অনেক কিছৃ করতে হয়, কোন অনিয়ম হয়ে থাকলেও আমি তার সাথে জড়িত নই।
বড়াইগ্রাম উপজেলা ধান চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লা নূর বাবু প্রভাব খাটিয়ে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের চাল সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।