মেহেরপুর জেলায় খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ে একই পরিবারের আটজন কর্মরত। এর মধ্যে জেলার গাংনী সরকারি খাদ্যগুদামের ছয়জন কর্মীর মধ্যে পাঁচজনই এক পরিবারের সদস্য। খাদ্যগুদামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্মচারীদের অভিযোগ, এ কারণে গাংনী সরকারি খাদ্যগুদাম একটি পরিবারের নিয়ন্ত্রণে চলছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, গাংনী সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) হলেন ফুল জামাত আলী। তাঁর বড় ভাইয়ের ছেলে কাওছার আলী সেখানকার সহকারী খাদ্য পরিদর্শক।
গুদামের পাহারাদার আবদুল কুদ্দুস ও আজম আলী হলেন ফুল জামাত আলীর বড় ভাইয়ের ছেলে। পিয়ন সিরাজুল ইসলাম তাঁর ভাগনিজামাই। ওই গুদামের দারোয়ান আনিছুর রহমান ছাড়া বাকি সব কর্মীই এক পরিবারের সদস্য।
এ ছাড়াও মেহেরপুর সদর উপজেলার খাদ্যগুদামের পাহারাদার সফর আলী হলেন ফুল জামাত আলীর আপন ভাই। আমঝুপি গুদামের পাহারাদার আলম শেখ তাঁর (ফুল জামাত আলী) ভগ্নিপতি ও ওই গুদামের পাহারাদার কাতব আলী তাঁর শ্যালক।
একই পরিবারের আটজন কীভাবে খাদ্য বিভাগে চাকরি পেলেন, সে ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীরা জানান, গাংনীর ওসিএলএসডি ফুল জামাত আলীর বড় ভাই খবির উদ্দিন ছিলেন জেলা খাদ্য অফিসের প্রধান অফিস সহকারী। তাঁর সুবাদেই ফুল জামাত আলী ও বাকিদের চাকরি হয়। সবাইকে চাকরি দিয়ে খবির উদ্দিন ২০১১ সালে অবসর নেন।
এ ব্যাপারে গাংনী খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি ফুল জামাত আলী জানান, বড় ভাই খবির উদ্দিনের হাত ধরেই তাঁদের আটজনের চাকরি। বদলি না হওয়ায় সবাই দীর্ঘদিন ধরে এক জেলায় চাকরি করছেন।
তবে, চাকরি ক্ষেত্রে তাঁরা কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা খাদ্য দপ্তরের কর্মচারীরা জানান, খবির উদ্দিন খাদ্য বিভাগে স্থানীয় প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। অফিস সহকারী হলেও বেশির ভাগ কর্মকর্তা থাকতেন তাঁর নিয়ন্ত্রণে। সেই প্রভাবে তিনি তাঁর ভাই, ছেলে ও স্বজনদের খাদ্য বিভাগে চাকরি দিয়েছেন।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হোসেন জানান, গত বছরের ৫ জুলাই গাংনী খাদ্যগুদাম থেকে ১৮৪ বস্তা গম পাচার হয়ে যায়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ওই বছরের ৮ ও ৯ জুলাই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে গুদামরক্ষক, পাহারাদারসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মেহেরপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুধাংশু হাওলাদার জানান, কোনো পরিবারের নিয়ন্ত্রণে খাদ্য বিভাগ চলছে না।
গাংনী খাদ্যগুদামে কর্মরত পাঁচজনসহ একই পরিবারের আটজন জেলা খাদ্য বিভাগে কর্মরত, এটা তাঁর জানা ছিল না। তিনি বলেন, একই স্টেশনে একই পরিবারের এতজন থাকা ক্ষতিকর। এতে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ও শৃঙ্খলা নষ্ট হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।