আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মালয় দেশে

জীবনের এই গতিপথ...পূর্ব-পশ্চিমে যেন এক নিছক অন্বেষণ

১। আইলাম এই মালয় দেশে। আইসা দেখি এইখানে পোলার চেয়ে মাইয়া বেশি। মানুষে কয় ৪;১। আমার তো আর আনন্দ ধরে না।

ভাবিলাম, মনে হয় এইবার একলগে তিনটা প্রেম করুম। কিন্তু আফসোস যে, এইখানের মালয় মাইয়া গুলান কেমন জানি। কথা কইলে কাটা কাটা উত্তর দে। চায়নিজগুলা এক একটা চিজ। ইন্ডিয়ান তামিলগুলা হইল বদমাইস।

ইন্দোগুলা খালি ইটিস-পিটিস। আরবগুলি আরবের লগে চলে। ইউরোপিয়ানগুলা আমারে পাত্তা দে না। আফ্রিকানগুলারে আমি পাত্তা দেই না। তাইলে বাকি থাকে কে? বাকি থাকে থাই আর ফিলিপিনো।

আহা......। কি তাদের ব্যবহার, কি তাদের চরিত্র মাধুর্য। মন কাইড়া নেয়। আমারে অনেক ফিলিপিনো মাইয়া কইছে, আমি নাকি দেখতে ফিলিপিনোদের মত। আমি নাকি অন্নেক সুইইইইইইইটটট (অনেকে আপত্তি করতে পারেন, তবে কথা সত্য)।

আমি কবি। তাই আমার ভাষায় বলি, মাছের মত জীবন, যদি হইত আমার, করিতাম অন্ধকার জলে ছুটোছুটি। খাইতাম শ্যাওলা, বালি আর ধূলিকণা, হইতো তোমার সাথে ঠুকাঠুকি। (জনৈকা ফিলিপিনো নারীর প্রতি) ২। বাসা খুঁইজা বেড়াইতাছি।

পাইতাছিনা। যেইগুলা পাই, ওই গুলা মনে ধরে না। যেইগুলি ধরে ওইগুলিতে থাকতে গেলে মাইয়াদের সাথে থাকতে হইব (মালয় দেশে মাইয়া আসলেই বেশি)। তো আমার তো কোন আপত্তি নাই। যাই হোক, একটা বাসা পাইলাম।

ওই বাসাতে দুইডা মাইয়া থাকে। আমি একমাত্র পোলা। বাড়িওয়ালির নাম ফাইজা, বয়স ছাব্বিস। খুবই ছদর-ভদর টাইপ। খালি টাকা টাকা করে।

আমারে প্রথমে দেইখাই কইল, শোন বালক, আমি কি দেখতে দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী মাইয়া না? আমি ওর দেহের এদিক-ওদিক, আনাচে-কানাচে তাকাইয়া কইলাম, হুম, তুই বেডি আসলেই সুন্দর মাল (মনে মনে কই, আমার বাল রে)। তরপরে সে কইল, তাইলে আমারে তুই দুই মাসের বাড়িভাড়া এডভান্স দে। আমি তো পড়লাম ফাঁপড়ে। আমি কই, আমি তো বাসাতে সামনের মাসে উঠুম, তখন টাকা দিমুনে। সে কয়, তোর জন্য যে আমি বাসা খালি রাখুম...ওইটার দাম নাই।

দে দে টাকা দে। আরে আমি হইলাম দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী মাইয়া, আমার বয়স ছাব্বিস, তুই আমারে বিশ্বাস করসনা। আমি পড়লাম মহা চিন্তায়। আমি তো আসলেই ওরে বিশ্বাস করি না। তখন আমি ওরে কইলাম, আরে আমিও তো একটা সুন্দর পোলা।

আমার বয়স পঁচিশ। তুই আমারে বিশ্বাস করসনা। খালি টাকা টাকা করতাছস। কইলামতো সমনের মাসে দিমু। এই কথা শুইনাই সে কেমন জানি চিমসাইয়া গেল।

পরে অনেক কথার পরে ওরে একশত রিংগিট দিয়া বিদায় করলাম। আসলে দেওয়ার কথা ছিল, পনেরশ। ওই বাসাতে পরে মাত্র দুই মাস ছিলাম। ৩। এখন মাঝে মাঝে আমার বন্ধুগণ, ফেইসবুকে আমার ইংরেজী ঠিক কইরা দে।

তা ঠিকই আছে। কিন্তু এক পিছনে আবার একটা ইতিহাস আছে। তখন আমি মালয় দেশে নতুন। কিছু চিনিনা। রাস্তা দিয়া হাঁটতাছি, আর খাবারের দোকান খুঁজতাছি।

প্রথমে পাইলাম এক সুবেশী ভদ্রলোক। খুব বিনয়ের সাথে তার কাছে গিয়া কইলাম, এক্সকিউজ মি, আই এম লুকিং ফর আ রেস্টুরেন্ট। ক্যান ইউ প্লিজ শো মি দ্যা ওয়ে টু রেস্টুরেন্ট। আমার কথা শুইনা হেই বেডা পুরা ভিমরী খাইল মনে হয়। সে আমার দিকে তাকাইয়া মালে ভাষাতে কি সব হাবজাব কইল, আমি কিছু বুজি না।

ওরে দিলাম বাদ। পরে পাইলাম আরেকটা মাইয়া। ওরেও একই কথা কইলাম। সে তো এমনে তাকাইল, মনে হইল আমি ওরে অফার করছি। বাদ শালা।

প্রচন্ড বিরক্ত লাগতেছে। দেখলাম একটা বুড়া আসতেছে। ওরে যাইয়া কোনমতে কইলাম, হাই, ফুড হোয়ার? বুড়া আমার দিকে তাকাইয়া হাইসা কইল, ওওও ফুড। গো... কইয়া হাত দিয়া দেখাইলো কোন দিকে যামু। তারপরে কইল, দেন গো লেফট।

আমি বুজলাম, আরে শালা, ওরা তো গ্রামার মাইনা ইংরেজী কয় না। ওরা খালি noun আর verb গুলি বইলা দে। বুইজা গেলাম সব। তারপরে রেস্টুরেন্ট-এ যাইয়া যখন কাউন্টারের মাইয়াটারে কইলাম, ফুড টেকেন, মানি গিভেন। সে তো হাইসা হাইসা কইল, থ্যাংকু...থ্যাংকু।

কাম আগেন। তারপর থেইকা আমি কেমুন জানি হইয়া গেলাম। আমি তখন থেইকা কই, ১। গো হিলপার্ক (ট্যাক্সি ক্যাবওয়ালারে) ২। গিভ জুস ৩।

বাস হোয়েন? ৪। ফুড হাউ? ৫। লাভ ইউ বেবী (এইটা সবাই বুজে) ৪। আমার রিসার্স গ্রুপে তিনটা মাইয়া। আমি একমাত্র পোলা।

ভালো কথা। পালের গোদা যে মাইয়াটা, সে নিজেরে কয়, তিন ভাষাতে এক্সপার্ট, চাইনিজ, মালে আর ইংরেজী। ভালো। প্রথম দিন সে আমারে দেইখা কইল, আর ইউ ফ্রম, ম্যাট্রিয়াস ইনজিং? আমি কই, হোয়াট ইস ম্যাট্রিয়াস ইনজিং? সে আমার হাত নাইড়া কয়, ম্যাট্রিয়াস ইনজিং? ম্যাট্রিয়াস ইনজিং? আমি তো আর বুজি না। পরে আধাঘন্টা চেষ্টার পরে বুজলাম, ও এইটা ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং।

হায় রে, মালে তে আইসা নিজের ডিপার্টমেন্টটারে চিনতে পারলাম না। আফসোস রে, আফসোস। সুইট আমি মাছের মত জীবণ...আর ঠুকাঠুকি। এটা সাউথ চায়না সী। এত পরিস্কার পানি, যে পুরা নীচ পর্যন্ত দেখা যায়।

এবং এই পানিতে শেড আছে। পাহাড়ের উপর থেকে দেখলে পানির রঙ হাল্কা নীল থেকে গাড় সবুজের দিকে টার্ণ করে। সেই পুরনো বাসার জানালা,......এখন জাস্ট পাশের বাসাতে। KFC ফুড......ফুড হোয়ার? এইটা কি বুজি না। আমি কিছু জানি না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।