আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমকামী পশুদের অধিকার চাই-

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

বিশ্বের অন্তত ২০টা দেশ আছে যেখানে সমকামিতার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। অর্থ্যাৎ কেউ যদি এমন কোনো কাজ করে ধরা পড়ে তবে তাকে কতল করা হবে- এই সম্পূর্ণ নৈতিকতা বোধের উৎস ধর্ম। ধর্মীয় কারণে এটার উদ্ভব। কিন্তু এটা কি অনৈতিক কোনো সম্পর্ক? একজন ছেলের যদি অন্য একটি ছেলের সাথে শাররীক এবং মানসিক সম্পর্ক নির্মাণের আগ্রহ থাকে এবং সেই জুটি যদি অন্য কারো ক্ষতির কারণ না হয়ে নিজেদের এই সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখে, এবং সেই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার দুঃখে আত্মহত্যা করে সেটা অমর প্রেমের দৃষ্টান্ত হিসেবে স্বীকৃত হবে না কেনো? প্রেমবোধ এবং প্রেমের সাথে জড়িত কামজ আবেগ নিয়ে কারো আপত্তি নেই। যখন বিষমকামী কোনো সম্পর্কে এমন কামজ আবেগ ও আকুতি প্রকাশিত হয় তখন সেটা উঁচুদরের শিল্প হিসেবে গণ্য হচ্ছে, সেটা নৈতিকতাবোধে আঘাত করছে না।

কিন্তু যখন বিষয়টা একলৈঙ্গিক তখনই মানুষের নিজস্ব ধর্মীয় জড়তা চলে আসছে বিবেচনায়। সেখানে নৈতিকতা এবং পূর্বতন বিবেচনার অবকাশ নেই। আদালত সমকামী দম্পত্তির অস্তিত্ব মেনে নিয়েছে, সমাজও বিষয়টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মানুষের নিজস্ব নৈতিকতাবোধ গবেষণায় অদ্ভুত একটা বৈষম্য কিংবা বিকৃতি নিয়ে আসে, তাই যখন জীববিজ্ঞানী কিংবা নৃতাত্ত্বিক, যারা পশু-পাখীর আচরণ নিয়ে গবেষণা করে মানবআচরণের হদিশ খুঁজবার চেষ্টা করছেন, তারা দেখলেন শুধু মানুষ নয়, বরং জীব জগতের অনেক প্রাণীই এমন সমকামিতা প্রদর্শন করে তখন তারা পুরুষ নারীর সম্পর্ককে বললেন এটা জীবের স্বাভাবিক যৌনতা, জীব শুধুমাত্র বংশবৃদ্ধির কারণেই সঙ্গমলিপ্ত হয় এবং সেটার কারণেই তারা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এবং সমলৈঙ্গিক যৌনসম্পর্কগুলোকে তারা নির্ধারণ করলেন গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ হিসেবে।

জাপানের এক চিরিয়াখানায় একজোড়া ফ্লেমিঙ্গো পাখি, উভয়েই পুরুষ , যখন এমন শাররীক সম্পর্ক শুরু করলো তখন তাদের একজনকে পৃথক করবার চেষ্টা ভালো ফল বয়ে নিয়ে আসে নি। তাদের স্বাভাবিক যৌনাচারে মানুষের নৈতিকতার হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে তারা উভয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে তাদের এক সাথেই রাখা হয়েছিলো। প্রেমের কাছে পরাজিত হয়েছিলো মানুষের জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নৈতিকতাবোধ। মানুষ নিজের রুচির সাথে খাপ খায় না বলে যেসব বিষয়ে আপত্তি জানায়, তার সবগুলোই অনৈতিক হয় না।

আদালত যখন সমকামী দম্পতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যখন অনেক সমকামী আদালতের প্রত্যক্ষ আদেশ কিংবা নির্দেশনা ছাড়াই একত্রবাস করছে তখন তাদের দাম্পত্ব্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১০টি দেশের আদালত। সেসব দেশে সমকামী দম্পতির একজন মারা গেলে তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হবে তার পার্টনার। এই আইনের বিরুদ্ধে ভোট হয়েছে , এবং এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে যদিও সমকামী দম্পতিদের আইনী অধিকার রদ হয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র বলেই বলছি, অনেক মানুষই সমকামী দম্পতির আইনী অধিকারের পক্ষে, তাদের ঢালাও ভাবে অনৈতিক বলে ফেলা অযৌক্তিক বিবেচিত হবে। অনৈতিকতা কিংবা নিজস্ব অরুচি সবার ভেতরে চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই কোনো। প্রাণীজগতে যা যা ঘটে , মানুষও তাই করে।

মানুষের প্রাণীত্ব এটে প্রকাশিত হয়, মানুষের অলৌকিকত্ব কখনই প্রকাশিত হয় না । প্রাণী হস্তমৌথুন করে, নিজের যৌনচাহিদা বস্তুগত উপাদান দিয়ে প্রশমন করে, সুযোগ পেলে নিজের পার্টনারের বাইরে অন্য পার্টনারের সাথে সঙ্গম করে, তারা সমকামী। একটা বিষয়েই তারা পিছিয়ে, তাদের প্রাযুক্তিক অগ্রগতি হয় নি, সুতরাং তারা নিজেদের সঙ্গমের দৃশ্য নিজেরা ধারণ করে অন্য কাউকে দেখাতে পারে না। প্রাযুক্তিক এই পিছিয়ে থাকাতেই তাদের তেমন বড় ক্ষতি হয় নি। কারণ সামাজিক ফোরামে এমন অনেক জীবই দেখা যাচ্ছে ইদানিং।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।