আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিস্টুলা কি? জানুন এবং অন্যকে জানান



ফিস্টুলা কি? ফিস্টুলা হচ্ছে এক ধরনের অস্বাভাবিক নালী যার গায়ে কোষকলা থাকে এবং যা আবরণী কলা দিয়ে আবৃত শরীরের যে কোন দুটো অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটায়৷ মানুষের দেহে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধির পরিণতিতে বিভিন্ন রকম ফিস্টুলা হতে পারে৷ তবে সচরাচর যে সব ফিস্টুলা দেখা দেয় তা হচ্ছে - ১.এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তার ফিস্টুলা ২.ভেসিকে ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা ৩.রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা এনাল ফিস্টুলা (Anal Fistula) এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তায় ফিস্টুলা হলে একটা নালী সৃষ্টি হয় যা পায়খানার রাস্তার ভেতরের কোনো অংশের সঙ্গে বাইরে সংযোগ স্থাপন করে দেয়৷ পায়খানার রাস্তায় দীর্ঘদিনের সংক্রমণ ও প্রদাহের ফলে এ রোগ দেখা দেয়৷ লক্ষণ * পায়খানার রাস্তার পাশ দিয়ে পুঁজ পড়ে, আক্রান্ত স্থানে ঘা হয়৷ * জ্বর হয় * পায়খানার রাস্তার পাশে ছিদ্র পাওয়া যায় (চিকিত্‌সক পরীক্ষা করলে) * পায়খানার রাস্তার পাশের ছিদ্রে চাপ দিলে পুঁজ বের হয়ে আসে৷ চিকিৎসাঃ এ রোগের একমাত্র চিকিত্‌সা হচ্ছে শল্য চিকিত্‌সা বা অপারেশন৷ তাই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞ সার্জনের কাছে পাঠাতে হবে৷ না হলে পরবর্তী সময়ে নানাজটিলতা দেখা দিতে পারে৷ ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Vesico Vaginal Fistula-VVF) ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতাসম্পন্ন গর্ভবতীদের অনেক সময় প্রসবের পথ সরু থাকে এবং অনেক সময় প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা প্রসব পথে আটকে যায়৷ আর এই প্রসব পথের চাপ যদি মূত্রথলির দিকে থাকে৷ তবে যোনিপথ ও মূত্রথলির মাঝখানের দেয়াল ছিদ্র হয়ে সব সময় মূত্র যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে৷ ইহাকে ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বা ভিভিএফ বলে৷ রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Recto Vaginal Fistula-RVF) যোনি ও মলদ্বারের দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যোনি পথ দিয়ে বের হওয়াকে রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বলে৷ কারণ * জণ্মগত * বাইরের কোনও বস্তু যদি যোনিপথে ও মলদ্বারে আঘাত করে পথ সৃষ্টি করে৷ * প্রসবকালে যদি দীর্ঘ সময় ধরে শিশুর মাথা যোনিপথে আটকে থাকার ফলে যোনিপথের দেয়ালের কোষকলাগুলিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে কোষকলা নষ্ট হয়ে যায় এবং তার ফলে দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যৌনিপথে চলে আসে৷ * বাধাপ্রাপ্ত প্রসবের কারণে ফরসেপ ব্যবহার করার সময় ফরসেপ সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে৷ * শিশুর মাথা তাড়াতাড়ি প্রসব করানোর জন্য ধাত্রী হাত দিয়ে বার বার প্রসবের রাস্তা প্রশস্ত করার চেষ্টা করলে বা টানা হেঁচড়া করে প্রসবের চেষ্টা করলে৷ * জরায়ুর মুখ পুরোপুরি খোলার আগেই এবং হঠাত্‌ করে প্রসবের ব্যথা আসার কারণে মা কেঁাথ দিয়ে প্রসব করার ফলে যোনিপথের দেয়াল ছিঁড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷ লক্ষণ * যোনিপথে ব্যথা অনুভব হবে * যোনিপথের দেয়াল ঢিলে হয়ে যাওয়ার ফলে সহবাসে অসুবিধা হয় * সব সময় মল যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে চিকিৎসা যদি কোনও রোগীর উপরোক্ত লক্ষণগুলো ধরা পড়ে তবে তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷ পরামর্শ * প্রথবার প্রসবের সময় ১২ ঘণ্টার বেশি হলে এবং দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী প্রসবের সময় ৬ ঘণ্টার বেশি হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ * জরায়ুর মুখ ছোট হলে বাচ্চা প্রসবের জন্য টানা হিঁচড়া না করে দ্রুত হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত৷ প্রতিরোধ * গর্ভবতীর গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷ * ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতা সম্পন্ন গর্ভবতীদের হাসপাতালে প্রসব করানো উচিত৷ * ডাক্তার বা দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাইয়ের হাতে প্রসব করানো উচিত৷ * প্রসবের পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷ ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।