উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের নির্বাসিত জীবন নিয়ে যখন সারা বিশ্ব জল্পনা-কল্পনা আর আলোচনায় মশগুল, তখনই পটভূমিতে আবিভর্ূত হলেন আরেক অ্যাসাঞ্জ। তিনিও গোপন নথি ফাঁসকারী। তার নাম এডওয়ার্ড স্নোডেন। যুক্তরাষ্ট্রের গোপন গোয়েন্দা নজরদারির গোমর ফাঁসকারী এডওয়ার্ড স্নোডেনের এক বছরের রাজনৈতিক আশ্রয়ের জীবন নিয়ে চলছে এখনকার জল্পনা-কল্পনা। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাশিয়া স্নোডেন 'বীর' হিসেবে বরণ করে নিলেও রাশিয়ার 'আশ্রিত' ইতিহাস এক ভিন্ন বার্তা বহন করে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, রাশিয়ায় স্নোডেন দারুণ মর্যাদায় আশ্রয় পেলেও শেষ পর্যন্ত হয়তো তার জীবনে নেমে আসবে নিদারুণ একাকীত্ব।
সত্যিকার অর্থে স্নোডেন এখন থেকে তার ভাগ্য নিয়ন্তা নয়, মস্কো নির্বাসনে তার জীবনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে- এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ৬ সপ্তাহের কূটনৈতিক যুদ্ধের পরিণতিতে মস্কো সুকৌশলে স্নোডেনকে ঢাল হিসেবে লুফে নিল। যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু বলে খ্যাত স্নোডেনের রাশিয়া জীবন সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেভ কালোরকভ বলেন, 'স্নোডেনের রাজনৈতিক আশ্রয় জীবন সহজ হবে না। ' ক্রেমলিনের তুরুপের তাস হিসেবে বিবেচিত হবেন স্নোডেন।
তিনি আরও বলেন, স্বদেশের চেয়ে নির্বাসিত জীবন আরও কঠিন হবে। এর আগে যারা রাশিয়ার আশ্রয়ে ছিলেন তাদের জীবনও ছিল কণ্টকাকীর্ণ। কিম ফিলকির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, স্নোডেনের ওপর এত পরিমাণ মানসিক চাপ থাকবে, যার ঘানি টানতে হবে সারা জীবন। স্নোডেন দৃশ্যত নজরবন্দী থাকবেন। তিনি আরও বলেন, একমাত্র ট্রানজিট এলাকায়ই স্নোডেন মুক্ত এবং স্বাধীন ছিল।
ট্রানজিট এলাকা ছাড়া রাশিয়ায় আশ্রয় লাভের পর পর তার বন্দী এবং পরাধীন জীবনের সূচনা হলো। যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচরবৃত্তির মুখোশ উন্মোচনকারী এডওয়ার্ড স্নোডেন মস্কোয় বন্ধুর দেওয়া এক ফ্ল্যাটে স্থায়ী হয়েছেন। এদিকে তার রাশিয়ান আইনজীবী আনাতোলি কুচেরিনা বলেন, নিরাপত্তার জন্য স্নোডেনের ফ্ল্যাটের অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্নোডেনের ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে সুযোগ থাকছে কিন্তু তার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য অত্যন্ত গোপনীয় এবং স্পর্শকাতর। স্নোডেন এত বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে যে, তিনি রেড স্কয়ারে হাঁটাহাঁটি কিংবা মাছ ধরতে যেতে পারবেন না।
ওদিকে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্নোডেন রাশিয়ার একজন নাগরিকের যত সুযোগ-সুবিধা আছে তার সবই পাবেন। তিনি চাকরি করতে পারবেন। যেহেতু স্নোডেন ধনী ব্যক্তি নন, তাই জীবিকা অর্জনের জন্য স্নোডেনকে কাজ করতে হবে। উল্লেখ্য, প্রযুক্তি জগতের এ মহানায়ক ইতোমধ্যে 'রাশিয়ান ফেসবুক' 'ভোকনটান্কটিতে' অতিথি লেকচারার হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।