মানুষ যা কল্পনা করতে পারে, তা সে অর্জন করেত পারে।
দিন আনি দিন খাই
আমরা যারা দিন আনি, দিন খাই,
আমরা যারা হাজার হাজার দিন খেয়ে ফেলেছি,
বৃষ্টির দিন, মেঘলা দিন, কুয়াশা ঘেরা দিন,
স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অধীর প্রতীক্ষারত দিন,
অপমানে মাথা নিচু করে চোরের মত চলে যাওয়ার দিন,
খালি পেট, ছেঁড়া চটি, ঘামে ভেজা দিন,
নদীর জলের আয়নায়, বড় সাহেবের ফুলের বাগানে দিন,
নৌকার সাদা জালে ঢেউয়ের চুড়ায় ভেসে যাওয়া দিন,
রোদে পোড়া, আগুনে জ্বলা রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা দিন,
হৈ হৈ অট্টহাসিতে কলরোল কোলাহল ভরা দিন,
হঠাত্ দক্ষিণের খোলা বারান্দার আলো ঝলমলে দিন -
এই সব দিন আমরা কেমন করে এনেছিলাম, কিভাবে,
কেউ যদি হঠাত্ জানতে চায়, এ রকম একটা প্রশ্ন করে,
আমরা যারা কিছুতেই সদুত্তর দিতে পারবো না,
কিছুই বলতে পারবো না, কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারবো না
কি করে আমরা দিন এনেছিলাম,
কেন আমরা দিন আনি, কেন আমরা দিন খাই
কেমন করে আমরা দিন আনি, দিন খাই।
ভ্রমণ কাহিনী
শেষবার নামার আগে সমস্ত জিনিস পত্রগুলি
তালিকা মিলিয়ে নিতে হবে, এবার ভ্রমণকালে
প্রচুর সংগ্রহ হ'লো, মিনে-করা আগ্রার ফুলদানি।
জরির চপ্পল, দ্রুতগামী মেল ট্রেনে সচকিত
ভ্রূ-পল্লব, কী-কী ফেলে গেলে বাড়ি ফিরে দু:খ হবে?
যে আমগাছের ছায়া সঙ্গে নিয়ে আসা অসম্ভব
তা-ও বুঝি অজানিত হোল্ড-অলে বাঁধা হয়েছিলো,
আমগাছের ছায়ার ওজন জানা নেই, তাই করলে
বুকিং সম্ভব নয়, ভ্রূ-ভঙ্গির কুলি ভাড়া নেই।
আমি লিখিনি
কোথাও ছাপার ভুল হয়ে গেছে।
ভীষণ, বিচ্ছিরি
এ পদ্য আমার নয়, এই আলপনা, এই পিঁড়ি;
এই ছবি আমি তো আঁকিনি,
এই পদ্য আমি তো লিখিনি।
এই ফুল, এই ঘ্রাণ, এই স্বপ্নময়,
_________________ স্মৃতি নিয়ে এই ছিনিমিনি
_________________ এই পদ্য আমি তো লিখিনি।
আমার পুরোনো খাতা, উড়ছে হাওয়ায়
ছেঁড়া মলাটের নিচে পোকা কাটা মলিন পাতায়
আমের বোলের গন্ধ, ঝরে আছে অমোঘ পলাশ।
কবেকার সে পলাশ, ধলেশ্বরী নদীটিরে ঘাটে,
একা একা ঝরে পড়ে সে কি সেই উনিশশো পঞ্চাশ?
মদন জাগলার মাঠে
আজও এক বিষন্ন শিমুল
গাছ ভরা, পাতা ভরা ভুল।
স্মৃতি নিয়ে এই ছিনিমিনি
কোথাও ভীষণ ভুল হয়ে গেছে,
ঐ ছবি আমার নয়, এই পদ্য আমি তো লিখিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।