!!!
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলা সদর থেকে ৫কি.মি. দূরত্বে টেংরা ইউনিয়নের হরিপাশা গ্রামে আরক আলীর বাড়ি অবস্হিত-এলাকায় যা “পাখি বাড়ি” নামে পরিচিত। সাদা বক এবং কালো পানকৌড়ি মিলিয়ে এই মুহূর্তে প্রায় ৮-১০ হাজার পাখির বাস। সেটাকে “পাখি বাড়ি” না বলে অন্য কিছু বললে কি মানায়? আসুন জেনে নেই পাখি বাড়ির ইতিহাস।
নিজেদের মধ্যে গপসপ
বাচ্চা পাখি বড় হচ্ছে
মনু নদীর ভাঙনে আরক আলীর পরিবার স্বাধীনতার পর পর পার্শ্ববর্তী গ্রাম তারাপাশা থেকে প্রায় ৮৬ শতকের বর্তমান বাড়িতে আসেন। তখন থেকেই শুরু হয় পাখি আসা।
চৈত্র থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত কয়েক পর্যায়ে পাখি আসে এবং ডিম পেড়ে বাচ্চা ফোটায়। প্রায় ৩০০ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এবং কয়েকটি বাঁশ ঝাড়ে হাজার হাজার পাখির বাসা দেখে অবাকই হতে হয়। বক ও পানকৌড়ির দল সকাল বেলা খাওয়ার খুঁজে বের হয় এবং বিকাল হওয়ার পূর্বেই বাসায় ফিরে আসে।
নীচে বক, উপরে পানকৌড়ির বাসা
বাঁশঝাড়ে বকের বাসা
ঝড়ে নীচে পড়ে গেছে পাখির বাসা, পাখি এটি আর ব্যবহার করবে না
বাড়ির লোকজন কি বিরক্ত হন না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা জানান, প্রথম দিকে অতিষ্ঠ হয়ে সকল বাঁশ ঝাড় কেটে ফেলেছিলেন। কিন্তু তারপরও পাখিদের আগমন ঠেকানো যায়নি।
এখন পাখিরাই পরিবারের সদস্য হয়ে গেছে। পাখিদের বোটকা গন্ধ আর তাদের নাকে লাগে না। গাছের ফল এখন পাখিদের জন্য বরাদ্দ। পাখিদের পাহারা দেবার জন্য রয়েছে ৩-৪টি সারমেয়। মালিক না থামালে অপরিচিত দেখলে এমনই হৈ-চৈ করে যে পালিয়ে না যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না।
বাড়ির মানুষ, মুরগি, হাঁস, সারমেয়, বিড়াল মিলে চমৎকার এক সহাবস্হান। ঝড়-বৃষ্টি হলে পাখিরা তাদের বাসা ছেড়ে মালিকের ঘরে ঢুকে পড়ে। বাড়ির মানুষজনের কাছে তা খুবই স্বাভাবিক।
দিন শেষের পথে, হাওর থেকে সঙ্গীর ফেরার অপেক্ষায়
ডিমে তা দেয়া
ছানার পরিচর্যা
প্রতিবেশী লোকজন মাঝে মধ্যে পাখি মারার চেষ্টা করতো। তবে পাখি বাড়ির লোকজনের প্রতিরোধের মুখে এখন আর কেউ তেমন করে পাখি শিকারের চেষ্টা করেন না।
সবশেষে বাড়ির মালিক জানালেন সবচেয়ে কৌতুহলোদ্দীপক তথ্য-তাঁদের বাড়ির সীমানা সংলগ্ন অন্যদের মালিকানায় প্রচুর গাছ রয়েছে। কিন্তু কোন পাখি ভুলক্রমে সেই গাছগুলোয় বাসা বাঁধা না। স্বচক্ষে দেখলাম। সত্যিই তাই। এবং আবারও অবাক না হয়ে পারলাম না !!!
ছোট্ট ছানা বাসা থেকে নীচে পড়ে গেছে।
বাড়ীর মালিক সযত্নে বাসায় পরে তুলে দিলেন
নতুন ছানার হাঁটতে শেখা
পানকৌড়ি
শান্ত-সুশীতল পাখি বাড়ি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।