হ য ব র ল কথামালা
যত দিন যাচ্ছে শক্তি সাশ্রয়ী বাতির (Energy Saving Lamp-ESL) প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে । বিশেষ করে আমাদের মত দেশে যেখানে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা যাওয়ায় জনগন ত্যক্ত বিরক্ত সেখানে এই শক্তি সাশ্রয়ী বাতি কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে ।
শক্তি সাশ্রয়ী বাতি আমাদের সাধারন বাতির তুলনায় ৮০% এরও অধিক শক্তি সাশ্রয়ী। দেখা যাক শক্তি সাশ্রয়ী বাতি আসলে কিভাবে শক্তি সাশ্রয় করে । সাধারন বাতির কর্মপদ্ধতি হচ্ছে মোটামুটি এইরকম যে বিদ্যুত বাতির ফিলামেন্টের ভিতর দিয়ে যখন পজিটিভ থেকে নিগেটিভ এ প্রবাহিত হয় তখন ফিলামেন্টকে উত্তপ্ত করে ।
ফিলামেন্টকে উত্তপ্ত হয়ে ফোটন বিচ্ছুরন করে । ফোটন কণা ফিলামেন্ট থেকে বের হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং
আমাদের চারপাশের বিভিন্ন বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখের রেটিনায় আধাত করে আর আমরা দেখতে পাই ।
void(1);
সাধারন বাতির (Incandescent Lamp) ফোটন জেনারেশনের এই কর্মপদ্ধতিতে প্রচুর তাপজনিত শক্তির অপচয় (Heat loss) ঘটে ।
এবার দেখা যাক শক্তি সাশ্রয়ী বাতি কিভাবে কাজ করে । Incandescent Lamp থেকে এর কর্মপদ্ধতি একেবারেই আলাদা ।
এখানে বলে রাখা ভাল যে শক্তি সাশ্রয়ী বাতি আর আমাদের ফ্লুরোসেন্ট ল্যম্প (আমরা যাকে টিউব লাইট বলে থাকি) এর মদ্ধে কোন পার্থক্য নাই । টিউব লাইটের পুরো ব্যবস্থাটিকেই জাষ্ট কমপ্যাক্ট করে ফেলা হয়েছে ব্যাস আর কিছু নয় । টিউব লাইটের লম্বা টিউবটাকে প্যাঁচানো হয়েছে । আর সাথে যে ব্যালাষ্ট থাকে তাকেও কমপ্যাক্ট করে প্যাচানো টিউবের গোড়াতে স্থান করে দেয়া হয়েছে ।
void(1);
এজন্য শক্তি সাশ্রয়ী বাতিকে কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যম্পও (Compact fluorescent Lamp -CFL) বলা হয়ে থাকে ।
অনেকে অতি উৎসাহের বশে টিউব লাইটকে রিপ্লেস করার কথা থাকেন । অনেকে অতি উৎসাহের বশে সস্তা চাইনিজ CFL কিনেও প্রতারিত হয় আর সেই সাথে CFL সম্বন্ধে বিরূপ অভিজ্ঞতা লাভ করে ।
Incandescent Lamp এ পজিটিভ আর নিগেটিভ টার্মিনালকে পরিবাহক ফিলামেন্ট দ্বারা সংযুক্ত করা হয় আর CFL এ টিউবের দুই প্রান্তে দুইটা আলাদা ফিলামেন্ট থাকে । ফিলামেন্ট দুইটা Incandescent Lamp এর মত সংযুক্ত থাকে না । টিউবের মাঝখানটাতে নিষ্কিয় গ্যাস ভরা থাকে ।
CFL এর ব্যালাষ্ট ৫০ Hertz এর বিদ্যুতকে ৪৫ KHertz এ পরিনত করে । এত উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি তখন নিষ্কিয় গ্যাস এর বাধা অতিক্রম করে অপর প্রান্তের নিগেটিভ টার্মিনালে বিদ্যুত প্রবাহিত হয় । প্রবাহিত হওয়ার সময় তা নিষ্কিয় গ্যাসকে উত্তপ্ত করে । পরে টিউবের ভেতরের সারফেস এর ফসফর প্রলেপ থেকে ফোটন বিচ্ছুরিত হয় ।
void(1);
CFL এ কোন তাপজনিত শক্তির অপচয় হয় না ।
একটা ১০০ ওযাটের সাধারন বাতি যেখানে ৯৫/৯৬ ওয়াট বিদ্যুত নিয়ে ৯০০-১০০০ লুমেন আলো দেয় সেখানে ২৩ ওযাটের CFL ১৯-২০ ওয়াট বিদ্যুত নিয়ে ১০০০-১২০০ লুমেন আলো দেয় । আমাদের দেশের সব Incandescent Lamp কে যদি CFL দিয়ে রিপ্লেস করা হয় তাহলে ৪০০-৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাঁচানো সম্ভব । এমনকি ৪০০-৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনে যে খরচ হবে তার চেয়ে কম খরচ করেই সরকার বিনামূল্যে শক্তি সাশ্রয়ী বাতি জনগনকে দিতে পারে । খুব সম্ভবত বিশ্বব্যংকের অর্থায়নে সরকার এরকম একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে ।
আর আমাদের কর্তব্য হচ্ছে অমাদের বাসায় বিশেষত রান্নাঘর , বাথরূমে CFL ব্যবহার নিশ্চিত করা ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।