মাঝে মাঝে মন নিয়ন্ত্রনহীন হতে চায়; কিন্তু...............
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: ২০ মে ’০৯
টিপাই বাঁধে বাংলাদেশের ক্ষতি হবেনা বলে ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন যে বক্তব্য রেখেছেন তা সাধারণ জ্ঞানে ও কারিগরী জ্ঞানে সম্পূর্ণ ভুল
বাসদ আহ্বায়ক কমরেড খালেকুজ্জামান আজ ২০ মে ২০০৯ এক বিবৃতিতে ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্ত্তীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ভাতরীয় হাইকমিশনার টিপাই বাঁধের ফলে বাংলাদেশের ক্ষতি হবেনা বলে যে মন্তব্য করেছেন তা সাধারণ জ্ঞান কিংবা বিশেষজ্ঞ কারিগরি দিকের বিবেচনায় কোন দিক থেকেই ধোপে টেকেনা। তিনি বলেন, বাঁধের ফলে যে ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুরমা-কুশিয়ারার পানি প্রবাহ শীত মওসুমে বিশেষভাবে কমে যাবে এবং বর্ষায় হঠাৎ গেট খুলে দিলে বন্যায় ভেসে যাবে তা সাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষও জানে, বিশেষ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষিত মানুষের তা অজানা থাকার কথা নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা নদীর উজানে ভারতে মনিপুর রাজ্যের চোরাচাঁদপুর জেলায় বরাক ও টুইভাই নদীর সংযোগস্থলে টিপাই মুখে বাঁধ নির্মাণ করে ভারত যে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন করেছে তা ১৫০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৫০০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন। এতে যে বিপুল পরিমাণ পানি শুষ্ক মৌসুমে আটকে রাখা হবে তাতে সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনার পানি প্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে যাবে। ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭ জেলাসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মরুকরণ দেখা দেবে।
তাছাড়া বাঁধের ফলে পাহাড়ি ও সমতলের বন, গাছ, ফসল, কৃষি উৎপাদন, জলাশয়, অন্যান্য ছোট-বড় শাখা নদীসমূহ পানি বঞ্চিত হবে। সমুদ্রের লোনা পানি উপরে উঠে আসবে, কৃষি জমি হবে লবনাক্ত, পানীয় জলের সংকট হবে। বাংলাদেশের পরিবেশ ও জনগণ মারাত্মক বিপর্যয়ে পতিত হবে। আবার বর্ষায় বৃষ্টিপাত ও ভারী বর্ষণের সময় ফ্লাডগেট খোলা রাখলে প্রবল স্রোতে প্রচুর পানি নেমে বন্যায় ভাসিয়ে দেবে উক্ত জনপদ। অধিকন্তু টিপাই মুখে বাঁধ চালু হলে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানির উচ্চতা গড়ে ১ মিটার কমে যাবে এবং এই সব নদীর পানির প্রবাহ জুন মাসে ১০%, জুলাইতে ২৩%, আগস্টে ১৬%, সেপ্টেম্বরে ১৫% কমে যাবে।
ফলে সমুদ্রের লোনা পানি আরও ভিতরে ঢুকে পড়বে এবং কৃষি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে।
বিবৃতিতে খালেকুজ্জামান বলেন, টিপাই বাঁধের ফলে শুধু বাংলাদেশেরই নয় ভারতের মনিপুর, মিজোরাম, আসাম রাজ্যের জনগণেরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। যার বিরুদ্ধে ঐ অঞ্চলের জনগণও বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে, বাঁধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বাঁধ সংলগ্ন বিরাট এলাকা জলমগ্ন হবে। ১৩২০টি আদিবাসী পরিবার বাস্তুভিটা থেকে উৎখাত হবে।
২৭২৪২ হেক্টর বন ও পাহাড়ী ভূমি বিনষ্ট হবে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফারক্কা বাঁধের ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমের ১৬টি জেলা ইতিমধ্যেই মরুভূমিতে পরিণত হতে চলেছে। টিপাই বাঁধ সম্পর্কে বলা হচ্ছে এটি সেচ প্রকল্প নয়, বিদ্যুৎ প্রকল্প। এখান থেকে পানি সরানো হবেনা, আটকানো হবে এবং টারবাইন ঘুরিয়ে পানি ছেড়ে দেয়া হবে। এর জটিলতাকে ঢেকে রেখে যেভাবে সরলীকৃত বক্তব্য পেশ করা হচ্ছে তা অজ্ঞতা প্রসূত না উদ্দেশ্য প্রণোদীত তা বুঝা দরকার।
আমাদের সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কথা শুনলে মনে হয় তারাও ছেলে ভুলানো কথায় ভুলে মাথা ঝুলিয়ে চলেছেন যা দায়িত্বহীনতার সামিল। আমরা চাইবো সরকার অবিলম্বে টিপাই বাঁধ নির্মাণ থেকে বিরত থাকার জন্য ভারত সরকারের প্রতি দাবি জানান এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করেন। একই সাথে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণকে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
বার্তা প্রেরক
মাঈন উদ্দিন চৌধুরী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।