লেখাটি আমার দুলাভাই লোকমান কে উৎসর্গ করলাম
আমি যখন হাই স্কুলে পড়ি তখন অভাব আমাকে তাড়া করে। অভাবের কষ্ট কাকে বলে তা কিছুটা হলেও টের পেয়েছিলাম। অভাবের কারনেই আমি হিসাব করে চলতে বাধ্য ছিলাম। তখন দিনের বেলা দু' তিন বার চকবাজার যাওয়া হতো। বাজার থেকে কিছু পকেট মানি পাওয়া যেত।
পকেট মানি আসত এভাবে-সাধারণত যে দোকন থেকে মানুষ বাজার করত আমি ঐ সব দোকান থেকে বাজার করতাম না। বাজারের শেষের দিকে ধনিয়ার পুল নামক স্থানে রাস্তার ধারে বাজার পাওয়া যেত দোকানের চাইতে একটু কম দামে। ধরুন দোকানে আলু কেজি ১০ টাকা আর ঐ জায়গায় পাওয়া যেত ৮-৯ টাকা। ১০টাকার কমে পেলে বাকীটা আমার পকেটে রেখে দিতাম কাউকে না বলেই। (অবশ্য এটা অন্যায় কিনা জানিনা, কারন আমি আমাদের বাসার বাজারের সাথে অন্যদের বাজার ও করতাম।
) বাজারে গেলেই আাসর সময় রুবিন বেকারী অথবা ফকির কবির থেকে বাটার বন ডাইনিস, ক্রিম রোল কিনে
নিয়ে আসতাম।
মূল বিষয়ে আসি, ছোট বেলা থেকে হিসাব করে চলতে বাধ্য ছিলাম। কাউকে অপচয় করতে দেখলে খুবই খারাপ লাগত। এখনও লাগে।
এস, এস, সি তে পড়া অবস্থায় এক টিচারের বাসায় প্রাইভেট পড়তাম রাত ১০-১১ টা।
(এত রাতে কেউ প্রাইভেট টিচারের বাসায় পড়তে যাই কিনা আমার জানা নেই) তো টিচারের বউ ম্যাচের কাঠি বাঁচানোর জন্য গ্যাসের চূলা জালিয়ে রাখতেন। আমি যাওয়া মাত্রই আগে রান্না ঘরে গিয়ে চুলোটা বন্ধ করে দিতাম। মাসি আমাকে খুব বকা দিতেন (টিচারের বউকে্ আমরা মাসি বলে ডাকতাম) তারপর ও আমি শুনতাম না। এরপর আমি প্রতিদিনই ঐ কাজ করতে খাকলাম, এরকম কিছুদিন চলতে খাকলো। এরপর ও ওনি চুলো বন্ধ করতেন না।
একদিন আমি ওনাকে ১২ প্যাকেট ম্যাচ কিনে দেই, যাতে ওনি অপ্রয়োজনে চুলা জালিয়ে না রাখেন। সেদিন ওনি লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলেন এবং আমার ম্যাচগুলো ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন ওনি আর অপ্র্রয়োজনে চুলা জালিয়ে রাখবেন না।
আমাদের গলির মুখে একটি ওয়াসার ট্যাপ আছে। লাইফে যতবারই দেখেছি ট্যাপ টি খোলা, ততবারই বন্ধ করেছি। মহসিন স্কুলে পড়ার সময় টিফিন আওয়ারে এবং ক্লাস শেষে প্রায়ই ফ্যানের সুইচ বন্ধ করতাম অতিরিক্ত ফ্যান চললে ও বন্ধ করে দিতাম।
একই কাজ করতাম মহসিন কলেজে এবং প্রিমিয়ার উইনিভার্সিটিতে ও। প্রিমিয়ার উইনিভার্সিটির রুম গুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এক এক টা এসি ৩০০০ ওয়াট করে কনজিউম করে।
আমাদের ক্লাস শেষ হতো রাত নয় টায়। মাঝে মাঝে আটটায় শেষ হয়ে যেত।
তখন এসি গুলো অফ করার জন্য ক্লাস শেষে অফিস রুম থেকে পিয়ন
কে ডেকে নিয়ে আসতাম (এসির সুইচ উপরে বিধায় নাগাল পাওয়া যেত না, আর রিমোট থাকতো অফিস রুমে) । আমাদের ক্লাস শুরু হতো সন্ধ্যা সাতটায় তার আগে বিকাল চারটায় বি বি এ র ক্লাস শেষ হতো। অনেক সময় গ্রুপ স্টাডি করা জন্য সাড়ে চারটায় যেতে হতো। গিয়ে দেখতা অনেক রুমের এসি চলছে । দেখে খুব খারাপ লাগতো।
সাথে সাথেই আমি পিয়নকে রিকোয়েস্ট করে বন্ধ করার ব্যবস্থা করতাম।
এবার আসা যাক শিরোনাম নিয়ে
আমার মতে বাংলাদশে একটা মানচিত্র পেয়েছে মাত্র, প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা পায়নি। প্রতিদিন বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসার মাধ্যমে। এছাড়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী করদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীনফোন প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা আয় করছে। আর আছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, ইউনিলিবার বাংলাদেশ।
কোটি কোটি ডলার চলে যাচ্চে মুনাফা আকারে অন্য দেশে। এটাকে বলা যেতে পারে শোষণের নতুন টেকনিক। এর সবই সম্ভব হচ্ছে তথাকতিখ কিছু রাজনিতিক নেতাদের কারণে। এরা সংসদ সদস্য হয়ে আসে কিছু দেশের অথবা কোং দালালী করার জন্য।
চলবে......................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।