আমরা স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখি, কিন্তু শাসকশ্রেণীর লোভ আমাদের কখনো স্বাধীন হতে দেয়নি।
৫২'র ভাষা আন্দোলনের পর আমরা গর্ববোধ করতাম বাঙ্গালী জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে। এরপর যখন ৭১সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা স্বাধীনতা লাভে সক্ষম হই, তখন থেকে গর্বিত হই বাংলাদেশী পরিচয় দিয়ে। কিন্তু স্বাধীনতার পর আমরা সরকার ব্যবস্থা পেতে চেয়েছি, যার নাম গণতন্ত্র, সেই ব্যবস্থার সঠিক চর্চা অথবা সুফল কোনটাই আজো পাওয়া যায়নি। নিজেদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রতি বিষোদগার আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
তাই দেশ গড়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা না করে টেনে ধরাই আমাদের কাছে অধিক পছন্দনীয়। এসব ছেড়ে আসল কথায় আসি। আমাদের সরকার ব্যবস্থার প্রতিটি সদস্য(সাংসদ, মন্ত্রী, সচিব, সরকারী চাকর, আমলা) বেতনভোগী বলে তাঁরা প্রকৃত পেশাদারের পরিচয় দিয়েছেন বলে ধন্যবাদ জানাই। তাঁরা সর্বদা এবং সর্বত্র নিজের স্বার্থ খোঁজেন। নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে এবং আয়ের পরিমাণ বাড়াতে বহু অদূরদর্শী পরি কল্পনা করতে দেখেছি।
সম্প্রতি জানা গেছে প্রত্যেক উপজেলা চেয়ারম্যানদেরকে সরকার প্রায় ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি দেবে। যারা জনগণের সেবা করতে এলে এত দামী গাড়ি লাগে তাঁরা কেন জনপ্রতিনিধি হলেন? কিছুদিন পর তাঁরা যদি বলে গাড়ির জন্য গ্যারেজ লাগবে তখন সরকারের করণীয় কি হবে? সরকার যদি এই দাবী মেনে নেয় এর অর্থসংস্থান কিভাবে হবে? আমরা ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করি সেবা পাওয়ার জন্য তাঁদের সেবা করার জন্য নয়। যে চেয়ারম্যানদের থাকতে হবে সাংসদদের অধীনে, যাদের স্বাধীনতা নেই তাঁদের জন্য কেন এই আয়োজন?
আরও জানা গেছে রাজধানীর বিশ্বরোড এলাকায় প্রায় ৩শ' কোটি টাকা ব্যয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। দৈনিক ইত্তেফাকে কিছুদিন আগে দেখলাম প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় রেল ক্রসিংয়ে সিগনালের কারণে। এখন প্রশ্ন, ফ্লাইওভার নির্মাণ না করে কমলাপুর থেকে ষ্টেশন কেন টংগীতে সরিয়ে নেয়া হয়নি? টংগী থেকেই সকল ট্রেন ভাগাভাগি হয়ে বিভিন্ন স্থানে যায়।
তাই মূল ষ্টেশন টংগীতে সরিয়ে আনলে রাজধানীর আভ্যন্তরীণ সব রেলক্রসিং বিলুপ্ত হবে।
সরকারের এই পদক্ষেপ থেকে আমরা পেশাদারিত্বের শিক্ষা পাই। আপনি কোন ডাক্তারের সেবা নিলে তাকে প্রতিবার ফি দিতে হবে। কোন মেকানিক দিয়ে যন্ত্রপাতি সারালে তাকেও প্রতিবার ফি দিতে হবে। এমনকি মুচির কাছথেকে ছেড়া জুতা সারালে তাকেও প্রতিবার ফি দিতে হবে।
সরকারও যদি ভেবে থাকে এমনভাবে যতবার সমস্যা হবে ততবার বাজেট পাশ করে সমাধান করবে তবে বলার কিছু নেই। শুধু এতটুকুই বলব সমস্যার স্থায়ি সমাধান খুঁজুন, জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অর্থ অদূরদর্শী পরিকল্পনায় ব্যয় করবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।