আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রীলংকার ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসানঃ সংক্ষেপে ২৫ বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ

একজন ইউনুস খান বেঁচে থাকতে চান গণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং উদ্যেগ গ্রহণের মাঝে।

শ্রীলংকার দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী যুদ্ধের দৃশ্যত যবনিকা পড়লো রোববার। সরকারের ভাষায় সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানের মুখে "তিক্ত লড়াইয়ের অবসান হয়েছে' বলার মাধ্যমে কার্যত পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে তামিল টাইগাররা। দেশটির ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহের চুম্বক অংশ নিচে তুলে ধরা হল। ১৯৮৩- দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলম (এলটিটিই) উত্তরাঞ্চলে হামলা চালিয়ে ১৩ সেনাকে হত্যা করে।

রাজধানী কলম্বোয় শুরু হয় তামিলবিরোধী দাঙ্গা। মারা যায় শতশত মানুষ। এই ঘটনাকে টাইগাররা যুদ্ধ শুরু বলে অভিহিত করে। ১৯৮৭- টাইগারদের এক সময় অস্ত্রের যোগান দিলেও শান্তি স্থাপনে ১৯৮৭ সালে শ্রীলংকায় সেনা পাঠায় ভারত। কিন্তু অস্ত্র সমর্পণে অস্বীকৃতি জানায় টাইগাররা।

শুরু করে ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ। নিহত হয় এক হাজার ভারতীয় সেনা। ১৯৯০- ভারত সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। উত্তরাঞ্চলীয় জাফনা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় টাইগাররা। 'দ্বিতীয় ইলম যুদ্ধ' শুরু।

১৯৯১- সন্দেহভাজন এলটিটিই আত্মঘাতীর হামলায় নিহত হন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। দুই বছর পরে আরেকটি আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট রানাসিঙ্গে প্রেমাদাসা। দুটি হামলার জন্যই এলটিটিইকে দায়ী করা হয়। ১৯৯৫- বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হন প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা। কিন্তু এ বছরই নৌবাহিনীর জাহাজ ডুবিয়ে দিয়ে বিদ্রেহীরা শুরু করে 'তৃতীয় ইলম যুদ্ধ'।

সেনাবাহিনীর কাছে জাফনার নিয়ন্ত্রণ হারায় টাইগাররা। ১৯৯৫-২০০১- উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে চলতে থাকে যুদ্ধ। কলম্বোয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয় প্রায় একশ' জন। টাইগারদের হামলায় আহত হন প্রেসিডেন্ট কুমারাতুঙ্গা। ২০০২- নরওয়ের মধ্যস্থতায় সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর।

২০০৩- শান্তি আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসে টাইগাররা। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকে। ২০০৪-২০০৫- টাইগারদের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার কর্নেল করুনা আমান প্রায় ছয় হাজার যোদ্ধা নিয়ে এলটিটিই থেকে বেরিয়ে যান। সন্দেহভাজন টাইগারদের হামলায় নিহত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কট্টর এলটিটিই বিরোধী মাহিন্দা রাজাপাকশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

২০০৬- এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত তুমুল যুদ্ধ চলে। 'চতুর্থ ইলম যুদ্ধ' শুরুর আশঙ্কা তৈরি হয়। অক্টোবরে জেনেভায় নতুন করে আলোচনার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। ২০০৭- পূর্বাঞ্চলে টাইগারদের শক্ত ঘাঁটি দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। ২০০৮- জানুয়ারির প্রথম দিকেই যুদ্ধবিরতি অকার্যকর ঘোষণা করে সরকার এবং বড় ধরণের যুদ্ধাভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।

জানুয়ারি ২, ২০০৯- টাইগারদের ঘোষিত রাজধানী কিলোনাচ্চি দখল করে নেয় সেনারা। এপ্রিল ১৭- সরকার ঘোষিত দুই দিনের অস্ত্রবিরতি শেষ হওয়ার পর যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় বিদ্রোহীরা। তবে সরকার এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। এপ্রিল ২০- ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়া বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয় সরকার। যুদ্ধাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসে প্রায় দশ হাজার সাধারণ নাগরিক।

এক সপ্তাহের মধ্যে এই সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার। এপ্রিল ২৬- একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে এলটিটিই। সরকার টাইগারদের এই ঘোষণাকে 'হাস্যকর' অভিহিত করে জানায় তাদের অবশ্যই আত্মসমর্পণ করতে হবে। মে ১৬- ২৫ বছর আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সমগ্র উপকূলসীমার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সেনাবাহিনী। জর্ডান সফররত প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশে বলেন, এলটিটিই পরাজিত হয়েছে।

মে ১৭- বেসামরিক নাগরিকের বেশ ধরে নৌকা করে পালানোর সময় নিহত হয় ৭০ এর বেশি এলটিটিই যোদ্ধা। এছাড়া আরও অনেকে আত্মঘাতী হামলার মাধ্যমে প্রাণ বিসর্জন দেয়। যুদ্ধ এলাকার সকল বেসামরিক নাগরিককে মুক্ত করার ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী। এলটিটিই নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের ভাগ্যে কী ঘটেছে এই নিয়ে গুঞ্জন সর্বত্র। সূত্রঃ Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.