আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘাড়ের উপর থেকে অনুভূতিশূন্য!!

মুক্ত কর ভয়/ আপনা মাঝে শক্তি ধর/ নিজেরে কর জয়।

ওয়ারফেজ। এই এক নামেই সব কিছু বলে দেয়া হয়!! গতকাল, ট্রাডিশান মত আমরা 'লেভেল কম্প্লিশান' কর্লাম। পড়ি ৩-২ তে, এখন 'লেভেল কম্প্লিশান'!! তার চাইতে এইটার নাম দেই 'র‌্যাগ প্রিপারেশন'!! এই সপ্তাহে প্রচন্ড ব্যস্ততার কারণে এই দিকে কোন মনোযোগই নাই। সবাই মিলে কাজ করছে।

আমরা হাওয়া!! প্রথম থেকেই এই অনুষ্ঠানের মূল চাওয়া 'ওয়ারফেজ'। বুয়েটে এর আগে কখনো ওয়ারফেজ আসেনি। কাজেই, কনসার্টের শুরু থেকেই অডিটোরিয়াম পুরো ঠাসা!! অনুষ্ঠান শুরু হয়, আমাদের ব্যাচের পার্ফর্মারদের করা ছোট-ছোট পার্ফম্যান্স দিয়ে। এরপর, কনসার্ট। অংশ নেয় বুয়েটের দু'টি ব্যান্ড।

এছাড়াও ছিল আন্ডারগ্রাউন্ড দু'টি ব্যান্ড। সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল অনেক পুরনো ব্যান্ড coprofelia গান। এই ব্যান্ডটি অনেকদিন কোন কনসার্টে অংশ নেয়নি। প্রায় দুই বছর পর নতুন দল fusion factory নামে আত্মপ্রকাশ। ওয়ারফেজ আসে ৯.১০-এ।

শুরুতে কমল ভাই'র সে কি ভাব!! অনি ভাই, রজার ভাই বাজানো শুরু করেছে, পেছনে টিপু ভাই-ও আস্তে আস্তে ড্রামে বিট দিচ্ছেন। কিন্তু, কমল ভাই গিটার কাঁধে ঝুলিয়ে ঠায় দাঁড়ানো। যেন ঘুমে পড়ে যাবেন-যাবেন এমন অবস্থা!! একটু পর শুরু হয় তার কেরামতি!! গিটারের উপর আঙ্গুল যেন আর দেখা যায় না!! উড়তেছে শুধু!! আর, অনি ভাই-ও যেন প্রতিযোগিতা শুরু কর্লেন!! কে বেশিক্ষণ বাজাতে পারেন!! কমল ভাই থামলে, অনি ভাই, তারপর আবার কমল ভাই!! এভাবে চলতে থাকল। এরপর solo কর্লেন টিপু ভাই। ড্রামসের!! 'পথ চলা' এলবাম শোনার পর ওয়ারফেজের উপর মেজাজ চরম খারাপ।

পারলে তখনই ধরে মিজানরে চটকানা দিই!! কিন্তু, মিজান এসেই প্রথম যখন গান ধরল.. হে সমাজ তখন কোথায় কি!! সবাই মিলে গলা ফাটাই কোরাস!! প্রথম গানেই গলা ফাটাই ফেল্লাম। আর, গানের মাঝে গিটারের তালে তালে 'মাথা ঝোকানো' তো আছেই!! প্রথম গানেই মিজান আবার আমাদের গুরু!! এরপর হতাশা। আবার চিল্লানি। আবার টায়ার্ড!! এবারের গান নেই প্রযোজন ধূসর মানচিত্র তুমি মিজান আর কি গাইবে!! আমরা নিজেরা গেয়ে নিজেরাই শুনি না!! এত চিল্লানি, এত উচ্ছাস!! এবার বিরতি!! কনসার্টের বিরতি আর্কি!! মিজান হাওয়া!! শুরু হল, অনি ভাই আর কমল ভাই'র ভেলকিবাজি!! অনি বাজায়, কমল দেখে!! কমল বাজায়, অনি দেখে!! আর, দুইজনের দিকে তাকাই দেখি আমরা সব কয়টা পোলাপাইন!! বেজিস্ট রজার ভাই এতক্ষণ দর্শক!! ৭-১০ মিনিটের দুইজনের solo-র পর শুরু হয়, বেইজের কাজ!! আমরা পুরাই স্তম্ভিত!! এগুলান কি বাজায়!! এরপর, মিজান ফিরে আসে। শুরুতেই জীবনধারা এরপর, মেয়েদের উৎসর্গ করা গান.. মনে পড়ে।

একে একে সময়, আলো, বসে আছি.. সবগুলাতেই গলা মিলাইলাম। মাথা ঝোঁকালাম। লাফাইলাম!! আমরা ছিলাম একেবারে স্টেজের সামনে। এক মুহুর্তের জন্য নড়াচড়া নাই!! নড়লেই জায়গা দখল হয়ে যাবে!! পিঠের উপর দুইজন ঝুলে আছে, তাও দাঁড়াই দাঁড়াই দেখা!! এরপর, ওয়ারফেজের প্রথম অ্যালবামের প্রথম হিট গান.. একটি ছেলে। আমরাও তো ছেলে!! এ যেন আমাদেরই গান।

কনসার্ট শেষ হয় মহারাজ দিয়ে। এসময় আর নিজেদের ধরে রাখা গেল না। উঠে গেলাম স্টেজে!! ছেলে-পিলেরা তখন পুরা উন্মাদ!! উন্মাতাল এক অনুভূতি। একাকার হয়ে গেলাম সবাই। হইচই, গানের সাথে একাত্ম!! কনসার্ট শেষ হওয়ার পরও বুঝতে পারলাম না, শেষ হয়ে গেল!! মাথায় কিছু নেই।

পুরো ভোঁ-ভোঁ!! ঘাড়ের উপর কিছু নেই!! মনে হচ্ছিল যেন কিছু একটা বসাই রাখছে উপ্রে!! আর কোন অনুভুতি নাই!! কথা শেষ করি শামস ভাই'র কথা দিয়ে। উনাকে একবার কে যেন জিজ্ঞেস করেছিল.. - আপনার দেখা সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটা?? : আমি তো বুয়েটে পড়েছি.. তাই, আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর জায়গা বুয়েট। - কেন?? : এমনি!! আমার ইচ্ছা!! তবে, কাল কনসার্ট করার পর তার কাছে অন্তত একটা যুক্তি হয়েছে.. বুয়েট সবচেয়ে সুন্দর জায়গা.. কারণ, সেখানে 'ব্যাচ '০৫' আছে। থ্রি চিয়ার্স ফর 'ঋদ্ধ'। থ্রি চিয়ার্স ফর 'ওয়ারফেজ'।

অনুষ্ঠানের বিস্তারিত নিয়ে লিখতে পার্লাম না। কারণ, সবচেয়ে মজার অংশ, রঙ মারামারিতেই অংশ নিতে পারি নাই। সবাই যখন ১.৩০টায় রং উৎসবে মাতোয়ারা, তখনও আমি টেবিলে নাক-মুখ গুঁজে ২.৩০ টায় জমা দেয়ার জন্য রিপোর্ট লিখতে ব্যস্ত!! তবুও.. থ্রি চিয়ার্স ফর 'ঋদ্ধ' [আপাতত, ছবি নাই। একটু পরে ছবি পেলে আপডেট করা হবে!! আর, e-snips-এ গান আপলোড কর্তে পারছি না। তাই, বাকি গানগুলোর লিংক দিতে পার্লাম না।

]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।