আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাসা ভাড়ার ন্যুনতম পরিমাণ নির্ধারণ করা প্রয়োজন



ভোক্তা অধিকার আইন পাশ হয়েছে, সুতরাং ভোক্তা হিসেবে আমরা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে এন কি খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে যা কিনছি, সেটার গুণ , মান ও সেবার পরিমাণ কম হলে আদালতে অভিযোগ করতে পারি, নির্দিষ্ট সেবাপ্রাপ্তি এবং গুণ অক্ষুন্ন রাখবার প্রবনতা যদিও এখনও শুরু হয় নি বাংলাদেশে, তবে আশা করা যায় অচিরেই এই আইন পালিত হওয়া শুরু হলে আমরা বাংলাদেশের নাগরিকেরা ভোক্তা হিসেবে বাড়তি কিছু সুবিধা পাবো। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা জেলা শহরেই ভাড়া বাসায় বসবাস করে মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশী মানুষ। বেতনের প্রায় অর্ধেক অংশই নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতেই ব্যয় হয় প্রতিটা ভাড়াটের। এই মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজবার সময় বিবেচনায় থাকে অনেকগুলো বিষয়, পরিবেশ, পরিসর, এবং সর্বোপরি বাসা ভাড়া। জেলা শহরগুলোতে বাসা ভাড়ার একটা ন্যুনতম পরিমাণ প্রতি বর্গফুট হিসেবে নির্ধারিত আছে।

এমন কি সরকার নির্ধারিত এই প্রতি বর্গফুট ভাড়া সরকার যেকোনো বাসা ভাড়া নেওয়ার সময়ই নির্ধারণ করে নেয়। ঢাকা শহরের অর্ধের বেশী জনগন ভাসমান। তাদের নিজস্ব বাসা নেই, ভাড়া বাসায় থাকে কিন্তু ভাড়া বাসার কোনো নির্ধারিত পরিমাণ নেই। সিটি কর্পোরেশন এবং রাজউক নিজ উদ্যোগে ঢাকা শহরের প্রতিটা বাসার ভাড়া নির্ধারণ করে দিতে পারে। সেটা প্রতি বর্গফুট ৫ থেকে শুরু করে এলাকা ভেদে প্রতি বর্গফুট ২৫ টাকা হোক ক্ষতি নেই, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট এলাকায় প্রতিটা বাসার ভাড়া নির্ধারিত হওয়া উচিত তার পরিসর ও সেবা অনুযায়ী।

ঢাকা শহরের প্রতিটা বাসা মানে গত ২০ বছরে যেসব বাসা নির্মিত হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই খসরা প্লান আছে রাজউকে, সেখানে এক একটা বাসার পরিসর বর্গফুটে লিপিবদ্ধ আছে। একজন সরকারী চাকুরে ঢাকা শহরে তার মূল বেতনের ৪০ শতাংশ দিয়ে ন্যুনতম ৮০০ বর্গফুটের বাসা পেয়ে থাকেন। আজিমপুরের সরকারী কলোনীর এক একটা বাসার ভাড়া সরকার নির্ধারিত বেতন অনুসারে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। এটাই সরকারের নির্ধারিত বাসা ভাড়া হওয়া উচিত। একটি ১০০০ বর্গফুটের বাসার ভাড়া যদি ৫০০০ টাকা হয় মাসিক, তবে সে এলাকায় অন্তত ৭ টাকা বর্গফুট হারে বাসা ভাড়া নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

প্রতিটা এলাকায় এক একটি বাণিজ্যিক ফ্লাটের মূল্য নির্ধারিত হচ্ছে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বাদ দিয়েও এলাকার জমির দামের উপরে। ঢাকা শহরে এখন ২০০০ থেকে ৮০০০ টাকা প্রতি বর্গফুট হিসেবে এপার্টমেন্ট বিক্রী হচ্ছে। এইসব এপার্টমেন্টের সব ক্রেতাই যে নিজের আবাস হিসেবে এসব ব্যবহার করছেন এমন না। তবে তাদের নাম নিবন্ধিত আছে সরকারের তালিকায়। সরকার চাইলেই একটা ন্যুনতম ভাড়ার মান এলাকা ভেদে নির্ধারণ করে যেকোনো বাসার মালিকয়ের মাসিক কিংবা বার্ষিক উপার্জন এবং এই উপার্জনের উপরে তার প্রাপ্য করের পরিমাণও নির্ধারণ করতে পারেন।

এখনও এমন কোনো নাগরিক সংগঠন গড়ে উঠে নি ঢাকায়, যারা প্রতি বর্গফুটের জন্য একটা ন্যুনতম ভাড়ার মান নির্ধারণ করে সরকার কিংবা সিটি কর্পোরেশনের কাছে কোনো প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। যাচাই বাছাই করে, নাগরিক সুবিধার পরিমাণ বিবেচনা করে প্রতি বর্গফুট ভাড়ার পরিমাণ নির্ধারণ করে ঢাকাকে সবার বাসযোগ্য একটা রাজধানীতে পরিণত করবার সময় এসেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।