আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বেশ্যা হওয়ার নেপথ্যে-৩

কেউ কেউ একা

অনেক কিছুই বলা যায় না। বলতে নেই। বেঁচে থাকতে হলে ওগুলো মেনে নিতে হয়। যেমন মেনে নিতে বাস্তবতাকে। বাস্তবতা যত কঠিনই হোক না কেন তার বিরোধীতা করতে গেলে নিজের ভেতরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাবে এবং ক্রমশ ক্ষয় হতে শুরু করবে ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের মত।

যা ঘটছে, মনে মনে প্রস্তুতি নিতে হবে- ওগুলো ঘটার কথা ছিল, ঘটবে। আমিও ঘটনাগুলো স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবার চেষ্টা করছি। কষ্ট হয় না, তা নয়। তবুও আমাকে মেনে নিতে হবে। সমাজ ব্যবস্থাটা ইদানিং এমনি হয়ে গেছে।

অনেকবার ভেবেছি, এর প্রতিবাদ দরকার। এক থেকেই শুরু হয় গোনা। আমি থেকেই শুরু হোক প্রতিবাদ। পরক্ষণেই দেখেছি মেধার বেশ্যাবৃত্তি কি হারে হচ্ছে আমাদের সমাজে। আমি একজন তুচ্ছ লেখক (লেখক হবার চেষ্টা করছি)।

বড় বড় পদকপ্রাপ্তরা আজ দেখছি আমার মত মেধার বেশ্যাবৃত্তি করছে। আমার যেমন কষ্ট হয়, তাদের হয় না? হয়। কিন্তু কষ্টের চেয়ে মনে হয় পেটের খিদেটাই বড়। আমি আমার কথাগুলো বলে তাদের কাছে কোনদিন জানতে চাইনি কষ্টের স্বরূপ। আগের মত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে এখন আর লিখি না।

লিখতে ইচ্ছে করে না। কেমন যেন মিডিয়ার প্রতি একটা ঘৃণা জন্মে গেছে। আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি বিভিন্ন মিডিয়াকে। বড় বড় পদে অধিষ্ঠিত এক একজন কর্তা ব্যক্তি সাধু সেজে বসে থাকলেও দুটো টাকার জন্য তারা কতই না কাঙ্গাল! বিশেষ দিন উপলক্ষে লেখা প্রকাশের জন্য কোন কোন লেখক লেখা প্রকাশে উদগ্রীব থাকে আবার ওই লেখা প্রকাশের জন্য কিছু কর্মকর্তারাও চাতকের মত চেয়ে থাকে। একটা লেখা মানেই ৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা।

আবার লেখকের লেখা প্রকাশ হলে পত্রিকা অফিস থেকে যে সন্মানীটা পান তা অনেক ক্ষেত্রে লেখক পর্যন্ত পৌঁছায় না। আবার ভাল মানুষও দেখেছি পাশাপাশি। আসলে ভাল না থাকলে কোন কার্যক্রমই সামনের দিকে এগিয়ে যায় না। আমি তাদের সন্মান করি। অনেক বড় লেখককে দেখেছি কোন চ্যানেলে এক ঝলক ক্যামেরায় মুখ দেখানোর জন্য কত ছোট হচ্ছে।

বিনয়ের সাথে কথা বলছে। আবার এক ধরনের লেখক গুঁজে দিচ্ছে চ্যানেলে মুখ দেবার উপহার। এসব দেখে আমি তাদের সাথে মিলাতে পারি না নিজেকে। (যদিও আমি নিজেও বিকিয়ে দিচ্ছি অন্যভাবে)। আমার খুব খারাপ লাগে।

প্রচারই প্রসার এ কথা জানি। কিন্তু নিজের গাঁটের টাকা দিয়ে বইমেলাতে বই ছাপিয়ে তার বিজ্ঞাপনের খরচ চালাতে আমি নারাজ। আমার বই যদি চলে, চলবে, না চললে নেই। প্রতিদিন চাররঙা কতই না আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখা যায় বইমেলা গেলে। এই বইয়ের অধিকাংশ বিজ্ঞাপনই যায় লেখকের নিজের টাকায়।

বিজ্ঞাপন দিতে আমি না করছি না। কিন্তু লেখক কেন তার গাঁটের টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দেবে প্রিন্ট/ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে? এই যে টাকা দিয়ে বড় হওয়ার প্রবণতা, এটা সত্যিকারের লেখক হওয়ার পরিমাপ? (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।