আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুন্দরবনের নিরাপত্তা বড়ই অসুন্দর

মিটুল

পৃথিবীর সর্ববৃহত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট হচ্ছে আমাদের সুন্দরবন। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য এর তালিকায় স্থান করানোর জন্য সারা বিশ্ব থেকে ভোট পড়ছে অগণিত। সন্দরবনকে নিয়ে গর্বং করার তাই স্বাভাবিকভাবে অনেকগুলো কারণ থাকতেই পারে। কিন্তু সারাবিশ্বের এই অন্যতম সম্পদটিকে আমরা ঠিকভাবে যত্ন নিতে পারেনি কখনো। সারা বিশ্বের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষন করার মতো কোন দৃষ্টান্ত আমাদের কোন সরকার-ই দেখাতে পারেনি।

তাই আমাদের অবহেলিত সুন্দরবণের সৌন্দর্যের থেকে এর নেতিবাচক দিকগুলি বেশী প্রচার পায়। জলদস্যুর ঘটনা প্রায় সংবাদপত্রের মাধ্যমে পড়তে হয়। প্রকৃত ঘটনার মধ্যে যারা পড়েছেন তারা জানেন ঘটনা কত ভয়াবহ। আমাদের সুন্দরবনের এই জলদস্যুদের আজ পর্যন্ত কেউই শায়েস্তা করতে পারলো না? সুন্দরবনকে ঘিরে যাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হয়, তারা সবাইতো এদের হাতে জিম্মি। বলা যায় জলদস্যুদের অনুগ্রহে ওরা বেঁচে থাকে।

যারা মাছধরতে যায়, কাঠ কাঠতে যায় কিংবা মধু সংগ্রহে, তারা কত টাকায় বা আয় করে? সংসার চালনার মত রোজগার হলেই ক্ষ্যান্ত দেই সেদিন। তাওযে প্রতিদিন ভাগ্য খুব প্রসন্ন হয় সবার তা তো না। এই স্বল্প রুজির মানুষদেরও সরকার নিরাপত্তা দিতে পারে না, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিবে কিভাবে? ১৩ এপ্রিল ২০০৯ তারিখের মানব জমিনের রিপোর্টে ৮ জন জেলেকে জলদস্যুরা অপহরন করেছে এবং ৪ লক্ষ্ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছে যা ১০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পৌঁছে না দিলে জেলেদেরকে হত্যা করা হবে। একজন জেলেকে ছেড়ে দিয়ে এই দাবী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে অন্যসকলের বাড়ীর লোকের কাছে।

ফিরে আসা জেলে আনিসুর জানায়, সে সহ ১০-১৫ জন জেলে সুন্দরবনের ফটিকের খালে মাছ ধরছিল। বুধবার (০৮/০৪/০৯) আনুমানিক ৮-১০ জন জলদস্যু তাদেরকে অপহরন করে নিয়ে যায়। পরে তাকে ছেড়ে দিয়ে ৮ জেলের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তারা জানায়, ১০ দিনের মধ্যে মুক্তিপণের টাকা বনের কালিরচরে পৌঁছে না দিলে অপহৃত জেলেদের হত্যা করা হবে। স্থানীয় থানার ওসি বলছেন তিনি ঘটানাটি শুনেছেন।

ওসি শুনেছেন, ফরেস্ট অফিসার শুনেছেন, কোস্ট গার্ডের সদস্যারাও নিশ্চয় শুনেছেন। আমি শুনেছি, মানব জমিন সংবাদপত্রের পাঠকরাও জেনেছেন। আপনারাও শুনলেন এবং জানলেন কিন্তু কেউ কিছু করতে পারলাম না। আমাদের পারার প্রশ্ন ওঠেনা। কিন্তু যাদের দায়িত্ব ছিল কিছু করার যারা মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সরকারের রাজস্ব থেকে বেতন নিচ্ছে, চাকুরী শেষে মোটা অংকের পেনশান নিবে তারা কি করছে? উচিত ছিল কালিরচরে ৪ লাখ টাকা পৌছানোর নামে একটা অপারেশন চালানো।

কিন্তু না এমনটি কখনো হয়নি আর হবেও না কখনো এমনটি যেন চিরচেনা বাংলাদেশ। এভাবে একের পর অপহরনের ঘটনা ঘটবে আর দায়িত্বরত সব অফিসাররা শুনু ঘটনাগুলো সাধারণ মানুষের কাতারে দাড়িয়ে শুনু থাকবেন। কে জানে এই সকল দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসারদের ভাগ দিয়েই বোধ হয় অপহরণকারীরা অপহরণ করেন ১০০% নিরাপত্তার বেষ্টনীতে আবদ্ধ হয়ে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।