আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অছাত্র আইবুড়োরা ছাত্রলীগ নেতা!!!



জাহাঙ্গীর আলম আকাশ, রাজশাহী: রাজশাহী জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কারও ছাত্রত্ব নেই। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি নিয়ে বছরের পর বছর চলছে ছাত্রলীগের এই তিনটি শাখা। কমিটির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। কেউ প্রবেশ করেছেন সংসার কিংবা চাকরি জীবনে। ছাত্রলীগের এই তিন কমিটির বাহ্যত কোন কার্যক্রম নেই।

নেতাদের ছাত্রত্ব নেই একথা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারাও স্বীকার করেন। ফলে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে চরম স্থবিরতা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি গঠিত হয় ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই। এই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন রাজশাহী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার আস্থাভাজন আবদুল মোমিন ও জেডু সরকার। এক বছর মেয়াদী কমিটি ১০১ সদস্যেও হবার কথা থাকলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপক দ্ব›দ্ব-বিরোধ ও সংকট দেখা দিলে কমিটি বর্ধিত কওে ১৩০ সদস্যবিশিষ্ট করা হয়।

গূত্র মতে, ছাত্রলীগ রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি আবদুল মোমিন ১৯৯৩ সালে এসএসসি পাশ করেন। তিনি ২০০৩ সালে তার পড়ালেখা শেষ করেন। কিন্তু তারপরও ২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মোমিনকেই ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচন করা হয়। একই অবস্থা সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকারেরও। জেডু সরকার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হলেও তিনি পারিবারিক ব্যবসা দেশাশোনা করে থাকেন।

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগে। একই অবস্থা কমিটির অন্যান্য নেতাদেরও। সূত্র জানায়, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে। কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে জি এম হীরা বাচ্চু ও কামরুল হাসান সুজন। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজনের এসএসসি ব্যাচ হলো ১৯৯৩।

তিনি রাজশাহী কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এখন তার ছাত্রত্ব নেই। তিনি বিয়েও করেছেন। বর্তমানে চাকরির সন্ধান করছেন তিনি। তবে কামরুল হাসান সুজন তার বিয়ের কথা স্বীকার করলেও ছাত্রত্ব নেই একথা মানতে নারাজ।

তার দাবি তিনি ঢাকায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করছেন এখন। কামরুল হাসান সুজন বলেন, জরুরি অবস্থার কারণে আমরা সম্মেলন করতে পারিনি। এখন আমরা যেকোন সময়ে সম্মেলন কওে নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। জেলা শাখা ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি জি এম হীরা বাচ্চু গত উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন পুঠিয়া উপজেলা থেকে। জনাব বাচ্চু ছাত্রলীগের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলেন, আমরা (ছাত্রলীগ) বিগত ২৯ ডিসেম্বরের মহাবিজয়ের অংশীদার।

সূত্র আরও জানায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। এই কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন ও সাধারণ সম্পাদক আয়েনউদ্দিন কারোররই ছাত্রত্ব নেই। এই দুই নেতার এসএসসি সাল ১৯৯২। সভাপতি মুন বলেন, আমার কমিটির ৪০ ভাগ নেতার কোন ছাত্রত্ব নেই। আপনার ছাত্রত্ব আছে কি? এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি (মুন) এবং সাধারণ সম্পাদক উভয়ে এমফিল করছি।

তবে সাধারণ সম্পাদক আয়েন জানান, সভাপতি মুন এমফিলের জন্য আবেদন করেছেন, কিন্তু এখনও ভর্তি হননি। অবশ্য অন্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রলীগ রাবি শাখার সভাপতি মুন ও সাধারণ সম্পাদক আয়েন ঢাকায় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন। তারা এখন (১৯ এপ্রিল) ঢাকায় আছেন। চাকরি ও ঢাকায় থাকা প্রসঙ্গে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়েন বলেন, আমি কালকে ঢাকায় এসেছি। চাকুরি করছি।

এটা ঠিক নয়। সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুনও চাকুরি করার কথা অস্বীকার করেন। তবে এখন ঢাকায় আছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। অন্যদিকে ছাত্রলীগ রাজশাহী কলেজ শাখা বছরের পর বছর ধরে আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলছে। একজন আহবায়ক ও ৫ জন যুগ্ম আহবায়কের মধ্যেকেজন যুগ্ম আহবায়ক বাদে অন্য ৫ জনেরই এখন ছাত্রত্ব নেই।

# http://www.humanrightstoday.info

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।