নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
বামপন্থীরা কই? আছে হয়তো। কিন্তু আপাতত শাসনটা যেহেতু আওয়ামীলিগের, এবং যেহেতু শ্রেনীব্যবধান বিলোপ হয়ে সাম্যবাদের জোয়ার বইছে, এবং যেহেতু পরিমানমত হালুয়া রুটি পাওয়া যাচ্ছে, সেহেতু সমাজতন্ত্রের বিপ্লব আপাতত: জিরোতে পারে! পেটি-বুর্জোয়াদের ধাওয়া করতে করতে জনযোদ্ধারা ক্লান্ত! ঘোরতর পুঁজিবাদী পাউরুটি, জেলী চিবোতে চিবোতে, ব্হুজাতিক টয়োটা বা নিশান হাঁকিয়ে, বাচ্চাকে এংলো-ইন্ডিয়ান পাঠশালায় ঠেলে, মধ্যাহ্নে মার্কিনী স্যান্ডউইচ ও কোক চালান করতে আপাতত: বাম পুরোহিতদের লজ্জা লাগছেনা। জীবনভর এন্তার বক্তৃতা দিয়ে যেখানে জামানতটাই বাচানো যায়নি, সেখানে দুখানা এমপিত্ব, একখানা মন্ত্রীত্ব ! দুনিয়ার মজদুর-আমেরিকা চল!
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আপনারা কি জানেন৩৮ বছর বয়সি এই বাংলাদেশটার পশ্চাৎদেশে সবচেয়ে বড় বাঁশটি কে দিয়েছে? যার আঘাতে অনিবার্য রক্তক্ষরন হচ্ছে এখনো। আপনার আমার পকেট থেকে দেয়া ট্যাক্সের টাকাটা পানিতে যাচ্ছে। হ্যাঁ এ অপকর্মটি করেছে বামরা।
বিশ্বাসপ্রবন, উদারমনা শেখমুজিবকে ফুঁসলিয়ে লাভজনক স্টিলমিল, পাটকল, টেক্সটাইল গুলোকে ঢালাও সরকারী করে পথে বসিয়েছে জাতীয় অর্থনীতি। শেষতক এগুলো বন্ধ, হাজারো শ্রমিক বেকার, কম্পাউন্ডে চড়ছে গরু-ছাগল। বেসরকারীকরনের আরেকদফা লুটপাট এখন।
আপনারা কি জানেন, দেশটার পশ্চাৎদেশে ২য় বৃহত্তম বাশঁটি কে দিয়েছে? বামরা। দক্ষিন-পশ্চিমান্চলে তথাকতিত সর্বহারা নামক বস্তুটির অত্যাচারে সেখানকার মানুষ কতটা ভয়াবহতা কাটিয়েছে তা প্রকৃত ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবেনা।
আমার বন্ধুর চার ভাইকে একসাথে বাড়ির উঠানে ব্রাশফায়ার করেছে লাল্টু বাহিনী চাহিদামত চাদাঁ না পেয়ে। শ্রেনীশত্রু খতমের শ্লোগান দিতে দিতে তারা চলে যায়!
এদেশে কতটি বামদল আছে তা খোদ বদরুদ্দিন উমরও বলতে পারেননি। একুশে টিভি একদিন জিজ্ঞেস করেছিল। এমনকি ঘোরতর আওয়ামীলিগ তথা মহাজোটের মহা একলোককে জিজ্ঞেস করেছিলেম উক্ত জোটের সবগুলি দলের নাম বলতে। বেচারা!
তবে এটুকু বলা যায়, পিকিং, মস্কো, হাভানা, কলকাতা, কুস্টিয়া, পিয়ং ইয়ং সব কেবলা মিলেও কোন নির্বাচনে ১% বাম ভোট হয়নি।
তবু হতোদ্যম নয় তারা। ব্র্যাভো! মঞ্চ ঠেঁসাঠেঁসি করে ২০/২৫ জন অনলবর্ষি বক্তা মাইকওয়ালা, বাদামওয়ালাসমেত সাড়ে ৫জন শ্রোতার বিশাল সমাবেশে(!) ঢাকার মুক্তাঙ্গন বা চট্টলার শহীদ মিনারে তুবড়ি ছোটান। ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রধারা.....র দেয়ালিকা, লিফলেট, পোস্টারের হাকঁডাকেঁ প্রথম বর্ষের সদ্যজাত ছাত্রটির বিস্ময়ে বিস্মিত হয় ক্যাম্পাস। তারপর দেখাযায় আসল দৃশ্য। সুরসুর করে পেটিবুর্জোয়া লীগের বগলে ঢুকে পড়ে কাস্তে গুলো।
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা 'ভূলে' দুচারটা বামকে হত্যা করলেও গগনবিদারী আওয়াজ উঠে "শিবিরের খুনীরা, হুশিয়ার সাবধান"! এভাবে শিবিরের প্রকৃত খুন গুলোও ঢাকা পড়ে সন্দেহের চাদরে।
পুরোপুরি বাতিল হওয়া ফালতু কিছু তন্ত্র-মন্ত্র, দফায় দফায় জনগন কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত নানাবিদ ফেরকার সমাজতন্ত্র এদেশের সমাজে তেমন কোন সামাজিক কল্যান বয়ে আনেনি। এনেছে কিছু অর্থনৈতিক বিপর্যয়, সামাজিক সন্ত্রাস, জন্ম দিয়েছে অপ্রয়োজনীয় ইসলাম বিদ্বেষের।
তবে ব্যক্তিগত ভাবে বামাদর্শি লোকগুলো সৎ, পরিশ্রমী, দলের প্রতি ত্যাগী ও নিস্ঠাবান। খেয়ে না খেয়ে কাজ করেন।
হয়তো তারা সপ্ন দেখেন সেই প্রেমিকের মত-
৯ম শ্রেনীর সহপাঠিনি প্রেমিকা সাড়া দেয়নি। ভাবল এসএসসির গন্ডি পেরুক। কলেজের জোড় প্রচেস্টাও বিফল। ভাবল এইচএসসির পর তো সে ভাল সাবালক হবে। তখন হয়ত..।
দিন গড়িয়ে অনার্স প্রথম বর্ষ। না কোন সাড়া নেই। তবু নাছোড়বান্দা প্রেমিক। ২য় বর্ষে হঠাৎ জনৈক ব্যবসায়ীর সাথে বিয়ে। আহ্।
তবুও হাল ছাড়ল না। 'এই বিয়ে টিকবেনা!' তখন আমি!! এই করে ২ বাচ্চার জননী প্রেয়সী। তবু প্রেমিক মন পিছু ছাড়েনা। এই ব্যাটা বুড়া আলু ব্যাপারী নিশ্চয়ই মরবে একদিন। তখন আমি! হয়তো সেদিন বামদের সাথে বাংলার মানুষের মিলন হইবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।