একট হাসি, অলস দুপুর, এক ফোঁটায় জলের পুকুর।
একটা কথা আমি ওয়ান-ওয়ানের সময় প্রথম ৫-২ এর ফাইনাল প্রজেক্টের কামলা খাটা থেকে বলে আসছি... ফাইনাল ইয়ার না করলে কি হয়? চার বছরে ইঞ্জিনিয়ার হওয়া গেলে আর্কিটেক্ট কেন হওয়া যাবে না? একটা সার্টিফিকেট দিলেই তো হয়ে যায়। ফিফথ ইয়ার শুনলেই কেমন ভয় ভয় লাগতো, এখনও লাগে। ক্লাসের দু'সপ্তাহ পরেও।
প্রথম যেদিন ক্লাসে গেলাম, দোতলার বারান্দা ধরে হেঁটে যেতেই জানি কেমন লাগছিলো... আজিব এক অনুভূতি।
স্টুডিওতে দেখি রাজিব একা ঘুরে বেরাচ্ছে, কেমন যেন অবাস্তব লাগছিলো, এইটা আমাদের স্টুডিও???
এই না সেদিন ঢুকলাম বুয়েটে... নিচে দাঁড়ানো ০৮ এর জায়গায় আমরা দাঁড়িয়েছিলাম, আমাদের র্যাগ না এই খানে দাঁড়িয়ে কাশফিয়া আপুরা দেখেছিলো, আমি যেখানে দাঁড়ানো।
আজিব এক অনুভূতি। সময় যে কোন দিক দিয়ে দৌড়ে পালিয়েছে খেয়াল করতে পারিনি। এখন আমি সবচে সিনিয়র।
ছোটবেলার কথা মনে হলো, স্কুলে থাকতে যখন টেনে সিনিয়র ক্লাসে উঠলাম, বড় বড় ভাবে চলতাম, মজা লাগতো।
আর এখন নিজেকে সিনিয়র মনেঢ়তেই কেমন যেন বুড়ো বুড়ো লাগা শুরু হলো - সাদা চুলের লাঠি হাতে কুঁজো বুড়ি।
মাথা ঝাঁকিয়ে আমি কুঁজো বুড়ির চেহারাটা তাড়িয়ে দেই। এখন মন খারাপ করার মানে হয় না। খানিক পরেই সবাই আসা শুরু করলো। পাঁচ মাস পরে ক্লাস, তাই একদমই আজিব আরেকটা ঘটনা ঘটলো।
প্রথম ক্লাসে আমাদের সবাই হাজির। এমন সাধারণত হয় না।
যাহোক,সব সুন্দর সময়েরই শেষ হতে হয়... যথারীতি ডিজাইন ক্লাস, এবং নতুন প্রজেক্ট । কিন্তু প্রেজেন্টেশন পরের সপ্তাহে না, সেই সপ্তাহেরই বুধবার। এ হলো বড় হওয়ার ঝামেলা নং-০১।
কিন্তু তার থেকেও বড় দুঃসংবাদ, প্রথম প্রিলিমিনারি পরে শনিবার - বড় হওয়ার ঝামেলা নং-০২ । মরার উপরে খাঁড়ার ঘা যাকে বলে।
কাজ শুরু করতেই বুঝলাম, তখনো শুধু ট্রেলার ছিলো। কি পরিমাণ যে দৌড়ের উপরে থাকতে হবে বুঝলাম যখন সামনে আসলো বড় হওয়ার ঝামেলা নং-০৩। চার জন টীচারের চারজনই প্রফেসর।
কি মুশকিল। এতো সিনিয়র মানুষজনের সাথে কমুনিমেট করাই তো সমস্যা। তার উপরে এরা হইলো ত্যাড়া রকমের রিজিড। নতুন কিছু বুঝবেও না, করতেও দিবে না। চারকোনা বাক্স বানাতে হবে, কংক্রিটের কলাম-বিম দিয়ে।
প্রিলিমিনারি শুরু হওয়ার পরে বুঝলাম, কাহিনী সবে শুরু ... দর্শন পেলাম বড় হওয়ার ঝামেলা নং-০৪ এর। যতখানি ই কাজ করি না কেন, তাদের এক কথা কাজ এত কম কেন। বুঝলাম না, প্রথম দিনেই কমপ্লিট কাজ চাই?
আপাতত এই হলো আমাদের লেভেল ৫ টার্ম ১ নামক ম্যুভির উপক্রমণিকা।
এই যখন শুরু, কাহিনীর ক্ল্যাইম্যাক্স জানার যাও বা একটু -আধটু কৌতুহল / সাধ / আহলাদ / ইচ্ছা / আকাংক্ষা যাই ছিলো, তাও উবে গেছে।
এখন শুধু একটাই কথা মনে হয়... ফাইনাল ইয়ার না করলে কি হয়? চার বছরে ইঞ্জিনিয়ার হওয়া গেলে আর্কিটেক্ট কেন হওয়া যাবে না? একটা সার্টিফিকেট দিলেই তো হয়ে যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।