ইমরোজ
বাণিজ্যমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রলাপ শুনে শুনে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম ঠিক তখনই হঠাৎ করে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের কথাও শুনে ফেললাম। ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ খুব বুঝে শুনে কথা বলেন। বিডিআরের ঘটনা নিয়ে তার মন্তব্য ছিল অনেকটা এরকম, "কাউকে শনাক্ত করার আগে, কাউকে দোষারপ করা উচিৎ নয়"।
তিনি হঠাৎ করেই বললেন, কাওমি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। এই বক্তব্য এই সরকারের আমলে আশা বক্তব্যগুলোর মধ্যে অনেক ন্যায়সঙ্গত বলেই আমি মনে করি।
কাওমি মাদ্রাসা যদি দেশে থাকেই, তার স্বীকৃতি তো অবশ্যই সরকারকে দিতে হবে। আর দেশের তাবত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাহলে কাওমি মাদ্রাসা কেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে?
বাংলাদেশের যত স্কুল এবং কলেজ আছে, সমস্তই সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। সেখানে কী পড়ানো হবে, কাকে কী করতে দেওয়া হবে বা হবে না এইসব বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট নিতী নির্ধারণ করা আছে। সেটার আওতায় কাওমি মাদ্রাসাগুলো কেন পড়বে না?
আমি একান্ত ভাবে চাই সরকার মাদ্রাসাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করুক।
আর সাম্প্রতিক মাদ্রাসায় বোমা বানানোর সারঞ্জাম, পিস্তল, রাইফেলসহ বিপুল গোলাবারুদ বেরিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, মাদ্রাসার ভেতরে জঙ্গী ট্রেনিং ক্যাম্পের সন্ধানও পাওয়া গেছে। যেটা আমাদের দেশের মানুষের জন্য আসলেই ভীতিকর।
এইধরণের প্রতিষ্ঠান সরকারের নিয়ন্ত্রণে একশোবার আসা উচিৎ। কারণ আমরা চাইনা বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের মত হয়ে যাক।
পাকিস্তান সরকার এসব ব্যাপার প্রথমদিকে গায়েই লাগায় নাই। এখন প্রতিদিন ওদের আত্মঘাতি বোমা খেতে হচ্ছে।
তো আমাদের অতিশিক্ষিত (!) মোল্লা-গুষ্টির আচরণে আমি অবাক হয়েছি। একজন বলেছেন, এই সরকার আসায় নাকি দেশে ইসলাম ধর্ম রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আমার প্রশ্ন হলো, এই সরকার এমন কী কাজটা করচছে যে ইসলাম ধর্ম রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে? সরকার কী নামাজ পড়া বন্ধ করে দিয়েছে? সরকার কী মসজীদে যাওয়ার উপর বাঁধা দিচ্ছে? তাহলে সমস্যাটা কোথায়? ইসলাম কী করে বিপন্ন হলো?
কাওমি মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে ইসলাম বিপন্ন হয় না? আর সরকার সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলেই ইসলাম বিপন্ন হওয়া শুরু হচ্ছে কেমন করে? ব্যাপারটা আমার বধোগম্য নয়।
হুজুর, মোল্লারা চিরদিনই কম শিক্ষিত। তাদের কাছে ধর্ম হলো মানুষকে খাচায় বন্দি করে রাখা। কিন্তু ধর্মের অর্থ কিন্তু তা নয়। ধর্ম মানুষকে যাবতীয় সব বন্দিত্ব থেকে মুক্ত করার জন্যই সৃষ্ট। ইসলামী কোন কাজই এই দেশে করার কোন দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।
আমাদের দেশের বেশির ভাগ লোকই মুসলমান। এবং সরকারও মুসলমান সরকার। সুতরাং মুসলমানদের অধিকার রক্ষা করার জন্য মুসলিমদের আলাদা করে সংগঠন করার তো কোন দরকার নেই। আর এদের মিটিং মিছিল করতে দেওয়ারও কোন অর্থ খুজে পাই না।
মানুষ কখন আন্দোলনে যায়? যখন তার অধিকার বলতে কিছু থাকে না।
অথচ আমাদের দেশে মুসলমানদের সব ধরনের সব কিছু করার অধিকারই আছে। তবুও শুক্রবারে মসজীদে যেতে হিযবুত তাহরীর দাবী দাওয়া সম্বলিত লিফলেট হাতে পেতে হয়।
একটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কোন নির্দিষ্ট ধর্মভিত্তিক হওয়া উচিৎ নয়। হোক সেদেশ ফুল মুসলিম, অথবা হাফ মুসলিম। আমাদের দেশে হিন্দু খ্রীষ্টানও আছে।
তাই ধর্মভিত্তিক যেকোন একতরফা প্রতিষ্ঠানই আমি অপছন্দ করি। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে সার্বজনীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।