যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল। হঠাৎ করে হাতে বল্লম-হাসুয়া, রামদা, লাঠিসোটা আর আগ্নেয়াস্ত্র, কোমরে ও মাথায় সবুজ ফিতা বেঁধে একদল জঙ্গি সন্ত্রাসীর আবির্ভাব ঘটে রাজশাহীর বাগমারায়। পলাশী গ্রামে কৃষি ক্ষেতে কাজ করছিলেন দরিদ্র কৃষক ও আওয়ামী লীগ কর্মী ওয়াসিম ওরফে ওসমান বাবু (২৭)। বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ওসমানকে কুপিয়ে আহত করার পর জবাই করে হত্যা করে। তখন বেলা ১১টা।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জঙ্গিরা আনন্দ-উল্লাস করতে করতে বাগমারা থানার দিকে চলে যায়। এদিন থেকেই বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে শুরু হয় কথিত সর্বহারা নিধন অভিযান। এরপর বাংলা ভাই বাহিনীর সর্বহারা বিরোধী সশস্ত্র অভিযান রাজশাহী জেলাধীন বাগমারা, পুঠিয়া, নাটোরের নলডাঙ্গা, নাটোর সদর, নওগাঁর আত্রাই, রানীনগর উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে ত্রাসের রাজত্ব।
সেই শুরু। এর পর দিনের পর দিন ওই অঞ্চলে চলেছে ত্রাসের রাজত্ব।
সেই রাজত্বের সৈন্যদের দেখে যে কারো মনে হতে পারে এটা বুঝি বাংলাদেশ নয়। হয় আফগানিস্তান অথবা যুদ্ধবিক্ষুব্ধ ইরাক, কিংবা পাকিস্তানের সীমান্ত প্রদেশ। যে কোন বিরুদ্ধবাদী অথবা এমনি এমনিই যে কারো ওপর সন্দেহ হলে তাকে ‘সর্বহারা’ নাম দিয়ে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে ধরে এনে নিজেরা তাৎক্ষণিক বিচার করে প্রকাশ্যে হত্যা করে তার লাশ হয় গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো অথবা মাঠে ঘাটে ফেলে রাখা হতো। সাধারণ মানুষ দেখতো তাদের কোন এক আত্মিয় মরে পড়ে আছে!
যথারীতি পুলিশ আসত। পুলিশ তাদের চিরচেনা গৎবাঁধা কাজগুলো করে যেত।
একটা নামকাওয়াস্তে ফাইল খোলা হতো, এবং একসময় সেই ফাইল বন্ধও হয়ে যেত! তার পর পদ্মার জল গড়িয়ে অনেক দূর চলে যেত। এই রেগুলেশন ওয়ার্কের কোন ব্যতিক্রম হতো না। মিডিয়া তাদের নিজস্ব প্রতিনিধি পাঠিয়ে খবর সংগ্রহ করে কাগজে ছাপত। আর তৎকালিন জোট সরকারের প্রধান কাজ ছিল বাংলা ভাইয়ের অস্তিত্ব অস্বীকার করা। গাছের ডালে পা ওপরে মাথা নিচে ঝুলতে থাকা লাশগুলো বেশ ‘সন্মানজনকভাবে’ সমাধিত হতো।
যারা সে সময়ে এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করতেন তাদের নানাভাবে ধিক্কার দেওয়া হতো। দাড়ি আর গোঁপের ফাঁকে নিজামী স্মিত হেসে চোঙার সামনে ঘোষণা দিত-‘বাংলা ভাই বলে কেউ নেই, সবই মিডিয়ার সৃষ্টি’! নিজামীর সেই মিথ্যাচারকে আরো মজবুত করে স্টাবলিষ্ট করার কাজে নিয়োজিত থাকত বিএনপির বাঘা বাঘা সব মন্ত্রী নেতা-নেত্রীরা। কেউ কেউ এমনও বলতো যে, বাংলা ভাই তো ভাল কাজ করছে! আমরা বুঝতে পারতাম একটা সমাজের কোন স্তর পর্যন্ত পঁচে গেলে সেই সমাজের তথাকথিত কর্ণধাররা এই রকম মৃত্যুতামাশা করতে পারে!
আমরা একনজরে দেখে নেই সেই ঠান্ডা মাথার রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞের শিকার মানুষগুলো কারা? প্রায় এক বছরের অভিযানে ওই বাহিনীর সন্ত্রাসীরা উল্টো করে ঝুলিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে ৩২ জন মানুষকে হত্যা করে। নির্যাতনের মাধ্যমে ২ শতাধিক লোককে পঙ্গু করে দেয়। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ।
জনপ্রতিনিধিসহ বহু মানুষ হন ঘরবাড়ি ছাড়া। বাংলাবাহিনী ধরে নিয়ে যাওয়ার পর
ধর্মীয় সংখ্যালঘু তরুণ সুফল ও সুশান্ত,সাজুরিয়া গ্রামের আবু তালেব ও বারুইহাটি গ্রামের শহিদুল ইসলামসহ নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় ১২ জন লোক। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এরা নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, নিখোঁজ সকলকেই হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনাসমূহের সঠিক ও কার্যকর তদন্ত হয়নি।
হয়নি কোনো বিচার। উল্টো নিহতের পরিবার ও নির্যাতিতরা নানান হয়রানি আর বিড়ম্বনার মুখে পড়েছেন।
নিহতদের তালিকা
টিএফটির রিপোর্টে বাংলা ভাই বাহিনীর নির্যাতনে নিহত ৩২ জনের মধ্যে পরিচয় মিলেছে যাদের তারা হলেন ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল
ওয়াসিম ওরফে ওসমান বাবুকে, ১১ এপ্রিল (১১ এপ্রিল নির্যাতনের পর ১৭ এপ্রিল নিহত) বাংলা বাগমারার কনোপাড়ার গোলাম
রব্বানী মুকুলকে ওপরে লটকিয়ে, ২০ এপ্রিল দূর্গাপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আজাহার আলীকে, ২২ এপ্রিল
নওগাঁর রানীনগরের বেলঘরিয়ার মোশাররফ হোসেন, নাটোরের পীরগাছার সাইফুর, ২৩ জুলাই নওগাঁ জেলার আত্রাইয়ের কাশিয়াবাড়ির দীপংকরকে একইভাবে, ২৭ এপ্রিল নওগাঁর আত্রাই কাশিয়াবাড়ির দীপংকর রায় ও ইউপি দফাদার, এপ্রিল মাসেই দূর্গাপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আজাহার আলীকে নির্যাতন করলে তিনি অসুস্থ হয়ে গত বছরে মৃত্যুবরণ করেন, ১ মে আত্রাইয়ের ভোঁপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য শেখ ফরিদ, অজ্ঞাত ৩ ব্যক্তি, রাজশাহীর বাগমারার নীমপাড়ার রাবেয়ার ১৩ মে ধর্ষণের কারণে ১৪ মে আত্মহনন, ১৫ মে বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সর্বহারার নেতা নওগাঁর রানীনগরের সফিকপুরের আবদুল কাইয়ুম বাদশাকে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা, ২৪ জুন রানীনগরের সিম্বা গ্রামের আওয়ামী লীগ ও সর্বহারা নেতা খেজুর আলীকে টুকরো টুকরো করে কেটে, রানীগরের বড়গাছার আফজালকে, ৩০ জুন গাছে ঝুলিয়ে বর্বর নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয় বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইয়াসিন আলী, ২৫ জুন নাটোরের বাসুদেবপুরে অজ্ঞাতনামা ৩ ব্যক্তিকে হত্যা, ১৪ নভেম্বর রানীনগরের ভেটি ক্যাম্পে ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউল হক জিয়া, ২৭ নভেম্বর বাগমারার তাহেরপুরের বিষ্ণুপুরে বাসদ (মাহবুব) নেতা আলী আকবরকে, ২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারি বাগমারার শ্রীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুরকে হত্যা ও আওয়ামী লীগ নেতা জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধাকে হত্যা প্রচেষ্টা চালানো হয়। এছাড়া বাংলা ভাইয়ের নির্যাতনের শিকার হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বৃদ্ধ রহিমা বেওয়া কিছুদিন আগে মারা গেছেন(ভোরের কাগজ, ৪ এপ্রিল,২০০৯)।
বাংলা ভাইকে প্রকাশ্যে মদদ দিত সেই সময়ে রাজশাহীর এসপি মাসুদ মিয়া।
এই মাসুদ মিয়াকে মিডিয়া অনেকভাবে প্রশ্ন করার পরও সে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার যেমন করত না, তেমনি অস্বীকারও করত না। এই অস্বীকার না করার পেছনে তার যে ঔদ্ধত্ব সেটা ওপর মহলে জানাজানির পরও তার টিকিটি কেউ ছুঁতে পারেনি। তাকে কেউ জবাবদিহি করাতে পারেনি। তারই আষ্কারায় রাজশাহী শহরে দিনেদুপুরে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মটরসাইকেল বহর নিয়ে বাংলা ভাইয়ের ক্যাডাররা মিছিল করেছে। উল্লাস করেছে! ভয়ে শহরের কেউ টু শব্দটি করতে পারেনি।
প্রশাসনের এমন নির্লজ্জ আচরণে সে সময় সারা দেশ স্তম্ভিত হলেও জোট সরকারের মহামহিমদের তাতে কিছুই যায় আসেনি। তারা শেরেবাংলানগরের জল ঘেরা ইমারতের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বসরাই গোলাপে নাক ডুবিয়ে একপাশে হেলে বাদশাহী ঢঙে বলে গেছেন-‘দেয়ার ইজ নো বাংলা ভাই, টেক ইট ইজি!’
অনেক পরে যখন নিজেদের পোষা কালসাপ তাদেরই ছোবল মারতে চেয়েছে তাদের দেওয়া স্বাধীনতাকে যথেচ্ছা ব্যবহার করে মাথায় উঠে পেচ্ছাপ করে দিতে চেয়েছে, এবং ইয়াংকি গডফাদাররা যখন তাদের কায়েমী স্বার্থ হাসিলের মাহেন্দ্রক্ষণ সমাগত মনে করেছে, আর নেপথ্যে নির্দেশ দিয়েছে, শুধু মাত্র তখনই সরকার বাংলা ভাই ফাইলটা ক্লোজ করে দিতে চেয়েছে। এবং তার পরের ইতিহাস আমরা জানি। টোটাল গেমটা খেলা শেষে কে কয় গোল খাবে, কাদের জার্সি খুলে নেওয়া হবে সব খোপেখাপে বসে যাওয়ার পর তড়িঘড়ি বাংলা ভাই এর গ্রেফতার, তার ভাবগুরু শায়েখ আব্দুর রহমান গ্রেফতার এবং রাষ্ট্রের কিছু অতি ব্যবহার্য্য নিয়ম কানুন দ্বারা তাদের নিকেষ করার ঘটনাও আমাদের জানা আছে। যেটি জানা নেই তা হলো এখন তাদের কি অবস্থা?
বাংলা ভাইকে যারা মদদ দিত তারা কারা?
রাজশাহীর বহুল আলোচিত তৎকালীন এসপি মাসুদ মিয়া (জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে চাকরিচ্যুত), রাজশাহীর পুঠিয়া-দূর্গাপুর থেকে নির্বাচিত বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাদিম মোস্তফা, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে এলডিপি নেতা আলমগীর কবির, সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাবেক ডাক ও টেলিযোগোযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের সরাসরি মদদ ও সহযোগিতা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাংলা ভাই ও জঙ্গি তৎপরতার নেপথ্যে জামাত-শিবিরের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া জামাতের আমির সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও জামাতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। এদের অনেকেই এখনো বহাল তবিয়তে সুখে শান্তিতে দিন গুজরান করে চলেছেন। শুধু মাত্র এসপি মাসুদ মিয়া ছাড়া আর কারোরই তেমন কোন শাস্তি হয়নি।
এখন মহাজোট সরকারের আমল।
এই মহাজোট সরকার সেই সময় বাংলা ভাইকে বিএনপি-জামাতের সৃষ্ট বলেছে। বলেছে সরকার বাংলা ভাইকে দিয়ে আদপে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিদের হত্যা করে রাস্তা পরিষ্কার করতে চায়। আমরা আরো শুনেছিলাম সেই সময় মহাজোটের অনক শরিকদলও ক্ষমতায় গেলে বাংলা ভাই সহ অপরাপর ইসলামী জঙ্গি নির্মূলে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তাহলে আমরা ধরে নেব এখন যেহেতু মহাজোট সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় বসেছেন সেহেতু বাংলা ভাই বা এই শ্রেণীর ইসলামী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা কি তাই?
বাংলা ভাই এবং শায়খ আব্দুর রহমান গ্রেফতার এবং বিচারে মৃত্যুদন্ড হবার পর পরও কি তাদের সেই আন্দোলন থেমে গেছে? এখনো কি আর কাউকে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে না? হচ্ছে।
এই সব কিছুই আগের চেয়ে সামান্য একটু লগুলয়ে ঘটে চলেছে। আর তা করছে জেএমবি-ও অন্য এক ফ্রন্ট হিযবুত তাহরীর। এই যে হিযবুত এরাও চূড়ান্ত বিচারে জামাতেরই আর একটি ফ্রন্ট। এদের ইন্ট্রোগেশন করলে বেরিয়ে আসছে জামাত সংশ্লিষ্টতা। বাংলা ভাই ওরফে সিদ্দিকুর রহমান যেমন এককালে জামাতের সদস্য ছিল, তেমনি বর্তমানের হিযবুতের নেতারাও এককালে জামাত-শিবিরের কর্মি বা সমর্থক বা সাথী ছিল।
বরিশালের একটি কওমি মাদ্রাসায় বিপুল পরিমানে বিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্র আর গোলাবারুদ পাওয়ার পর সরকার সকল কওমী মাদ্রাসাকে নজরদারিতে এনেছে। এই কওমী মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষা নিতে যাওয়া দরিদ্র সাধারণ মানুষের সন্তানেরা কেবল যে মাদ্রাসায় নিরীহ গোছের কিতাবটিতাব পড়ে তা নয়, এদেরকে রিক্রুটমেন্টের প্রধান এলিমেন্টস হিসেবে যারা রিক্রুট করে তারা কিন্তু এই সব নজরদারিতে আসেনি। যে গরিব পিতার আরো গরিব ছেলেটি সমাজের অপরাপর ছেলেদের তুলনায় দ্বীনদরিদ্র দশায় জীবন পার করে তাদের একটা উন্নত জীবন দেওয়া বা সমাজে শক্ত শেকড় গজিয়ে দাঁড়ানোর প্রলোভন দেওয়া খুবই সহজ। এই ছেলেগুলো যখন বুঝতে পারে তার শিক্ষা দিয়ে সে এই দেশের কোথাও বড় বা ভাল কিছুর ভেতর যেতে পারবে না, তখন তার মনের হাহাকারকে পুঁজি বানানো আরো সহজ হয়ে ওঠে। সে তার পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগপ্রাপ্ত ছেলেদের তুলনায় নিজেকে বঞ্চিত ভাবার সাথে সাথে তার ভেতরেও একধরণের ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে।
যারা এই ক্ষোভটাকে সুকৌশলে ব্যবহার করে তাদের ইসলামের নামে জঙ্গি বানাতে থাকে তাদের চিহ্ণিত করার উপায় কি? তাদেরকে নিবৃত্ত না করা গেলে শুধুমাত্র একটি দুটি মাদ্রাসা সীল করে কিংবা কয়েকটি মাদ্রাসা নজরদারি করে যে কোন লাভ হবে না সেটা সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের মাথায় থাকা দরকার। তা না হলে একদল বাংলা ভাইকে নির্মূল করার পর পরই রাবণের মাথা গজানোর মত আর একদল বাংলা ভাই বা আব্দুর রহমান পয়দা হতেই থাকবে। সরকারের এটা খুব গভীর ভাবে ভাবা দরকার যে আফগানিস্তানের সাময়ীক পতনের পর এই অঞ্চলে বাংলাদেশই তালেবান-হিযবুত-হরকতের অভয়াশ্রম। আর সেই অভয়াশ্রমকে আরো মজবুত করে এদেশের সাধারণ মানুষের স্বতসিদ্ধ সহজীয়া ধর্মচিন্তা, যা তাদের জীবন প্রবাহের সাথে ওতোপ্রতভাবে জড়িত। আন্তর্জাতিক জঙ্গি র্যাকেটের যে কোন একটা শাখা কেটে দেওয়াই নিরাপদ বাতাবরণ নয়।
এটা মনে করার কোন কারণ নেই যে যেহেতু বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় নেই সুতরাং আর কোন দল বা গোষ্ঠি সরকারী মদদে তান্ডব চালাতে পারবে না! এই আত্মপ্রসাদে না ভুগে একেবারে নাড়ি ধরে টান দিতে যত দেরী হবে ততই রাবণের মাথা গজাতে থাকবে। অতএব সাধু সাবধান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।