আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাবি এর রোকেয়া হল কতৃপক্ষের ভাবোদয়

wanna know and show everything I can......

রোকেয়া হলে কম্পিউটার বিরোধী অভিযান চালানোর খবর প্রচারিত হয় গত শুক্রবার। কতৃপক্ষের ভঁড়ামি নিয়ম অনুযায়ী একটি কক্ষে একটির বেশি কম্পিউটার রাখা যাবে না। এমনকি ল্যাপটপও রাখা যাবে না। কিন্তু কতৃপক্ষের মাথায় নেই, বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতিতে কম্পিউতারের গুরুত্ব কতটুকু। বর্তমান আধুনিক যুগে কম্পিউটার সহ নানা তথ্য প্রযুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা কি ফলাফল নিয়ে আসতে পারে তা সকলের বোধগম্য বলে মনে হয়।

আর ঢাবি এর মত একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত আরো বেশি অচিন্তনীয়। এই সিদ্ধান্ত যদি প্রথমে কোনো ছেলেদের হলে দেওয়া হতো তাহলে কি পরিমান ধংসযজ্ঞ হতো তা কল্পনাতীত। হয়তো আবারো সারা বাংলাদেশের ছাত্ররা জেগে উঠটো টিক যেভাবে তারা জেগে উঠেছিল ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে। ঢাবি প্রশাসন ভুলে গিয়েছিলো সেই প্রতিবাদী ছিত্রগুলো যা ঘটে গিয়েছিলো এই কয়েকমাস আগে আর্মিদের বিরুদ্ধে যা ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজে ভেদাভেদ আছে তা সত্যি।

কিন্তু এটাও সত্যি যে এই ছাত্র সমাজের বিরুদ্ধে কোনো অপশক্তি বাঁধা হয়ে কখনো দাঁড়াতে পারেনি, পারবেও না। আর দাড়াতে গেলে যে কতটুকু ভুলের মাশুল দিতে হবে তা বলার অপেক্ষা মনে হয় রাখেনা। কম্পিউটার বর্তমানে শুধু যে বিনোদনের মাধ্যম তা নয়। এটি শিক্ষার একটি অতি প্রয়োজনীয় উপকরণও। তাই এর বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ মানে মানুষের সাধারন চাহিদার উপর হস্তক্ষেপও বটে।

বিশ্বের উন্নত দেশ গুলো যখন এগিয়ে যাচ্ছিল কম্পিউটার প্রযুক্তির হাত ধরে ঠিক সেই সময়ে একবার হোচট খেয়েছিল এই বাংলাদেশ। তখনকার সরকার(১৯৯২) নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সাবমেরিন সংযোগ থেকে বঞিত করেছিল সারা বাংলাদেশের জনগনকে। তাই আমাদেরকে তাকিয়ে থাকতে হয়েছিলো পার্শ্ববর্তী ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলো কিভাবে এগিয়ে চলছে সামনের দিকে। যে জাপান, কোরিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের সমকক্ষে ছিলো সেইদেশ এখন বাংলাদেশের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে। এর একটি কারন প্রযুক্তি বিরুদ্ধ মনোভাব।

এতসব কিছুর পরও বাংলাদেশ আবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার আপ্রান চেষ্ঠা করে যাচ্ছে প্রযুক্তির হাত ধরে। আর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যারা বর্তমানে তাদের মেধা কাজে লাগাচ্ছে দেশবিদেশে, আর কেউ কউ এখনো লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে সুন্দর এক ভবিষ্যৎকে সামনে রেখে। আর বর্তমান এই পরিস্তিতে ঢাবি হল কতৃপক্ষ যে কাজ করেছিলো তা মুখের ভাত কেড়ে নেওয়ার মতো। যাহোক, ঢাবি কতৃপক্ষ জেনে অথবা না জেনে এই ভুল করে থাকলেও তাদের বোধোদয় হয়েছে। ঢাবি এর বর্তমান ভিসি মহোদয় অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গত শুক্রবার রাতে নিজে রোকেয়া হলে গিয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষনা দিয়েছেন।

আর এও ঘোষনা দেন যে জায়গা স্বল্পতার কারনে কোনো রুমে যদি তিনের অধিক কম্পিউটার থাকে তাহলে তাকে অন্য রুমে যেখানে কম্পউটার কম সেই জায়গার স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরো বলেন বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। ছাত্রীদের এখানে পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। নিজেদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলে তারা অবশ্যই ব্যবহার করতে পারবে। যাদের নিজেদের কম্পিউটার নেই তাদের জন্য সাইবার ক্যাফের ব্যবস্থা করা হবে বলেও উপাচার্য আশ্বাস দেন।

মাননীয় উপাচার্যের বোধোদয়কে সাধুবাদ জানাই। আর যেহেতু গরীব পরিবার থেকে আসা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশী সেহেতু তাদের জন্য কম খরচে এবং পর্যাপ্ত পরিমানে সাইবার ক্যাফের ব্যবস্থা করা হোক। আর কোনোদিন যেন কোন জায়গায় প্রযুক্তির উপর এরকম বেমানান হস্তক্ষেপ না ঘটে এই কামনা রইলো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.