হুশিয়ারি :- আমার ব্লগে কেউ সাহিত্য খুইজেন না । ইহা একটি মাকাল পরিবেশনা।
জীবনের প্রথম যে বীরশ্রেষ্ট’র সমাধি দেখলাম (৯ মার্চ ২০০৭ইং) তিনি ছিলেন সিপাহী মোঃ মোস্তফা কামাল। আমাদের ব্লগের শুভ ভাই, সাদিক মোঃ আলম আর আমি এই তিন জন গিয়েছিলাম মহান এই বীরের সমাধি দেখতে ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলার গঙ্গাসাগর নামক স্থানে। সেই তখন থেকেই মনে মনে স্খির করলাম ঘুরে দেখবো বাকি সব বীরদের সমাধি।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ অক্টোবর ২০০৭ইং, শুক্রবার বিকালে গেলাম খুলনার রূপসা নদীর তীরে বীরশ্রেষ্ট রুহুল আমীন এর সমাধিক্ষেত্রে।
রাজশাহী বিভাগে একটা বিশাল ট্যুর দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম কয়েক মাস আগ থেকে। সেই ট্যুরের একট অংশ ছিল চাঁপাই নবাবগঞ্জ এ সোনা মসজিদ আর বীরশ্রেষ্ট মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর সমাধিত্রে দেখা। অবশেষে ১৫ নভেম্বর ২০০৮ইং দিনাজপুর, রাজশাহী ঘুরে গেলাম সিমান্ত নিকটবর্তী জেলা চাঁপাই নবাবগঞ্জে। ঐতিহাসিক ছোট সোনা মসজিদ প্রাঙ্গনে চির নিদ্রায় শায়িত আছেন বীরশ্রেষ্ট মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর।
পাশের কবরে শয়িত আছেন আরেক মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর নাজমুল হক।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর :
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর (১৯৪৮- ডিসেম্বর ১৪, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
সংক্ষিপ্ত জীবনী :
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ১৯৪৮ সালে বাবুগঞ্জ থানার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবদুল মোতালেব হাওলাদার।
জাহাঙ্গীর ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং ১৯৬৬ তে আই.এস.সি পাশ করার পর বিমান বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন, কিন্তু চোখের অসুবিধা থাকায় ব্যর্থ হন। ১৯৬৭ সালে তিনি পাকিস্তান সামরিক একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮-র ২ জুন তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তিনি পাকিস্তানে ১৭৩ নম্বর ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ানে কর্তব্যরত ছিলেন। মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য তিনি ছুটে এসেছিলেন পাকিস্তানের দুর্গম এলাকা অতিক্রম করে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে।
৩ জুলাই পাকিস্তানে আটকে পড়া আরো তিনজন অফিসারসহ তিনি পালিয়ে যান ও পরে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মেহেদীপুরে মুক্তিবাহিনীর ৭নং সেক্টরে সাব সেক্টর কমান্ডার হিসাবে যোগ দেন। বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখানোর কারণে তাঁকে রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ দখলের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বিজয় সুনিশ্চিত করেই তিনি শহীদ হয়েছিলেন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ আঙিনায় সমাহিত করা হয়।
যেভাবে শহীদ হলেন :
১০ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর, লেফটেন্যান্ট কাইয়ুম, লেফটেন্যান্ট আউয়াল ও ৫০ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশ্চিমে বারঘরিয়া এলাকায় অবস্থান গ্রহন করেন।
১৪ ডিসেম্বর ভোরে মাত্র ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বারঘরিয়া এলাকা থেকে ৩/৪ টি দেশী নৌকায় করে রেহাইচর এলাকা থেকে মহানন্দা নদী অতিক্রম করেন। নদী অতিক্রম করার পর উত্তর দিক থেকে একটি একটি করে প্রত্যেকটি শত্রু অবস্থানের দখল নিয়ে দক্ষিণে এগোতে থাকেন। তিনি এমনভাবে আক্রমণ পরিকল্পনা করেছিলেন যেন উত্তর দিক থেকে শত্রু নিপাত করার সময় দক্ষিণ দিক থেকে শত্রু কোনকিছু আঁচ করতে না পারে। এভাবে এগুতে থাকার সময় জয় যখন প্রায় সুনিশ্চিত তখন ঘটে বিপর্যয়। হঠাৎ বাঁধের উপর থেকে ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সের ৮/১০ জন সৈনিক দৌড়ে চর এলাকায় এসে যোগ দেয়।
এরপরই শুরু হয় পাকিস্তান বাহিনীর অবিরাম ধারায় গুলিবর্ষন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর জীবনের পরোয়া না করে সামনে এগিয়ে যান। ঠিক সেই সময়ে শত্রুর একটি গুলি এসে বিদ্ধ হয় জাহাঙ্গীরের কপালে। শহীদ হন তিনি।
লিংক
বীরশ্রেষ্ট সিপাহী মোঃ মোস্তফা কামাল :
Click This Link
বীরশ্রেষ্ট রুহুল আমীন :
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।