ছবিটি সম্প্রতি তোলা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাঙালী জাতির অহংকার । আমাদের জাতি সত্তা এর সাথে আস্টেপিস্টে বাধা । ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশের স্থাপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্তে বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় । তৎকালিন পররাস্ট্র মন্ত্রী ছিলেন ডঃ কামাল হোসেন । ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকারের পররাস্ট্র দফতর একটি প্রঙ্গাপনে ১৯৫ জনের নাম সম্বলিত যুদ্ধাপরাধীদের একটি তালিকা প্রকাশ করে ।
তালিকায় প্রকাশিত সকলেই ছিল পাকিস্থান সেনাবাহিনীর সদস্য । এই তালিকায় কোন বেসামরিক ব্যক্তি বা কোন বাংলাদেশীর নাম ছিল না । এদের বিচারের জন্য বাংলাদেশের পার্লামেন্টে ১৯শে জুলাই ১৯৭৩ international crimes (tribunal)Act 1973 এবং তার আগে সংবিধান সংশোধন করা হয় । কারন এই আইনের অনেক বিধান সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক । পরবর্তী বছরের বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান ও ভারত, বাংলাদেশ ও ভারত ,এবং বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অব্যহত আলোচনার ফল হিসাবে উপমহাদেশের শান্তি ও সমজতার স্বার্থে এবং পাকিস্তান সরকারের বাংলাদেশের জনগনের কাছে forgive and forgetএর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ।
১৯৭৪সালের ৯এপ্রিল নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ -ভারত- পাকিস্তানের মধ্য চুড়ান্ত আলোচনা শেষে ১৯৫জন যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় । এতে সাক্ষর করেনবাংলাদেশের পররাস্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনভারতের পররাস্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং এবং পাকিস্তানের পররাস্ট্রমন্ত্রী আজীজ আহম্মদ । এই চুক্তির১৩,১৪,১৫নম্বর অনুচ্ছেদের বর্ণিত শর্তানুযায়ী ১৯৫জন যুদ্ধবন্দীকে পাকিস্তান ফেরত পঠানো হয় । সুতরাংরাস্ট্রীয় পর্যায়ে বিষয়টির মিমাংসার মাধ্যমে বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধ উদ্ভুত যুদ্ধাপরাধীর বিচার ইস্যুর ইতি ঘটে । স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে যারা যুদ্ধে যোগ দেয়নি কিংবা রাজনৈতিক বিরোধীতা করেছে বা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগীতা করেছে অথবা কোন অপরাধ করেছে তাদের বিচারের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২সালের ২৪শে জানুয়ারী কলাবরেটর্স এ্যাক্ট নামে একটি আইন প্রণয়ন করে ।
এই আইনের আওতায় লক্ষাধিক লোককে গ্রেফতার করা হয় । এদের মধ্য থেকে অভিযোগ আনা হয় ৩৪হাজার ৪শত৭১জনের বিরুদ্ধে । এই অভিযুক্তদের মধ্য ৩৪৬২৩ জনের বিরুদ্ধে কোন সাক্ষী প্রমান না থাকায়কোন মামলা করা সম্ভব হয়নি । ২৮৪৮জন কে বিচারে সোপর্দ করা হয় । বিচারে ৭৫২জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়এবং অবশিষ্ট ২০৯৬জন বেকসুর খালাস পায় ।
১৯৭৩সালের নভেম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্তে বাংলাদেশ সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এক সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করেন । এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে মুক্তিযুদ্ধ কালীন বরোধ বিতর্ক মুছে ফেলার জন্যই বাংলাদেশের স্থতি শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেন । এই ক্ষমা ঘোষনার কারনে কলাবরেটর্স এ্যক্টের অধীনে শাস্তিপ্রাপ্তরা বা অভিযুক্তরা সকলেই জেল থেকে ছাড়া পায় । সাধারন ক্ষমায় কিন্তু হত্যা ,ধর্ষন,লুটপাট ,ও অগ্নিসংযোগের মত অপরাধ ক্ষমা করেনি । অর্থাৎ যারা এ ধরনের অপরাধের সাথে যুক্ত হয়েছে তাদর বিচারের দরজা খোলা রাখা য়ছে ।
১৯৭৫সালে রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কলাবরেটর্স আইন সম্পূর্নরুপে বাতিল করে । সাধারন ক্ষমা ঘোষনার পর আরো ২বছর এক মাস সময় অতিবাহিত হয় । এই দীর্ঘ সময়ে ঐ চার অপরাধের জন্য উক্ত আইনের অধীন কোন মামলা হয়নি । সম্ভবত এই কারনেই জিয়াউর রহমান আইনটি বাতিল করেন ।
সুতরাং বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের যে তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে তা রাজনৈতিক উদ্দশ্যে নয়কি ?সাধারন ক্ষমার পর থেকে আইনটি বাতিল হওয়ার মাঝখানের ২বছর এক মাস সময়ে এদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি কেন?বর্তমান তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের অধিকাংশেই গ্রেফতারকৃত লক্ষাধিক লোকের মধ্যেই ছিল না ।
তাই আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা সপ্স্ট যে নতুন করে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম যে তালিকা প্রনয়ন করেছেন তা সম্পূর্ন বির্তকিত ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে ।
আশা করি সরকার নিজেস্ব তত্তাবধায়নে সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও সঠিক অপরাধীর বিচারে মনযোগী হবেন । ..............আব্দুর রহিম,
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।