যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডিতদের সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ২০১৩-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০১৩ সংশোধন করা হয়েছে। এটি ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সময়ে সময়ে সংশোধন করা হয়েছে।
এখন আরও কিছু সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সংশোধনের কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগ একটা সংশোধনী আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করে। মন্ত্রিসভা এটি আলোচনা-পর্যালোচনা করে নীতিগত এবং চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এটি এখন সংসদে যাবে এবং আইন আকারে পাস হবে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে_ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭৩-এর অধীনে সংঘটিত অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে এখন দণ্ডিত কেউ আর প্রার্থী হতে পারবেন না। ট্রাইব্যুনালের মামলায় দণ্ডিতদের মধ্যে যারা আপিল করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ বিষয়ে খসড়ায় কিছু বলা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সংশোধিত আরপিওতে নির্বাচনী ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে একজন প্রার্থী ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারতেন।
এটি সংশোধন করে ব্যয় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। আর দলীয় প্রধানদের নির্বাচনী ভ্রমণ ব্যয় তার নির্বাচনী ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত হবে না। আরপিও সংশোধন করে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির অনুদানের বিষয়টিও সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক দলে ব্যক্তি পর্যায় ১০ লাখ টাকা এবং কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায় ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়ার বিধান রয়েছে।
আরপিও সংশোধনের ফলে এখন ব্যক্তি পর্যায় ২৫ লাখ টাকা, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি পর্যায় ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাজনৈতিক দলকে অনুদান দিতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, পোলিং এজেন্টদের বিষয়েও আরপিওতে সংশোধনী আনা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের মধ্য থেকে পোলিং এজেন্ট হতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলির বিষয়ে কোনো অনুশাসন দেওয়া হলে সেটা যথাশীঘ্রই করতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী মামলার ফি দুই হাজার টাকা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করা হয়েছে।
বৈঠকে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই আইন করার ফলে এমএলএম ব্যবসা একটি নিয়মে আসবে, গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।