আমার একটা প্রায় ছোট বোন আছে। নাম রোজা। আপন বোনের মতই। পাশের বাসায় থাকে। বয়স সবে ২ পেরিয়েছে।
বয়স অনুযায়ী দেশ বিদেশের সকল শিশুদের মতো সেও কথাবার্তায়, আচরণে অনেক এগিয়ে।
আমাদের যে বয়সে টিভি নামক বস্তুটাই বিস্ময়কর ছিল, সেই বয়সের অনেক আগেই রোজা তার পছন্দের চ্যানেল দেখার জন্য রাগ করে বসে থাকে।
আমাদের যে বয়সে পোশাক-আশাক জামা কাপড় একটা হলেই চলতো, সেই বয়সে রোজার জামা কাপড় তার পছন্দ অনুযায়ী হতে হয়।
এমনকি রঙয়ের প্রতি বিশেষ অনুরাগ বিরাগ আছে।
আমার ধারণা, এ বিষয়গুলো ইদানিং সকল শিশুদের মধ্যেই আছে।
রোজা তার দিনের অর্ধেক সময় আমাদের বাসাতেই থাকে। ইদানিং আমি কম্পিউটার অন করা মাত্র সে আমার কাছে এসে বসে পড়ে। তারপর তার জন্য পোহাতে হয় নানা ঝামেলা। গুগলে সার্চ দিয়ে তাকে মাছ, ফুল, প্রজাপতি টাইপের নানা রকম ছবি দেখাতে হয়।
এগুলো দেখে ব্যাপক খুশি সে।
বিপত্তি ঘটে ব্লগে ঢুকতে দেখলেই। তখন আমার উপর চরম বিরক্ত সে।
ওইটা দাও। এটা কি?
বিরক্তি ভরা এই প্রশ্নে চুপ করে যেতে হয়। বোঝানোই যায়না ঘটনা।
তবে কদিন আগে কারো একটা পোস্ট করা শিশুতোষ গল্প পেয়ে, পড়ে শুনিয়েছিলাম। দেখলাম, সে শান্ত হয়ে বসে রইল। মনোযোগ দিয়ে গল্পটা শুনলো।
বুঝলাম, শিশুদের গল্পের প্রতি অনুরক্ততা ভালোই।
তা আরো ব্যাপকভাবে প্রমাণ পেলাম, বইমেলায় ছোটদের জন্য লেখা বইয়ের ব্যাপক বিক্রি দেখে।
তাই হঠাৎই মনে হলো, আমরাতো পারি ব্লগে একটা দিন রোজাদের জন্য খরচ করতে। তাদের জন্য গল্প, ছড়া লিখতে। তাদের আঁকা ছবি পোস্ট করে দিতে। অথবা শুধু গল্প, ছড়া কেন? আমরা এখানে তুলে আনতে পারি, আমাদের চারপাশের শিশুদের অবস্থাও। যেখান থেকে সমৃদ্ধ হবে আমাদের ছোটরা।
সমৃদ্ধ হবে আমাদের শিশুসাহিত্যও।
আমাদের শিশুবর্ষ আছে। বইমেলায় শিশুপ্রহর আছে। ব্লগে একটা দিন ছোটদের জন্য হলে ক্ষতি কি?
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বির্ণিমানে আমরা হয়তো চেষ্টা করলে ব্লগের মাধ্যমে সামান্য হলেও ভুমিকা রাখতে পারবো।
প্রকৃতিকে শীতল করতে বৃষ্টির একটি ফোটারও অবদান আছে।
ব্লগের মাধ্যমে শিশুদের জন্য সে কাজ যদি বৃষ্টির একটি ফোঁটার মতোও হয়, তাহলেও কম কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।