গণতন্ত্র হল এমন এক অস্তিত্বহীন মদ, যাতে সবাই মাতাল, কিন্তু কেউ কখনো পান করে নি।
একুশে ফেব্রুয়ারী মহান ভাষা আন্দোলনের দিন ও শহীদ দিবস এবং একই সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশে এ যাবৎ একুশে ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চার বারে দশটি ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছে।
১৯৭২:
১৯৭২ সালে প্রথম একুশের স্মরণে ‘বাংলাভাষা আন্দোলন ১৯৫২-এর শহীদগন’ শিরোনামে ২০ পয়সা মূল্যের একটি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। এটি হানাদার মুক্ত বাংলাদেশের প্রথম মৌলিক ডাকটিকিট।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। এবং বিজয় অর্জনের পর ঐ ডাকটিকিটগুলোর তিনটির উপড় ‘ওভার পৃন্ট’ করে প্রকাশিত হয়েছিল। এই ডাকটিকিটটির আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হল এটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একমাত্র ডাকটিকিট যাতে দেশের নাম শুধু বাংলাতেই লেখা আছে (ইংরেজীতে নেই)। সবুজ ও লাল রংঙের এই ডাকটিকিটটিতে শহীদ মিনারের ছবি স্থান পায়। এবং রঙের বিন্যাস এমনভাবে করা হয়েছে যা বাংলাদেশের পতাকার অনুরুপ।
প্রকাশের তারিখ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২
আকার: ৩৯.১X২৯ মি.মি.
মূল্য: ২০ পয়সা
রং : সবুজ ও লাল
ছাপার প্রক্রিয়া: ফটোগ্রাভিওর
নকশাকার: বি. পি. চিত্তনিশ
মুদ্রাকর: সিকিউরিটি পৃন্টিং প্রেস, নাসিক, ভারত
১৯৮৭:
১৯৮৭ সালে ভাষা আন্দোলনের ৩৫ তম বর্ষে দ্বিতীয়বার ‘ভাষা আন্দোলনের ৩৫তম বার্ষিকী’ শিরোনামে প্রতিটি ৩ টাকা মূল্যের দুটি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। এর একটিতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ছবি ছবি স্থান পায় যেখানে মিছিলের উপড় গুলিবর্ষনের ইতিহাস প্রদর্শিত হয়েছে এবং অন্যটিতে পুষ্পমন্ডিত শহীদ মিনারের ছবি।
প্রকাশের তারিখ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৭
ডাকটিকিটের আকার: ৮৪x৩০ মি. মি.
মূল্য: প্রতিটি ৩ টাকা করে
রং: বহুরঙা
ছাপার প্রক্রিয়া: অফসেট;
নকশাকার: বাকির উদ্দিন সরদার
মুদ্রাকর: Mezhdunarodnava Kinga, U.S.S.R.
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। যা সারা বিশ্বে মাতৃভাষাচর্চাকে উৎসাহিত করবে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও প্রতিটি জাতির স্ব-ভাষাকে রক্ষা করতে সচেতন করবে।
২০০০:
২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ‘২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ শিরোনামে প্রতিটি ৪ টাকা মূল্যের চারটি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়।
এই চারটি ডাকটিকিটে ভাষা আন্দোলনে শহীদের অন্যতম চারজন- আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, রফিক উদ্দিন আহমদ ও শফিউর রহমান-এর ছবি স্থান পায়।
প্রকাশের তারিখ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০০০
ডাকটিকিটের আকার: ৩২x৪২ মি. মি.
মূল্য: প্রতিটি ৪ টাকা করে
রং: বহুরঙা
ছাপার প্রক্রিয়া: অফসেট;
নকশাকার: আনোয়ার হোসেন, মু. মতিউর রহমান, মুসলিম মিয়া
মুদ্রাকর: দি সিকিউরিটি পৃন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ), গাজীপুর।
২০০২:
২০০২ সাল ভাষা আন্দোলনের ৫০তম বর্ষ। এই উপলক্ষে ‘মহান ভাষা আন্দোলনের ৫০ তম বার্ষিকী এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস- ২০০২’ শিরোনামে সোনালী রঙে দৃষ্টি নন্দন অসাধারণ নকশায় তিনটি ডাকটিকিট ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। একটিতে বাংলা বর্ণমালা, দ্বিতীয়টিতে শহীদ মিনার ও তৃতীয়টিতে বিভিন্ন ভাষার বেশকিছু বর্ণের ছবি স্থান পায়।
বিভিন্ন ভাষার বর্ণ সম্বলিত তৃতীয় ডাকটিকিটটি বিশেষভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে উপস্থাপন করে।
প্রকাশের তারিখ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০০২
ডাকটিকিটের আকার: ৩২x৪২ মি. মি.
মূল্য: প্রতিটি ১০ টাকা করে
রং: বহুরঙা
ছাপার প্রক্রিয়া: অফসেট;
নকশাকার: আনোয়ার হোসেন
মুদ্রাকর: দি সিকিউরিটি পৃন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ), গাজীপুর।
বিশ্বের প্রতিটি ভাষা আপন মর্যাদায় টিকে থাকুক, আর একটি ভাষাও যেন পৃথিবী থেকে হারিয়ে না যায় এবং সবাই মাতৃভাষায় শিক্ষলাভের সুযোগ পাক।
তথ্যসূত্র: Postage Stamps of Bangladesh 1971-2002, Bangladesh Post Office
ডাকটিকিটের ছবিগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে http://www.bdstamps.com হতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।