ছায়াহীন দৃশ্যময় বিচড়ন
অঞ্জন দত্তের গান
কাঞ্চনজংঘা
একটু ভালো করে বাঁচবো বলে আর একটু বেশী রোজগার
ছাড়লাম ঘর আমি ছাড়লাম ভালোবাসা আমার নীলচে পাহাড়
পারলো না কিছুতেই তোমার কলকাতা আমাকে ভুলিয়ে দিতে
পাহাড়ি রাস্তার ধারে বস্তির আমার কাঞ্চনকে
কাঞ্চন জানা কাঞ্চন ঘর
কাঞ্চনজংঘা কাঞ্চন মন
তো পাইলে সোনা অনু লইয়ো
মউল্লা হাঙচুকাঞ্চন
সোনার খোঁজে কেউ কতদুর দেশে যায় আমি কলকাতায়
সোনার স্বপ্ন খুঁজে ফিরি একা একা তোমাদের ধর্মতলায়
রাত্রির নেমে এলে তিনশো বছরের সিমেন্টের জঙ্গলে
ফিরে চলে যাই সেই পাহাড়ি বস্তির কাঞ্চনের কোলে
জং ধরা রঙ চটা পার্কের বেঞ্চিটা আমার বিছানা
কখন যে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো আমাকে তোমাদের থানা
তিন মাস জেল খেটে এখন আমি সেই থানার দারোয়ান
পারবো না ফিরে পেতে হয়তো কোনদিন আমার সেই কাঞ্চন
কাঞ্চন জানা কাঞ্চন ঘর
কাঞ্চনজংঘা কাঞ্চন মন
তো পাইলে সোনা অনু লইয়ো
মউল্লা হাঙচুকাঞ্চন
বেড়াতে যদি তুমি যাও কোনদিন আমার ক্যালিংপঙ
জেনে রেখো শংকর হোটেলের ভাড়া টুরিস্ট লজের থেকে কম
রাত্রির নেমে এলে আসবে তোমার ঘরে চুল্লিটা জ্বালিয়ে দিতে
আর কেউ নয় সে যে আমার ফেলে আসা নীলচে পাহাড়ি মেয়ে
বলো না তাকে আমি দারোয়ান শুধু বলো করছি ভালোই রোজগার
ঐ বস্তির ড্রাইভার চিগমির সাথে যেন বেঁধে না ফেলে সংসার
আর কিছু টাকা আমি জমাতে পারলে যাবো যাবো ফিরে
পাহাড়ি রাস্তার ধারের বস্তির আমার নিজের ঘরে
আর যদি দেখ তার কপালে সিঁদুর বলো না কিছু তাকে আর
শুধু এই সত্তর টাকা তুমি যদি পারো গুজে দিও হাতে তার
ট্রেনের টিকিটের ভাড়াটা সে দিয়েছিলো কানের মাকড়ী বেঁচে
ভালোবাসার সেই দাম তুমি দিয়ে দিও আমার কাঞ্চনকে
কাঞ্চন জানা কাঞ্চন ঘর
কাঞ্চনজংঘা কাঞ্চন মন
তুমি যাকে বলো সোনা
আমি তাকে বলি কাঞ্চন
কাঞ্চন জানা কাঞ্চন ঘর
কাঞ্চনজংঘা কাঞ্চন মন
তো পাইলে সোনা অনু লইয়ো
মউল্লা হাঙচুকাঞ্চন
আমি বৃষ্টি দেখেছি
আমি বৃষ্টি দেখেছি
বৃষ্টির ছবি একেছি
আমি রোদে পুড়ে
ঘুরে ঘুরে অনেক কেঁদেছি
আমার আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখার
খেলা থামেনি
শুধু তুমি চলে যাবে
আমি স্বপ্নেও ভাবিনি
আমি বৃষ্টি দেখেছি
চারটে দেয়াল মানেই নয়তো ঘর
নিজের ঘরেও অনেক মানুষ পর
কখন কিসের টানে মানুষ
পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে
ঝাপসা চোখে দেখা এই শহর
আমি অনেক ভেঙ্গেচুরেও
আবার শুরু করেছি
আবার পাওয়ার আশায়
ঘুরে মরেছি
আমি অনেক হেরে গিয়েও
হারটা স্বীকার করিনি
শুধু তোমায় হারাবো
আমি স্বপ্নেও ভাবিনি
আমি বৃষ্টি দেখেছি
হারিয়ে গেছে তরতাজা সময়
হারিয়ে যেতে করেনি আমার ভয়
কখন কিসের টানে মানুষ
পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে
ঝাপসা চোখে দেখা এই শহর
আমি অনেক স্রোতে
বয়ে গিয়ে
অনেক ঠকেছি
আমি আগুন থেকে
ঠেকে শিখে
অনেক পুড়েছি
আমি অনেক কষ্টে
অনেক কিছুই
দিতে শিখেছি
শুধু তোমায় বিদায় দিতে হবে
স্বপ্নেও ভাবিনি
দুটো মানুষ
দু’টো মানুষ
এসাথে কত পথ চলা
হাতে হাত রেখে কথা বলা
কেন সব করে অবহেলা
কেন শেষ-মেষে এসে বিদায়
ফুলদানি
আছড়ে ভেঙ্গে চুড়মার
ফুল জল সব একাকার
নেমে আসে অন্ধকার
জানালার বাইরে নেমে আসে রাত
দু’টো বালিশ
কত স্বপ্ন ভালোবাসা বোঝাই
দেখে যায় এই কুৎসিত লড়াই
আশা আকাংখা সব পুড়ে ছাই
কেউ মুখ ফুটে কিছু বলে না
টেবিল ল্যাম্পের আধো অন্ধকারে
ভাঙ্গাচোড়া মন দুটো গুমড়ে গুমড়ে মরে
দুজনেই বসে থাকে হাত ধরবে বলে
কেউ মুখ ফুটে কিছুই বলে না
ভগবান তাই নেমে আসে না
আসে সকাল
চোখ মুছে চিঠি লেখা
ব্রিফকেস হাতে ট্যাক্সি ডাকা
ফিরে না তাকিয়ে দেখা
এইভাবে কেউ চলে যায়
একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
থাকবেনা সাথে কোন ছাতা
শুধু দেখা হয়ে যাবে মাঝ রাস্তায়
ভিজে যাবে চটি, জামা মাথা
থাকবেনা রাস্তায় গাড়িঘোড়া
দোকানপাট সব বন্ধ
শুধু তোমার আমার হদৃয়ে
ভিজে মাটির সোঁদা গন্ধ
একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
মনে পড়ে যাবে সব কথা
কথা দিয়ে কথাটা না রাখা
ফেলে আসা চেনা চেনা ব্যথা
অদূরে কোথাও কোন রেডিওতে
এই পথ যদি না শেষ হয়
আর বৃষ্টির র ংহয়ে যাবে নীল
আর আকাশের রংটা ছাই
একদিন, বৃষ্টিতে একদিন …
ভাঙ্গা দেয়ালের গায়ে সাত পাকে বাঁধা কবে-
কার নুন শো তে কোথাও
আর বৃষ্টির ছাঁটে যাবে না দেখা দুজনের চোখের জল
ছমছম
ছমছম চোখের জল
একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
আমরা ধরা পড়ে যাব জেনো ঠিক
ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান
ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ
আর চটিটাও ছিঁড়ে যাবে তক্ষুনি
তাই পালানো যাবেনা যে কোথাও
রাস্তা যেমন তেমনি
শুধু লোকজন সব উধাও
শুনতে কি চাও
শুনতে কি চাও তুমি সেই অদ্ভুত বে-সুরো সুর
ফিরে পেতে চাও কি সেই আনচান করা দুপুর
দেখতে কি চাও তুমি সেই খেলনাওয়ালাটা কে
তার খেলনা দোতারা সে বাজাচ্ছে কবে থেকে
স্কুলের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে কেনা
সেই অদ্ভুত ফাটা বাঁশ আর মাটির সুর টানা টানা
দু’দিনের সম্পদ দু’টাকার বাজনার বিষ্ময়
তারপর কখন হঠাৎ সুখের মানে পাল্টে যায়
তারপর টিফিনের পয়সা দিয়ে সিগারেট
কলেজ কেটে সিনেমা বান্ধবীর সাথে কাটলেট
আসে দশটা পাঁচটা সেই একরুটের বাসটা তারপর
সবার মতই পড়তে হয় যে কাগজের টোপর
এখন মাসের শেষে মাঝে মধ্যে কান্না পায়
মিনিবাসে দাড়িয়ে অফিস যাবার সময়
এখন বুঝেছি সেই অদ্ভুত সুরের কি মানে
ফিরে তো যাওয়া যায় না যে আর সেখানে
যেতে হবে যে তোমাকে আমাকে চলে
লুকোনো টেক্কা সংসারের এক্কা দোক্কা ফেলে
প্রথমে যাবে ঘর-দোর দোকানপাট তারপর হৃদয়
কিছুই হলো না বাজানো গেল না সময়
ইদানিং সে সুরটা শুনতে যে খুব ইচ্ছে হয়
কিন্তু সেই খেলনাওয়ালা আর আসেনা পাড়ায়
হয়তো কোন অন্য অলি-গলি ঘুরে
অন্য কোন কাউকে টানছে সেই অদ্ভুত সুরে
সুমনের গান
জাতিস্মর
অমরত্মের প্রত্যাশা নেই নেই কোন দাবি দাওয়া
এই নস্সর জীবনের মানে শুধু তোমাকে চাওয়া
মুহূর্ত যায় জন্মের মতো অন্ধ জাতিস্মর
গত জন্মের ভুলে যাওয়া স্মৃতি বিস্মৃত অক্ষর
ছেড়া তাল পাতা পুঁথির পাতায় নিঃস্বাস ফেলে হাওয়া
এই নস্সর জীবনের মানে শুধু তোমাকেই চাওয়া
কাল-কেউটের ফনায় নাচছে লখিন্দরের স্মৃতি
বেহুলা কখনো বিধবা হয় না এটা বাংলার রীতি
ভেসে যায় ভেলা এবেলা ওবেলা একই সব দেহ নিয়ে
আগেও মরেছি আবার মরবো প্রেমের দিব্যি দিয়ে
জন্মেছি আমি আগেও অনেক মরেছি তোমারই কোলে
মুক্তি পাইনি শুধু তোমাকে আবার দেখবো বলে
বার বার ফিরে এসেছি আমরা এই পৃথিবীর টানে
কখনো গাঙড় কখনো কো পাই কপোতাক্ষর গানে
গাঙড় হয়েছে কখনো কাবেড়ি কখনো বা মিসিসিপি
কখনো রাইন কখনো কঙ্গো নদীদের স্বরলিপি
স্বরলিপি আমি আগেও লিখিনি এখনও লিখিনা তাই
মুখে মুখে ফেরা মানুষের গানে শুধু তোমাকেই চাই
তোমাকে চেয়েছি ছিলাম যখন অনেক জন্ম আগে
তথাগততার নিঃস্বংগতা দিলেম অস্তরাগে
তারই করুনায় ভিখারিনি তুমি হয়েছিলে একা একা
আমিও কাঙাল হলাম আরেক কাঙালের পেতে দেখা
নতজানু হয়ে ছিলাম তখন এখনো যেমন আছি
মাধুকরী হও নয়নমোহিনী স্বপ্নের কাছাকাছি
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড কর প্রেমের পদ্যটাই
বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যি শুধু তোমাকেই চাই
আমার স্বপ্নে বিভোর হয়েই জন্মেছ বহুবার
আমি ছিলাম তোমার কামনা বিদ্রোহ চি]কার
দুঃখ পেয়েছ যতবার জেনো আমায় পেয়েছ তুমি
আমি তোমার পুরুষ আমি তোমার জন্মভূমি
যতবার তুমি জননী হয়েছ ততবার আমি পিতা
কতো সন্তান জ্বালালো প্রেয়সি তোমার আমার চিতা
বার বার আসি আমরা দুজন বার বার ফিরে যাই
আবার আসবো আবার বলবো শুধু তোমাকে চাই
এক ধরণের বিদ্রোহ হল কবিতা
এক ধরণের বিদ্রোহ হল কবিতা
এক ধরনের বিদ্রোহ হল গান
পৃথিবীর যত ফয়দা লোটার যন্ত্র
করে দিতে চাই ভেঙেচুরে খান খান৷৷
এক ধরনের বিদ্রোহ হল সৃষ্টি
এক ধরণের বিদ্রোহ আনে প্রাণ৷
নিষ্পাণ এই সর্বংসহা রাজ্যে
অন্তর্ঘাতি আমাদের এই গান৷৷
এক ধরণের বিদ্রোহ ভালবাসা
এক ধরনের বিদ্রোহ হল দাবী
উগ্র প্রেমের ছুরিতে দিচ্ছি শান
দখল করব জীবনের মৃগনাভি৷
শরীরে চলছে কামনার বিদ্রোহ
গেরিলার মত নির্ভীক তার চোখ
আমার স্পর্ধা তোমারই জীবনমুখি
আমার লড়াই এবার তোমার হোক৷
এক ধরণের বিদ্রোহ হল চৈত্র
বিদ্রোহে পড়ে দমকা চৈতি হাওয়া
নাচে বিদ্রোহে কালবৈশাখী ঝড়
তুফানে ওড়ায় মুমূর্ষু চাওয়া-পাওয়া৷
পরিবর্তন চাওয়াটাই বিদ্রোহ
ধ্বংসের দাবী সৃষ্টিতে উদ্বেল
কামনায় আজ আগুন লেগেছে দেখ,
ভাবনায় ফাটে মলোটভ ককটেল৷৷
তোমাকে চাই
প্রথমত:, আমি তোমাকে চাই
দ্বিতীয়ত:, আমি তোমাকে চাই
তৃতীয়ত:, আমি তোমাকে চাই
শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই
নিঝুম অন্ধকারে তোমাকে চাই
রাতভোর হলে আমি তোমাকে চাই
সকালের কৈশোরে তোমাকে চাই
সন্ধের অবকাশে তোমাকে চাই
বৈশাখী ঝড়ে আমি তোমাকে চাই
আষাঢ়ের মেঘে আমি তোমাকে চাই
শ্রাবণে শ্রাবণে আমি তোমাকে চাই
অকালবোধনে আমি তোমাকে চাই
কবেকার কলকাতা শহরের পথে
পুরোনো নতুন মুখ ঘরে ইমারতে
অগুন্তি মানুষের ক্লান্ত মিছিলে
অচেনা ছুটির ছোঁয়া তুমি এনে দিলে
নাগরিক ক্লান্তিতে তোমাকে চাই
এক ফোঁটা শান্তিতে তোমাকে চাই
বহুদূর হেঁটে এসে তোমাকে চাই
এ জীবন ভালোবেসে তোমাকে চাই
চৌরাস্তার মোড়ে পার্কে দোকানে
শহরে গঞ্জে গ্রামে এখানে ওখানে
স্টেশন টার্মিনাস ঘাটে বন্দরে
অচেনা ড্রয়িংরুমে চেনা অন্দরে
বালিশ তোশক কাঁথা পুরোনো চাদরে
ঠান্ডা শীতের রাতে লেপের আদরে
কড়িকাঠে চৌকাঠে মাদুরে পাপোশে
হাসি রাগ অভিমানে ঝগড়া আপোসে
তোমাকে চাই, তোমাকে চাই, তোমাকে চাই, তোমাকে চাই
এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই
ডাইনে ও বাঁয়ে আমি তোমাকে চাই
দেখা না দেখায় আমি তোমাকে চাই
না-বলা কথায় আমি তোমাকে চাই
শীর্ষেন্দুর কোন নতুন নভেলে
হঠাত্ পড়তে বসা আবোলতাবোলে
অবোধ্য কবিতায় ঠুংরি খেয়ালে
স্লোগানে স্লোগানে ঢাকা দেয়ালে দেয়ালে
সলিল চৌধুরীর ফেলে আসা গানে
চৌরাশিয়ার বাঁশি মুখরিত প্রাণে
ভুলে যাওয়া হিমাংশু দত্তর সুরে
কোন্ কবেকার অনুরোধের আসরে
তোমাকে চাই, তোমাকে চাই, তোমাকে চাই, তোমাকে চাই
অনুরোধে মিনতিতে তোমাকে চাই
বেদনার আর্তিতে তোমাকে চাই
দাবীদাওয়া চাহিদায় তোমাকে চাই
লজ্জাদ্বিধায় আমি তোমাকে চাই
অধিকার বুঝে নেওয়া প্রখর দাবীতে
সারারাত জেগে আঁকা লড়াকু ছবিতে
ছিপছিপে কবিতার ছন্দে ভাষায়
গদ্যের যুক্তিতে বাঁচার আশায়
শ্রেণীহীন সমাজের চির বাসনায়
দিনবদলের খিদে ভরা চেতনায়
দ্বিধাদ্বন্দের দিন ঘোচার স্বপ্নে
সাম্যবাদের গান ঘুমে জাগরণে
বিক্ষোভে বিপ্লবে তোমাকে চাই
ভীষণ অসম্ভবে তোমাকে চাই
শান্তি অশান্তিতে তোমাকে চাই
এই বিভ্রান্তিতে তোমাকে চাই
বনফুলে ঘুরে ঘুরে প্রজাপতি ক্লান্ত যখন
বনফুলে ঘুরে ঘুরে প্রজাপতি ক্লান্ত যখন
শুঁয়োপোকা থামে যেই চেনা চেনা গাছের গুঁড়িতে
তখন বিকেল দেয় সন্ধের আল ধরে হানা
গোধুলি আঙুল রাখে আলগোছে পথের ধুলিতে
ব্যস্ত পর্যটক পিঁপড়ের সফর ফুরোয়
বটগাছে গুটিপোকা গুটিসুটি মারে একা একা
রোদ্দুর ঘেঁটে ঘেঁটে শেষমেষ শরীর জুড়োয়
গোধুলির আবছায়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে সুবর্ণরেখা
দিনের আওয়াজ যেই ঝিঁঝির কোরাসে মিশে যায়
হঠাত্ জেনারেটর ওগরায় শব্দদূষণ
টুরিস্ট লজের থেকে কাজ করে ফেরে সাওঁতাল
এই পথে একা একা হাঁটতেন বিভূতিভূষণ৷
বাঁশুরিয়া বাজাও বাঁশী দেখি না তোমায়
বাঁশুরিয়া বাজাও বাঁশী দেখি না তোমায়
গেয়ো সুর ভেসে বেড়ায় শহুরে হাওয়ায়
এ শহরে এসছো তুমি কবে কোন রাজ্য থেকে
তোমাদের দেশে বুঝি সব মানুষই বাঁশী শেখে
আমাদের স্কুল কলেজে শেখে লোকে লেখা পড়া
প্রাণে গান নাই মিছে তাই রবি ঠাকুর মূর্তি গড়া
তোমার ঐ দেহাতি গান দোলে যখন বাঁশির মুখে
আমাদের নকল ভণ্ড কৃষ্টি চালায় করাট বুকে
বুকে আর গলায় আমার শহর কোলকাতায়
গেয়ো সুর ভেসে বেড়ায় শহুরে হাওয়ায়
ঠেলা ভ্যান চালাও তুমি কিম্বা ভারা গাড়ির ক্লিনার
কবছরে একবার যাও তোমার দেশের নদীর কিনার
ফাক পেলে বাঁশী বাজাও ফেলে আসা ঘরের ডাকে
দেশে গিয়ে এমন সুরে হয়তো ডাকো কোলকাতাকে
ফিরে এসে উদম খাটো গায়ে গতরে ব্যস্ত হাতে
মজুরিতে ভাগ বসাচ্ছে কারা তোমার কোলকাতাতে
তাদেরই গাইয়ে তুমি সাজানো জলসায়
গেয়ো সুর ভেসে বেড়ায় শহুরে হাওয়ায়
বুদ্ধি আমার শাণিয়ে নেওয়া
বুদ্ধি আমার শাণিয়ে নেওয়া
কিছুই দৃষ্টি এড়ায় না
এদিক ওদিক বেড়ায় তবু
ভুলের পাড়া বেড়ায় না
দার্জিলিঙে, রাজস্থানে
গণ্ডগোলে, গ্যাঙটকে
খুনখারাপী ধরতে ছুটি
লোভীর লালা লকলকে
গল্পে তিনি ভালৈ ছিলেন
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত্, শীত
আমার গল্প সঙ্গে নিয়ে
চলে গেলেন সত্যজিত্
তপেশ আমার সঙ্গী ছিলো
সঙ্গী ছিলেন লালমোহন
বয়স একটু বাড়তি হলেও
কম ছিল না টাটকা মন
উটের পিঠে সওয়ার হয়ে
নাস্তানাবুদ হলেন খুব
লালমোহনের কলমখানা
অনেক লিখে এখন চুপ
গল্পে তিনি ভালৈ ছিলেন
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত্, শীত
জটায়ুকে সঙ্গে নিয়ে
চলে গেলেন সত্যজিত্
অনেক দেখা, অনেক জানা
অনেক কিছু করার পর
স্মৃতির মধ্যে থমকে থাকা
আমার পক্ষে কষ্টকর
লালমোহন আর তোপসেটারও
একই দশা দেখতে পাই
ইচ্ছে করে সবাই মিলে
নতুন কিছু গড়তে যাই
তখন আবার গল্প হবে
রহস্যতে ভর করে
ছুটবে আবার কল্পনাটা
সত্যজিতের পথ ধরে৷৷
সারারাত জ্বলেছে নিবিড়
সারারাত জ্বলেছে নিবিড়
ধুসর নীলাভ এক তারা
তারই কিছু র ংনাও তুমি
তারই কিছু র ংনাও তুমি
শহরে জোনাকি জ্বলে না নয়তো
কুড়োতাম সে আগুন নীল হয়তো
যা কিছু নেই
নাই বা হল সব পাওয়া
না পাওয়ার রঙ নাও তুমি
না পাওয়ার রঙ নাও তুমি
বড় বেরঙীন আজকাল
কাছাকাছি
কোন রঙ পাইনা,
তাই দিতে পারি না কিছু
কিছুই রাঙানো হল না নয়তো
আগামীর রঙে ছোপাতাম হয়তো
এই মলিন আর এ ধুসর পথ চাওয়া
এ চাওয়ার রঙ নাও তুমি
আগামীর রঙ নাও তুমি
কখনও সময় আসে জীবন মুচকি হাসে
কখনও সময় আসে জীবন মুচকি হাসে
ঠিক যেন প’ড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা
অনেক দিনের পর মিলে যাবে অবসর
আশা রাখি পেয়ে যাবো বাকি দু-আনা৷
আশা নিয়ে ঘর করি
আশায় পকেট ভ’রি
প’ড়ে গেছে কোন্ ফাঁকে চেনা আধুলি
হিসেব মেলানো ভার
আয়-ব্যয় একাকার
চ’লে গেল সারাদিন এল গোধূলি
সন্ধে নেবে লুটে
অনেকটা চেটেপুটে
অন্ধকারের তবু আছে সীমানা
সীমানা পেরোতে চাই
জীবনের গান গাই
আশা রাখি পেয়ে যাবো বাকি দু-আনা৷
কতটা পথ পেরোলে তবে পথিক বলা যায়
কতটা পথ পেরোলে তবে পথিক বলা যায়
কতটা পথ পেরোলে পাখি জিরোবে তার দায়
কতটা অপচয়ের পর মানুষ চেনা যায়
প্রশ্নগুলো সহজ, আর উত্তরও জানা।।
কত বছর পাহাড় বাঁচে ভেঙেগ যাবার আগে
কত বছর মানুষ বাঁচে পায়ে শিকল পড়ে
ক’বার তুমি অন্ধ সেজে থাকার অনুরাগে
বলবে তুমি দেখছিলে না তেমন ভালো করে।।
কত হাজার বারের পর আকাশ দেখা যাবে
কতটা কান পাতলে পরে কান্না শোনা যাবে
কত হাজার মরলে তবে মানবে তুমি শেষে,
বড্ড বেশী মানুষ গেছে বানের জলে ভেসে ।।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।