আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদায়, সুমন ভাই

অ আ একজন অসম্ভব ভালো মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। স্ত্রী-পূত্র-কণ্যা নিয়ে ২০১১'র শেষ দিনটি তার আর অনুভব করা হলো না। এইতো সেদিন ২৪ তারিখ তার ঘরে গিয়েছিলাম, প্রিয় মানুষটি বললেন 'চলো তোমাকে বাইরে খাওয়াই'। রেস্টুরেন্টে বসে ইতং বিতং ক'তো কথাই না হলো। আমাকে ফুসলালেন দেশে চলে আসবার জন্যে, অনেক সম্ভবণা থাকা সত্বেও যিনি কখনো বিদেশ যাবার চিন্তাও করতেন না।

করবেনই বা কেন, শহীদ বুদ্ধিজীবি মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর পুত্র, ডক্টর আনিসুজ্জামানের জামাই আমাদের সুমন ভাই ট্রাডিশনাল ক্যারিয়ার চিন্তার অনেক উর্দ্ধেই তো ছিলেন। আমার জীবনে তার অবদান এতো যে বলে শেষ করা যাবে না। আপন বড় ভাই নেই আমার, কিন্তু ছোটভাইয়ের মতোই তিনি দেখতেন আমাকে। এবারও রেস্টুরেন্টে খাওয়া শেষে যখন বললাম 'বিলটা আমি দেই?' স্মিত হেসে তিনি বললেন, 'সাহস থাকলে চেষ্টা করো'। আমার সে সাহস হয় নি, কাল পত্রিকার পাতায় যখন তার হাস্যোজ্বল মুখটা দেখলাম, বাকি সব ঝাপসা হয়ে মাথায় চিন্তা এলো, কি ব্যাপার, সুমন ভাইয়ের ছবি কেন পত্রিকায়? আজকের নোংরা পলিটিক্সের যুগে যেখানে সবাই নিজের কানেকশন ক্যাশ করতে ব্যাস্ত, সেখানে এসব থেকে দুরেই থাকতেন তিনি।

ছবির নিচে দুঃসংবাদটা পড়ে তাই স্থাণুর মতো বসে ছিলাম কিছুক্ষণ। এক ধরনের অবসাদ ঘিরে আছে আমাকে সেই থেকে। সকালে তার মুখ যখন দেখলাম সাদা কাপড়ে আচ্ছাদিত, নিজেকে সামলে রাখতে পারি নি। শুচি ভাবী চিনলেন, বললেন, এইতো সেদিনও তো উচ্ছাস করে তিনি বলেছেন, আরিফ এসেছে, আরিফ এসেছে। পুরনো অনেক বন্ধুকেও তিনি নাকি খুঁজে পেয়েছিলেন ইদানীং, 'সবাই কেমন যেন ডাকছে আমাকে'... এমনটাই বললেন শুচি ভাবী।

অকালপ্রয়াণে বেদনার্ত তাঁর দুটি সন্তানও। প্রধানমন্ত্রী আসবার তোড়জোড় শুরু হয়েছিলো যখন আমি বার হয়ে এসেছি, গার্ড সৈনিকেরা নিরাপত্তা নিয়ে বড্ডো বাড়াবাড়ি শুরু করে দিয়েছে ততোক্ষণে। বিষণ্ণতা নিয়েই দেশ থেকে এবারের মতো বিদায় নিচ্ছি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।