আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইত্তেফাকের নিউজ: লবণ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান করলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। নিউজটা কতোটা সত্য???

এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র দুই রকমের মানুষ আছে। ভালো মানুষ যারা ভালো কাজ করে। আর খারাপ মানুষ যারা খারাপ কাজ করে। এটাই মানুষদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য। আর কোন পার্থক্য নেই... আমি ভাল মানুষ...☺☺☺

লবণ কি আসলেই ক্ষতিকর? ফাস্টফুড ও রেস্তোরাঁয় কম খাওয়ার পরামর্শ ।

। ইত্তেফাক রিপোর্ট । । টাকা-পয়সা খরচের প্রয়োজন নেই। একটু সচেতন হলেই মরণ ও জটিল ব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ।

লবণ কম খেলে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হার্ট এ্যাটাক, হার্ট ও কিডনি ফেইলিয়রের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই সকল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে না। লবণ কম খাওয়ার অভ্যাস করার বিষয়ে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করলে এই সকল মরণ ব্যাধির অভিশাপ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারের স্বাস্থ্য সার্ভিসের জোরালো কোন কর্মসূচি নেই। মঙ্গলবার বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে হাইপারটেনশন কমিটি ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এক প্রেস ব্রিফিং-এ খ্যাতিমান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব তথ্য তুলে ধরেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, অধিক লবণ গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব দেশের জনগোষ্ঠী লবণ কম খায় তাদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগের উচ্চ রক্তচাপ থাকে না। নেপাল ও ব্রাজিলের জনগণ লবণ না খাওয়ায় তাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি নেই। যে সকল দেশে কিংবা জায়গার মানুষ লবণ বেশি গ্রহণ করে ঐ সকল দেশে উচ্চ রক্তচাপ মহামারী আকার ধারণ করেছে। জাপানে উচ্চ রক্তচাপ মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করেছে।

সেখানকার প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অর্ধেকই উচ্চ রক্তচাপের শিকার বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান। হৃদরোগ, স্ট্রোক, পক্ষাঘাত, অন্ধত্বসহ নানা জটিল রোগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণে হাড়ের ক্যালসিয়াম ক্ষয়ে হাড় পাতলা হয়ে যায়। এছাড়া পাকস্থলীর ক্যান্সার, শারীরিক স্থূলতা হতে পারে। অ্যাজমা রোগ হওয়ার জন্য অধিক লবণ গ্রহণ অন্যতম কারণ বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে এখন হৃদরোগ মহামারীর আকার ধারণ করেছে। হৃদরোগে মৃত্যুর হার সর্বাধিক। বেশিরভাগ জনগণই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপের কারণে। এদেশে হোটেল-রেস্তোরাঁয় অনেকে সপরিবারে খাওয়ার বিষয়টি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। চাইনিজ, ফাস্ট ফুড, স্যুপ, তেলে ভাজা খাবার, কাবাবসহ বিভিন্ন ধরনের মজাদার খাদ্যে এত বেশি লবণ থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

এসব খাবারের মধ্যে ২০ গ্রামের বেশি লবণ থাকে অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত ৫ গ্রামের চারগুণ বেশি। শিশু-কিশোরদের জন্য এই সব খাদ্য আরও ভয়াবহ। অল্প বয়স্কদের উচ্চ রক্ত চাপের হার কম নয়। হোটেল রেস্তোরাঁয় বেশি পরিমাণে খাওয়ার কারণে শিশু-কিশোররা মোটা হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ভাত তরকারির সাথে একটু আলগা লবণ অধিকাংশ লোকের পছন্দ।

আলগা লবণ খাওয়া বিপজ্জনক এবং উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার এটি অন্যতম বলে চিকিৎসকরা জানান। শুঁটকি মাছ ও নোনা ইলিশে প্রচুর লবণ থাকে। কেচাপ, সয়াসস, টেস্টিং সল্ট ও সালাদ বানানোর উপকরণ হিসাবে লবণ ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে লবণের কোন প্রয়োজন নেই বলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ জানান। যেভাবে লবণ কম গ্রহণ করা যায় খাবারের সাথে লবণ খাবেন না, টেবিলে লবণদানি রাখবেন না, রান্না করার সময় অল্প লবণ ব্যবহার, ফাস্টফুড, রেস্টুরেন্টে কিংবা রেস্তোরাঁয় খাবার কম খাওয়া, টিনজাত স্যুপ, সবজি, মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত পনির, মাংস ও হিমায়িত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা, খাদ্যকে সংরক্ষণ করার জন্য লেবুর রস, ভিনেগার, কাঁচা রসুন ও মসলা ব্যবহার, কেচাপ, সয়াসস, সালাদ বানানোর উপকরণ কম ব্যবহার, কাঁচা ফল বা শাক-সবজি খাওয়ার সময় লবণ দিয়ে না খাওয়া, লবণবিহীন ক্র্যাকার্স, পপকর্ন ও বাদাম খাওয়া, খাদ্য নির্বাচনের পূর্বে কম লবণ ও সোডিয়াম কম সমৃদ্ধ খাবারসমূহ নির্বাচন, ঘরে-বাইরে উচ্চ লবণযুক্ত খাবার পরিহার সন্তানদের শৈশব থেকেই কম লবণ যুক্ত খাদ্য খাওয়ানোর অভ্যাস করার বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ পরামর্শ দিয়েছেন।

লবণ কম খাওয়ার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাইপারটেনশন কমিটি ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এইবারের বিশ্ব লবণ সচেতনতা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য হলো লবণ কম খান সুস্থ থাকুন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি হার্ট ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে খাদ্য উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারীরা সচেতন হলে খাদ্যে লবণের ব্যবহার কমে যাবে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রেস ব্রিফিং-এ বক্তব্য রাখেন, জাতীয় অধ্যাপক ও হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, হাইপারটেনশন কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আর কে খন্দকার, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কেএমএইচএস সিরাজুল হক ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টোবাকো কন্ট্রোল টেকনিক্যাল কমিটির উপদেষ্টা ড. সোহেল রেজা চৌধুরী।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.