গণতন্ত্র হল এমন এক অস্তিত্বহীন মদ, যাতে সবাই মাতাল, কিন্তু কেউ কখনো পান করে নি।
ভাষা শহীদদের কথা মনে করলেই কয়েকটি নাম আমাদের মাথায় আসে- সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর আরও অনেকে। কিন্তু আমরা ওই ‘আরও অনেকে’র নাম জানার চেষ্টা করেছি? ‘আরও অনেকে’র আড়ালে হারিয়ে যাওয়া একটি নাম ‘আবদুল আওয়াল’। তিনি একজন রিক্সাচালক, হরিজন- তাই হয়তো আমরা তকে মনে রাখার প্রয়োজন বোধ করি নি। জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক বলেছিলেন, ‘বাংলা ভাষাটা বাচাইয়া রাখছে চাষাভুষা, মুটে মজুর- এরা কথা কয় দেইখাইত কবি কবিতা লিখতে পারছে।
’* যাদের জন্য কবি কাবিতা লিখতে পারছে ভাষার প্রতি তাদেরও আকুতি রয়েছে, ভাষার জন্য প্রানদানকারীদের মধ্যে তাদেরও প্রতিনিধি রয়েছে।
আবদুল আওয়ালের কথা আমি আগে কোথাও পড়ি নি। বাংলা একাডেমীর ‘চরিতাভিধান’ ঘাটতে গিয়ে তার পরিচয় পেলাম। জানলাম তার আত্মদানের কথা। তার জন্ম ১৯২৬ সালে, আর ছাব্বিশ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার পিতার নাম মোহম্মদ হাশিম। তার বাড়ী ছিল ১৯, হাফিজুল্লাহ রোড, ঢাকা। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতার উপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
মোট কতজন নিহত হয়েছিলেন, তাদের পরিচয় তার পূর্ণ বিবরণ অবশ্য পাওয়া যায় না। কারন বিক্ষোভের পর পুলিশের গুলিতে নিহত অনেকের লাশ ওই রাতেই পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মর্গ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং গুম করে ফেলে।
তবু যাদের জানতে পেরেছি আর যাদের জানতে পারি নি সবার প্রতি রইল শ্রদ্ধা।
আপডেট: বাংলা একাডেমীর চরিতাভিধানে লেখাছিল তিনি নিহত হন ২২ ফেব্রুয়ারী। আমি ভেবেছিলাম মূদ্রণপ্রমাদ। কিন্তু পরে জানতে পারলাম ২১ ফেব্রুয়ারী ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে পরদিন মিছিল হয়। পুলিশ সেখানেও গুলি চালায়।
তখন আবদুল আওয়াল নিহত হন। সেদিন অহিউল্লাহ নামক আট বছর বয়সী এক বালক পুলিশের গুলিতে নিহত হন। অহিউল্লাহ সম্ভবত মিছিল দেখতে বেরিয়েছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।