আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেস স্টাডি ঃ ০২ উপকূলীয় অঞ্চলে এক কিশোরীর নিজের কথা স্কুল যাবি বাড়িতে আইয়া উপোস থাকতে পারবি ?



কেস স্টাডি ঃ ০২ উপকূলীয় অঞ্চলে এক কিশোরীর নিজের কথা স্কুলে যাবি বাড়িতে আইয়া উপোস থাকতে পারবি ? আসমা বেগম। বয়স ১৪ বছর। পিতা মৃত নুর হোসেন , মায়ের নাম কনিমন ভানু। পড়ালেখা জানেনা। পাঁচ ভাই-বোন,বড় ভাই বাচ্চু মিয়া রিক্সাচালায়।

বড় বোন জেসমিন পড়ালেখা করতে পারে নাই, ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। মেজো ভাই চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করে পরে আর পড়ে নাই। এখন নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে। ছোট ভাই রুবেল টাকা পাওয়ার আশায় (৯) মাঝে মাঝে স্কুলে যায়। বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় মা সংসারে কাজ করত।

চার বছর পূর্বে ব্লাড ক্যান্সারে বাবা মারা যাবার পর এখন অন্যের বাড়িতে কাজ করে। বড় ভাই অসুস্থতার কারণে কোন কাজ করতে পারে না,প্রায়ই ডাক্তার দেখাতে হয়, বাঁচার কোন আশা নেই। আসমারা তিনবেলা ঠিকমত খেতে পারেনা। ঈদ উৎসব কাকে বলে বাবা মারা যাওয়ার পর তাও বলতে পারেনা, নতুন কাপড় দূরে থাক কোন সেমাই পর্যন্ত রান্না হয়না। পরের বাড়ির খাবার খাই।

বাড়ির কাছাকাছি স্কুল কিন্ত কোনদিন স্কুলে যাইনি আসমারা। আসমা জানান, মাকে জিজ্ঞাসা করলে মা বলেন আমার বড় ভাইয়ের আকিকার সময় উপহার পাওয়ার আসায় ধার করে টাকা এনে বড় ধরনের খাওয়ান দেয়া হয় বাবা কিন্তু খাওয়ায় কোন লাভ হয় নাই বরং লোকসান হয়েছে। বাবা দেনার দায়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। আমরা তখন খুবই ছোট, আমার বয়স ছিল মাত্র চার বছর। মা ভীষন বিপদে পড়েন, উপায় না দেখে সংসার চালানোর জন্য মা আমাদের নিয়ে মুগ, মরিচ ও ধান টুকানো শুরু করে।

এখন এ কাজ আমরা করি, মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। এভাবেই আমাদের সংসার চলে। তার স্কুলে যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। আসমা বলেন, আমার সাথের ছেলেমেয়েরা যখন স্কুলে যায় তখন আমি স্কুলে যেতে চাইলে মা বলত,‘স্কুলে যাবি বাড়িতে আইয়া উপোস থাকতে পারবি’ ? বরং স্কুলে না যাইয়া কাজ কর দুবেলা ভাত খাইতে পারবি। ভাইয়েরা বলত, তুই যদি ছরা ঠুকাতে না যাস তাহলে তোর ভাত নাই।

কথা না বাড়াইয়া তাড়াতাড়ি ক্ষেতে যা, না যাইলে তোরে আস্ত রাখুম না। ভয়ে আমি কাজে চলে যাই পড়ালেখার কথা আর কাউকে বলি না। আসমা কোন শখ নাই তবে শুক্রবার কারও বাড়িতে টেলিভিশনে সিনেমা দেখতে ভাল লাগে। এই জন্য ভাইদের হাতে অনেক মার খাই। জীবনে কি হতে চাই বলতে পারি না।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।