আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংসদ অধিবেশনের প্রাক্কালে জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ-এর বিবৃতি

আমি সেই দিন হব শান্ত. . .

জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর নতুন সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে এবং নবম জাতীয় সংসদের প্রারম্ভিক অধিবেশনের প্রাক্কালে জনগণের উদ্দেশ্যে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরছি। আজ এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ এদেশের উপর তার একচ্ছত্র আধিপত্য রক্ষা ও বিস্তারের লক্ষ্যে এক নীলনকশা বাস্তবায়ন করে চলেছে। ১/১১-র ক্যু-দেতা হতে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত সবকিছুই এই নীলনকশার অধীনে পরিচালিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। আঁতাতের মাধ্যমে মহাজোট এই নীলনকশা বাস্তবায়নের প্রধান ঠিকাদার হয়েছে। যদিও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্বিসহ শাসন থেকে মুক্তি পেতে “অন্ততঃ মন্দের ভালো হতে পারে” আশা করে জনগণ মহাজোট-মুখি হওয়ায় তাদের “সোনায়-সোহাগা” হয়েছে।

কিন্তু, মহাজোট সরকার যে সাম্রাজ্যবাদ-ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের ঠিকাদারি নিয়েছে তা ইতিমধ্যেই উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। আমরা নির্বাচনপূর্ব এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, ফখরুদ্দিন সরকার নির্বাচনের মধ্যদিয়ে এমন এক বশংবদ নির্বাচিত সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট, যারা তাদের দায়মুক্তি ও বৈধতাদান করবে। ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিতর্কে না গিয়েও বলা যায়, দায়মুক্তির প্রশ্নে মহাজোটের সাথে সাম্রাজ্যবাদ-স¤প্রসারণবাদের নিয়ন্ত্রণে ফখরুদ্দিন সরকারের পূর্বসমঝোতা ছিল দিবালোকের মত সুস্পষ্ট। সংসদের প্রথম অধিবেশনে নীলনকশাজাত, দেশবিক্রেতা, স্বৈরাচারী ফখরুদ্দিন সরকারের দায়মুক্তি এবং গণবিরোধী অপকর্মের বৈধতাদানের জন্য মহাজোট সরকার যে তোড়জোড় শুরু করেছে, তা সেই পূর্বসমঝোতাকেই প্রমাণ করছে। মহাজোট সরকার দায়মুক্তির ব্যবস্থা করছে তা-ই নয়, তারা ফখরুদ্দিন সরকারের নীলনকশাজাত অপকর্মগুলোর বৈধতাদান করারও উদ্যোগ নিচ্ছে।

সাম্রাজ্যবাদী নীলনকশার সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসাবে চরম ফ্যাসিস্ট “সন্ত্রাস বিরোধী আইন”, শ্রমিক বিরোধী “শ্রম আইন”, পাটকল বন্ধ, অগণতান্ত্রিক ও গণরাজনীতি বিরোধী “গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ”, জাতীয়স্বার্থ বিরোধী গ্যাসব্লক ইজারা, কয়লা নীতি, কৃষকবিরোধী হাইব্রীড বীজ বিক্রি ইত্যাদি জঘন্য অপকর্মগুলো অনুমোদন করতে যাচ্ছে এই সরকার ও সংসদ। আমরা মনে করি, ফখরুদ্দিন সরকারের দায়মুক্তি ও অপকর্মের বৈধতাদান করা হলে, তা দেশবিক্রি, বিদেশী মদদে মতা জবরদখল, গণবিরোধী জরুরী অবস্থা ও স্বৈরাচারকে সাংবিধানিকভাবে রা করার ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যদিও একথা সত্য, সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের দালাল এদেশের শাসকশ্রেণীর এই সংবিধান শুরু থেকে জাতীয় পরাধীনতা, হত্যা, অবৈধ মতা দখল, স্বৈরাচার, ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারসহ জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী ও অগণতান্ত্রিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ও বিকশিত হয়েছে। আজ আবারো মহাজোট সরকার ও নবগঠিত সংসদ সেই পুরনো প্রতিক্রিয়াশীল পথে সংবিধান সংশোধন করতে যাচ্ছে, যা এই রাষ্ট্রকে আরো বেশী প্রতিক্রিয়াশীল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করবে। এই সংবিধান সংশোধনী আবারো প্রমাণ করবে এই সরকার, সংসদ, সংবিধান ও রাষ্ট্র জনগণের উপর সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের দালাল বড় পুজিপতি ও সামন্ত শাসকশ্রেণীর প্রতিক্রিয়াশীল একনায়কত্বের হাতিয়ার ছাড়া অধিক কিছু নয়।

আর এ সবকিছুই বর্তমান প্রতিক্রিয়াশীল সরকার, সংবিধান ও রাষ্ট্র উৎখাত করে জনগণের প্রকৃত স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সরকার, সংবিধান ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার গণদাবীকে আরো বেশী ন্যায্য, আরো বেশী জোরালো করে তুলছে। আমরা সকলেই জানি, এক/এগারোপূর্ব জ্বলন্ত উনুন থেকে এদেশ এক/এগারো পরবর্তী ফুটন্ত কড়াইয়ে পড়েছিল। জনগণ এই ফুটন্ত কড়াই থেকে মুক্তির আশায় ভোট দিয়েছে। জনগণ ফখরুদ্দিন সরকারের দায়মুক্তি এবং তার অপকর্মের বৈধতাদানের জন্য কাউকে ম্যান্ডেট দেয়নি। জনগণ ফখরুদ্দিন সরকারের কণ্ঠরোধকারী জরুরী শাসনে নিপীড়িত, নির্যাতিত ও শোষিত হয়েছে।

জনগণ এই অপরাধের বিচার চায়। এই মহাজোট সরকার ও সংসদ যদি জনগণের আকাঙ্খাকে উপো করে, সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের নীলনকশা অনুসারে সংবিধান সংশোধন করে, ফখরুদ্দিন সরকারের দায়মুক্তি এবং দেশ-জাতি-জনগণবিরোধী কর্মকাণ্ডের বৈধতা দান করে, তবে তা হবে জাতি ও জনগণের সাথে এক চরম বেঈমানি। মহাজোট সরকার উপরোক্ত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক নীলনকশা বাস্তবায়নের ঠিকাদার হিসাবে ইতিমধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ফখরুদ্দিন সরকারের ধারাবাহিকতায় সাম্রাজ্যবাদী নীলনকশার সংস্কারের অংশরূপে দেশে উপজেলা নির্বাচন করা হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদ এবং তার দালাল শাসকশ্রেণীর স্বার্থরক ভগ্নদশাগ্রস্ত দমন-নিপীড়নমূলক রাষ্ট্র ও শাসন ব্যবস্থাকে মজবুত করার ল্েয এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভোটার অনুপস্থিতি, ব্যালটবাক্স ছিনতাই, হানাহানির এ নির্বাচন মহাজোট ও শাসকশ্রেণীর রাজনীতির “দিন বদল”-এর স্বরূপ প্রকাশ করে দিয়েছে। আমরা জানি, বৃটিশ উপনিবেশিক আমল থেকেই স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা জনপ্রতিনিধিত্বের নামে উপনিবেশবাদী-আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সহায়ক প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিরূপে কাজ করেছে। সুতরাং, এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জনগণের কোন যথার্থ স্থানীয় প্রতিনিধি ও সরকার নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ীণ। এ নির্বাচনে জনগণের কোন স্বার্থ নেই। এই নির্বাচন কেবলমাত্র ব্যাপক-জনগণের উপর দমন-নিপীড়নমূলক রাষ্ট্র ও শাসন ব্যবস্থাকেই আরো বেশী শক্তিশালী করবে।

রাষ্ট্রের উপরোক্ত সংস্কারের পাশাপাশি সরকার নীলনকশার অর্থনৈতিক পদপেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। একদিকে ভারতীয় পণ্যের ডাম্পিং এর কারণে দেশীয় টেক্সটাইল ও চিনি শিল্প ধ্বংস হতে বসেছে। অপরদিকে, মহাজোট সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের “অত্যাশ্চর্য স্বপ্ন” দেখাচ্ছে, যার মূলকথা হলো মোবাইল ফোন, গার্মেন্টস শিল্প মার্কা সাম্রাজ্যবাদ-স¤প্রসারণবাদ নির্ভর, শ্রমদাসত্ব ও সম্পদ পাচারকারী আইটি ব্যবসার স¤প্রসারণ। সরকার ইতিমধ্যে দেশের কয়লা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার দেশবেচা উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা জাতীয় শিল্প-কৃষি ধ্বংসকারী এই নীলনকশার অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিরোধীতা করি।

সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের সামরিক নীলনকশায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বাংলাদেশসহ দণি এশিয়ায় “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধে”র নতুন ত্রে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা। ফখরুদ্দিন সরকার শেষ মুহূর্তে জনগণকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে আগামী ফেব্র“য়ারিতে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সামরিক মহড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসামে অনুষ্ঠিতব্য “সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ” বিরোধী এই মহড়া সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের নীলনকশা বিশেষতঃ সামরিক নীলনকশা বাস্তবায়নের এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত। এর অর্থ হলো ভারতীয় জাতিগত স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর যুদ্ধে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যায় হস্তপে করা। এটা অনিবার্যভাবে বাংলাদেশকে ভারতীয় জাতিগত স্বাধীনতাকামীদের আক্রমণের ল্েয পরিণত করবে।

শুধু তা-ই নয়, ভারত বাংলাদেশের ভূমিতে ভারত বিরোধী সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের অস্তিত্বের যে দাবী করছে, এই মহড়া হলো তার পরিষ্কার স্বীকৃতি। এর ফলে “তালেবান সন্ত্রাসী”দের ধ্বংস করার নামে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে মার্কিন আক্রমণের মত একই যুক্তিতে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে ভারতীয় আক্রমণের পথ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হবে। এভাবে তা বাংলাদেশকে তথাকথিত “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী” যুদ্ধ েেত্র পরিণত করবে। আওয়ামীলীগ কর্তৃক ইশতেহারে “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী দণি এশীয় টাস্কফোর্স” গঠনের ঘোষণা উক্ত নীলনকশারই অংশ। আমরা দেখছি, শেখ হাসিনা এই টাস্কফোর্স গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছেন, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে আলোচনা করতে ঢাকা আসছে।

আপনাদের মাধ্যমে আমরা সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, এদেশের সর্বস্তরের জনগণ আগাগোড়া তথাকথিত সাম্রাজ্যবাদী “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধ”-এর ঘোর বিরুদ্ধে। এদেশের মানুষ কিছুতেই বাংলাদেশকে এই অন্যায় যুদ্ধের অংশীদার করা, এদেশের জনগণের উপর অন্যায় যুদ্ধের বোঝা চাপানো মেনে নেবে না। আমরা লক্ষ্য করছি, মহাজোট সরকার উল্লেখিত নীলনকশা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণের জনপ্রিয় দাবীগুলির প্রশ্নে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করছে। আপনারা জানেন, কৃষক সার, ডিজেলসহ কৃষি-উপকরণের দাম কমার আশায়, শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির আশায়, জনগণ চাল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমার আশায় ভোট দিয়েছে। কিন্তু, আমরা দেখলাম, যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের মূল্য অর্ধেকেরও নীচে নেমে গেছে, অনেক হাঁক-ডাক দিয়ে সরকার ডিজেলের দাম কমিয়েছে লিটারে মাত্র ২ টাকা।

ইউরিয়া ব্যতীত যেসব সারের দামে সরকার ভর্তুকী দিচ্ছে, গত বছর কৃষকরা অত্যাধিক দামের কারণে সেসব সার ব্যবহার করেনি। ফলে আমদানীকারকদের বিপুল সার অবিক্রিত থেকে যায়। ইতিমধ্যে এসব সারের আন্তর্জাতিক দাম প্রায় অর্ধেক হ্রাস পেয়েছে। কৃষকের নাম করে এসব সারের পেছনে ভর্তুকীর দেয়ার অর্থ হলো আমদানীকারকদের উচ্চমূল্যে কেনা অবিক্রিত সার বিনা তিতে বিক্রির ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ, জনগণের অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে গুটিকতক সার আমদানীকারকদের ব্যবসা ও মুনাফা রার স্বার্থে।

এই বক্তব্য আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যখন দেখা যায়, কৃষকের পে যে সার না হলেই চলে না, সেই ইউরিয়া (কৃষকের মোট সার ব্যবহারের প্রায় ৮০% হলো ইউরিয়া) সারে “কৃষক দরদী” সরকার কোন ভর্তুকী দেয় নি। আমরা আরো দেখলাম, ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার মূলো ঝুলিয়ে ভোট আদায় করলেও, বাজারে চালের দাম ২ থেকে ৭ টাকার বেশী কমেনি। এটাও ঘটেছে কৃষকের নাম করে চালের দর পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা মজুদ ছেড়ে দেয়ার কারণে। কিন্তু, চাল ছাড়া অধিকাংশ জিনিসেরই দাম কমেনি। অথচ বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছে, তার সরকার দ্রব্যমূল্য কমাতে ব্যবসায়ীদের উপর কোন হস্তপে করবে না।

সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন, যদি অতীতে ব্যবসায়ীরা দ্রব্যের ন্যায্য দাম আদায় করে থাকে, তাহলে তারা নির্বাচিত হলে দাম কমাবার দাবী কিভাবে করলেন? আর এখন যদি ব্যবসায়ীরা অন্যায্য দাম আদায় করে থাকে, তবে ব্যবসায়ীদের উপর হস্তপে করা কেন ন্যায্য কাজ বলে বিবেচিত হবে না? জনগণ আরো আশা করেছিলেন দেশী-বিদেশী চরম দুর্নীতিবাজ ও দেশের সম্পদ লুটকারীদের বিচার ও শাস্তি হবে। কিন্তু, আমরা দেখছি, ফখরুদ্দিন সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান মহাজোট সরকারও তাদের নানাভাবে পুনর্বাসন করছে। এভাবে মহাজোট সরকার তার যাত্রা শুরু করেছে জনগণের সাথে প্রতারণার মধ্যদিয়ে। তারা মতায় গিয়ে জনগণের জনপ্রিয় দাবীগুলিতে দেয়া তাদের প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করছে। এই সরকার যে জনগণের নয়, বরং অসৎ, মজুদদার, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক ও প্রতিনিধি তা উন্মোচিত হয়ে পড়ছে।

মহাজোট সরকার একদিকে জনগণের আকাঙ্খার প্রশ্নে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করছে, অপরদিকে সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের নীলনকশার রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক, সামরিক সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা মনে করি, যদি মহাজোট সরকার জাতি ও জনগণের প্রত্যাশার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার পথ পরিহার না করে, যদি তারা জনগণের জরুরী প্রয়োজন এবং জাতীয় স্বার্থ রার পথ গ্রহণ না করে, কিছু দিনের মধ্যেই তারা জনগণের সামনে “সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের ঠিকাদার” হিসাবে পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত হয়ে যাবে এবং জনগণ এই বিশ্বাসঘাতকদের উৎখাত কামনা করবেন। তখন জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের সংগ্রাম সে লইে পরিচালিত হবে। প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনারা জানেন, আজ ২৪ জানুয়ারি মহান গণঅভ্যুত্থান দিবস। আজ এইণে আমরা শহীদ আসাদ, মতিউরসহ এদেশের জাতীয় মুক্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যাঁরা আত্ম-বলিদান করেছেন, তাঁদের জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।

ঊনসত্তরের এই দিন এদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এক উজ্জ্বল মাইলফলক। কিন্তু, জনগণের স্বপ্ন আজও বাস্তবায়িত হয়নি, বরং আমরা এক সংকটময়কাল অতিক্রম করছি। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণকে আমরা আহাবান জানাই, আসুন, গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদদের সেই আত্মবলিদান ও মুক্তিকামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, সোচ্চার কণ্ঠে আওয়াজ তুলি: -- সাম্রাজ্যবাদী ও স¤প্রসারবাদী নীলনকশা বাস্তবায়নে জড়িত ফখরুদ্দিন সরকারের দায়মুক্তি ও বৈধতাদান বন্ধ কর! স্বৈরাচারী গণবিরোধী ফখরুদ্দিন সরকারের বিচার ও শাস্তি চাই! -- গ্যাসব্লক ইজারা, কয়লানীতি, পাটকল বন্ধ, হাইব্রীড বীজ বিক্রি, শিানীতি, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ, শ্রম ও সন্ত্রাসবিরোধী কালো আইনসহ এই সরকারের গণবিরোধী অধ্যাদেশ ও কর্মকাণ্ড বাতিল কর! -- শ্রমিকের মজুরি বাড়াও! -- সার, ডিজেল, কৃষি উপকরণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাও! -- অবিলম্বে ভারত-বাংলাদেশ নীলনকশার সামরিক মহড়া বাতিল কর! -- “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী দণি এশীয় টাস্কফোর্স” গঠনের সামরিক নীলনকশা রুখে দাঁড়াও! -- জনগণের সম্পদ লুটকারী দেশী-বিদেশী দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিচার ও শাস্তি চাই! -- জাতীয় শিল্প রা কর! সাম্রাজ্যবাদ-স¤প্রসারণবাদ নির্ভর অর্থনীতি নয়, জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোল! -- রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসরাইলি জায়নবাদী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি কর! সংসদের প্রথম অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ কর! -- সাম্রাজ্যবাদী ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদী নীলনকশা বাস্তবায়ন প্রতিহত কর! -- প্রকৃত স্বাধীন-গণতান্ত্রিক সরকার, সংবিধান এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অসমাপ্ত বিপ্লবী কর্তব্য সম্পন্ন কর! আমাদের সংগ্রামে সবসময় আপনাদের পাশে পাব এই কামনা করছি। রাতুল বারী নির্বাহী সদস্য, আহাবায়ক কমিটি জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ অস্থায়ী কার্যালয়: ৮৪/ক/এ, সাদেক নগর, রায়েরবাজার, ঢাকা-১২০৯। মোব.০১৭১২৬৭০১০৯


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।