লাইভ ওয়েব টিভি এর ব্লগ
[ডিসেম্বর ২০০৮ এ প্রকাশিত কমপিউটার জগৎ ম্যাগাজিনের সফটওয়্যার বিভাগের উপর লেখা এই প্রতিবেদনটি এখানে পাঠকদের জন্য দেয়া হয়েছে। ]
--------------------------------------------------------------------------
তথ্যপ্রযুক্তি যতই এগুচ্ছে মানুষকে ততই সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে এ সংশ্লিষ্ট পণ্য। আর তাই কমপিউটারের বিভিন্ন সুবিধা সব মহলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন পোর্টেবল ডিভাইসের উপযোগী অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। যা খুব সহজে বহনযোগ্য এবং এসব ডিভাইস বা সফটওয়্যার আমাদের অনেক কাজকে সহজ করে দিয়েছে। ঠিক এমনই এক অসাধারণ অ্যাপ্লিকেশন হচ্ছে পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট।
এটি সহজে পেনড্রাইভে ধারণ করা যায়। পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট সম্পর্কে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক জাহান ।
কমপিউটার ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের বাইরে গিয়ে বা চলমান অবস্থায় কিছু কাজ কমপিউটারে করতে হয়। যাদের ল্যাপটপ আছে তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কাজ করা সম্ভব। কিন্তু যাদের ল্যাপটপ নেই, তাদেরকে ভিন্ন পরিবেশে কাজ করতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়।
কারণ ভিন্ন পরিবেশের অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপ্লিকেশন অচেনা মনে হতে পারে অর্থাৎ কম্প্যাটিবল মনে নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে এই পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনটি। পেনড্রাইভে করে এই অ্যাপ্লিকেশনটি নিয়ে গিয়ে ভিন্ন পরিবেশের যেকোনো কমপিউটারে বসলে আপনার প্রয়োজনীয় ফাইল বা অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে অচেনা মনে হবে না।
পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট ব্যবহারে যেসব সুবিধা পাবেন
০১. পোর্টেবল এন্টিভাইরাস,
০২. পোর্টেবল ফায়ারফক্স,
০৩. পোর্টেবল Gaim ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার,
০৪. পোর্টেবল ওপেন অফিস ডাটাবেজ,
০৫. পোর্টেবল ওপেন অফিস এক্সেল,
০৬. পোর্টেবল ওপেন অফিস পেইন্ট,
০৭. পোর্টেবল ওপেন অফিস পাওয়ার পয়েন্ট,
০৮. পোর্টেবল ওপেন অফিস ম্যাথ,
০৯. পোর্টেবল ওপেন অফিস ওয়ার্ড,
১০. পোর্টেবল সুডোকু,
১১. পোর্টেবল সানবার্ড এবং
১২. পোর্টেবল থান্ডারবার্ড।
এসব সফটওয়্যার এই অ্যাপ্লিকেশনের সাথে বিল্ট-ইনভাবে ইনস্টল হয়ে থাকে।
উপরোক্ত সুবিধাগুলো ছাড়াও রয়েছে উইন্ডোজের মতো মিউজিক ফাইল, ডকুমেন্ট ফাইল, ছবি, ভিডিও ফাইল আলাদা করে রাখার জন্য বিভিন্ন ফোল্ডার। এসব ফাইল ব্যাকআপ রাখার জন্য রয়েছে ব্যাকআপ অপশন। তাছাড়া আপনার নিজের মতো অ্যাপ্লিকেশন যেন কাস্টোমাইজ করে ব্যবহার করতে পারেন তার জন্য রয়েছে অপশন। ফাইল বা ডকুমেন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য রয়েছে সার্চ অপশন। এরপরও যদি কারো কোনো সমস্যা থাকে তাহলে তাদের জন্য রয়েছে অনলাইন সাপোর্ট সেন্টার যা হেল্প অপশনে ক্লিক করলেই পাবেন।
উপরোক্ত সব সুবিধাই পাচ্ছেন একটিমাত্র পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন থেকে।
ব্যবহারবিধি
অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করে ডেস্কটপ থেকে PortableApps.exe ফাইলে ক্লিক করলে চিত্র-১-এর মতো একটি উইন্ডো খুলবে যেখানে উপরে উল্লেখ করা সব সফটওয়্যার ইনস্টল অবস্থায় দেখতে পাবেন।
০১. পোর্টেবল এন্টিভাইরাস : বহনযোগ্য এই এন্টিভাইরাস আপনার বা অন্য যেকোনো কমপিউটারের বিভিন্ন ড্রাইভকে স্ক্যান করতে পারবে এবং এই এন্টিভাইরাসকে ইন্টারনেট থেকে আপডেট করে ব্যবহার করতে পারবেন।
০২. পোর্টেবল ফায়ারফক্স : মজিলা ফায়ারফক্সের সাথে এর তেমন কোনো পার্থক্য নেই। যারা ফায়ারফক্স ব্যবহার করেছেন তাদের কাছে এই ব্রাউজারটি অনেক পরিচিত লাগবে।
০৩. পোর্টেবল Gaim ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার : মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীদের এই অ্যাপ্লিকেশন অনেক সহায়তা প্রদান করবে। ভিন্ন পরিবেশের মেসেঞ্জার ঠিকমতো কাজ না করলেও সমস্যা হবে না। পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনটির সাথে অনেক বিল্ট-ইন মেসেঞ্জার রয়েছে। আপনি এই মেসেঞ্জার থেকে এমএসএন, ইয়াহু, আইআরসি, এআইএমসহ আরো অনেক মেসেঞ্জারে লগইন করতে পারবেন। তবে মেসেঞ্জার ব্যবহার করার জন্য তাদের নিজস্ব মেসেঞ্জারের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
০৪. পোর্টেবল ওপেন অফিস ডাটাবেজ : পোর্টেবল ওপেন অফিস ডাটাবেজ অ্যাপ্লিকেশনটি দিয়ে ডাটাবেজের যাবতীয় কাজ করতে পারবেন। নতুন ডাটাবেজ তৈরি করা থেকে শুরু করে প্রিন্ট করা পর্যন্ত কাজ এই অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করতে পারবেন।
০৫. পোর্টেবল ওপেন অফিস এক্সেল : যারা এমএস এক্সেল ব্যবহার করেন তাদের কাছে এটি অচেনা মনে হবে না। এক্সেলে ওয়ার্কশিট তৈরি করা থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ করা যাবে এই অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে।
০৬. পোর্টেবল ওপেন অফিস পেইন্ট : আঁকাআঁকি করতে পছন্দ করেন যারা বা যাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে কোনো কিছু পেইন্ট করার প্রয়োজন পড়ে তাদেরকে এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যাপক সহায়তা প্রদান করবে।
০৭. পোর্টেবল ওপেন অফিস পাওয়ার পয়েন্ট : যাদের পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্টেশন স্লাইড তৈরি করতে হয় তাদের এ অ্যাপ্লিকেশন প্রয়োজন হবে।
০৮. পোর্টেবল ওপেন অফিস ম্যাথ : বিভিন্ন ধরনের ম্যাথ বা ক্যালকুলেশনের জন্য এটি একটি আদর্শ অ্যাপ্লিকেশন। সব ধরনের ছোটখাটো ম্যাথ এই অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করা সম্ভব।
০৯. পোর্টেবল ওপেন অফিস ওয়ার্ড : এমএস ওয়ার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য এই অ্যাপ্লিকেশন অনেক কাজে আসবে। নতুন ফাইল খোলা, সেভ করা, প্রিন্ট করা, বিভিন্ন ধরনের ফরমেটিং অ্যাপ্লিকেশনটি দিয়ে সম্ভব।
১০. পোর্টেবল সুডোকু : কমপিউটারে যারা গেম খেলতে পছন্দ করেন তারা এই গেমটি খেলে দেখতে পারেন। এটি একটি ছোট মজার গেম।
১১. পোর্টেবল সানবার্ড : যারা রুটিনমাফিক কাজ করতে পছন্দ করেন বা যারা কোন সময় কোন কাজ করতে হবে ভুলে যান তাদের জন্য এই অ্যাপ্লিকেশন অনেক কাজে আসবে।
১২. পোর্টেবল থান্ডারবার্ড : এটি একটি ই-মৈইল ক্লায়েন্ট অ্যাপ্লিকেশন। ইউডোরা, আউটলুকের মতো একে ই-মেইল ক্লায়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
আপনার কমপিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে এই অ্যাপ্লিকেশনটি কনফিগার করার পর যাবতীয় মেইল আদানপ্রদান করা সম্ভব।
কোথায় পাবেন
আপনার ব্রাউজার খুলে অ্যাড্রেস বারে http://www.portableapps.com টাইপ করে এন্টার করুন। অনলাইনে দু’ধরনের পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট পাবেন। ক. পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট লাইট ভার্সন এবং খ. পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট স্ট্যান্ডার্ড ভার্সন। সাইজের দিক থেকে পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট লাইট ভার্সনটি ৩১ মেগাবাইট এবং পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন স্যুট স্ট্যান্ডার্ড ভার্সনটি ৯২ মেগাবাইট।
প্রথমে আপনার কমপিউটারে যেকোনো একটি ভার্সন ডাউনলোড করে ইনস্টল করুন। ইনস্টলেশন প্রসিডিউর খুব সহজ অর্থাৎ নরমাল সফটওয়্যার ইনস্টলেশনের মতো। অ্যাপ্লিকেশনটি ইনস্টল করার সময় আপনার কাছে ইনস্টলেশন লোকেশন জানতে চাইবে। কোন লোকেশনে সফটওয়্যারটি ইনস্টল করবেন তা নির্দিষ্ট করে ইনস্টলেশন প্রসিডিউরটি সম্পন্ন করুন। যে ফোল্ডারে অ্যাপ্লিকেশনটি ইনস্টল করবেন বা আনজিপ করবেন সে ফোল্ডারটি কপি করে আপনার পেনড্রাইভে ধারণ করুন।
এখন আপনি যেকোনো পরিবেশে গেলেই এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে পারবেন।
মন্তব্য করতে কমপিউটার জগৎ গ্রুপে জয়েন করুন।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।