আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিয়াম রিপের গ্রীন গেকো



দেশ : কেম্বডিয়া স্থান : সিয়াম রিপ অনেক খোজা খুজি করে আমাদের টুক টুক টা যখন গ্রীন গেকোর সামনে এসে দাড়াল দেখি একটা ছোট্ট মিষ্ট মেয়ে বড়দের মত ভাব করে মথার উপার হাত উঠিয়ে ব্যাগ একটা নিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে। খুব মজা পেলাম ওর ভংগি দেখে। গেটের কাছে এনট্রি রেজিসট্রেশন করার সময় চোখে পড়ল ওদের সুন্দর বিল্ডিংটা। গ্রীন গেকো একটা এতিমখানা। অস্ট্রেলিয়ান এতিমখানা, কেম্বডিয়ার সিয়াম রিপে।

আমার এক অস্ট্রেলিয়ান বন্ধু হাইডি ওখানে ভলানটিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল ওর কাছেই শুনেছিলাম গ্রীন গেকোর কথা। ছবিটা তুলতেই ফিল করলাম কে যেন আমার পা জড়িয়ে কোমড়ের কাছে মুখ গুজে দাড়িয়ে আছে, তাকাতেই দেখি একটা মিষ্টি মুখ। মায়া ভরা চোখ নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর পাবার আশায় তাকিয়ে আছে। ওর চুল গুলো নেড়ে আদর করে দিলাম। ভাংগা ভাংগা ইংরেজিতে ও আমার নাম জানতে চাইলো।

সামনেই দেখি ৩/৪ টি মিষ্টি মেয়ে খেলছে মাটিতে বসে। ওটা রোববার ছিল ওদের স্কুল ছুটির দিন। প্রতিটি মুখ এত হাসি খুশি, বুঝলাম গ্রীন গেকো ওদের ঠিক মতই টেক কেয়ার করছে, স্বজন হারা বাচ্চা গুলোর মুখে হাসি এনে দিতে পেরেছে। ওরা আমাকে আর ক্লিফ কে নিয়ে গেল ওদের লাইব্রেরি দেখাতে, লাল নীল নানান রং এর বই আর রং পেন্সিল!! দেখাল ওদের আকা ছবি। সুন্দর করে দেয়ালে লাগিয়ে রেখেছে।

নিয়ে গেল মেয়েদের বেড রুমে। সবাই মিলে ঘর গোছাচ্ছে সেদিন ছুটি বলে। গেলাম ছেলেদের রুমে। ছেলেরা মেঝেতে শুয়ে টিভি তে কার্টুন দেখছে। আমাদের দেখে সবাই মিলে হাত নাড়ল।

মিষ্টি মুখের বাচ্চা গুলোর মুখে কোথাও দুঃখের ছাপ নেই। কতটা কেয়ার নিলে এই এচিভমেন্ট আসতে পারে বুঝলাম পরিবেশ আর বাচ্চাদের দেখে। গ্রীন গেকো সত্যিই ভাল কাজ করছে। ওখানে যারা কাজ করেন তারা সবাই ভলানটিয়ার। কেউই বেতন নেন না।

নানান দেশ থেকে লোক জন আসেন ভলানটিয়ার হয়ে বাচ্চাদের দেখাশুনা করতে আর পড়াতে। মনিটারি সাহায্য আসে মেইনলি অস্ট্রেলিয়া থেকে। অন্য কেউ যদি টাকা দিয়ে সাহায্য করতে চান তাও ওরা নেন। তবে যাদের টাকা নেই দেবার মতো তারা ওখানে গিয়ে ভলানটিয়ার হিসেবে কাজ করেন। বাচ্চা গুলোর মুখে একটু হলেও হাসি এনে দেবার এই প্রচেষ্টাকে সত্যিই আমার অসাধারণ মনে হলো।

শুধু পেট ভরে ভাত খেতে দেয়া নয় নানান দেশের শিক্ষিত লোক জন দিয়ে তাদের শিক্ষা দেয়া, আদর দেয়া, ভুলিয়ে দেয়া যে ওরা সব হারান মানুষ। ভিষন ভাল লেগেছে ওখানে গিয়ে তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আমাদের দেশে কখন কোন এতিম খানায় যাইনি তাই যানিনা পরিবেশ কেমন ওখানে। তবে আমরাও ইচ্ছে করলে এরকম এতিমখানা আমাদে দেশে খুলতে পারি ও টোকাই সংখা কমিয়ে আনতে পারি। আমাদের দেশে প্রচুর ছাত্র ছাত্রী আছেন যাদের বাবা মা আর্থিক ভাবে সচ্ছল।

উনারা কিনতু ভার্সিটর কোন একটা ছুটির মাসটা একটা ফ্রেন্ড গ্রুপ নিয়ে এরকম কোন কাজ করে কাটাতে পারেন!!!! ভাল থাকবেন সবাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।