পরাজিত হতে হতে আমি উঠে দাড়িয়েছি এবার ফিরে যাবো না খালি হাতে, স্তব্ধতা আর সৌন্দর্যের পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই যে কবি সে কখনো খালি হাতে ফিরে যেতে পারে না ।
'৭৫ সালের ৬ নভেম্বর রাত ১২ টায় বঙ্গভবনে সিপাহী বিপ্লবের খবর পেয়ে জেনারেল খালেদ কর্নেল হুদা ও হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামানের বাসায় যান । সেখান থেকে শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত ১০ম বেঙ্গল রেজিমেন্টে যেতে সিদ্ধান্ত নেন । উল্লেখ্য ১০ ম বেঙ্গলকে বগুরা থেকে খালেদই আনিয়েছিলেন তার নিরাপত্তার জন্য । পথে ফাতেমা নার্সিং হোমের কাচে তার গাড়ি খারাপ হয়ে গেলে তিনি হুদা ও হায়দারসহ পায়ে হেটেই ১০ম বেঙ্গলে গিয়ে পৌছেন ।
উক্ত ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন কর্নেল নওয়াজিস । খালেদের আগমনের খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ তিনি টেলিফোনে টু ফিলডে সদ্যমুক্ত জেনারেল জিয়াউর রহমান কে তার ইউনিটে খালেদের উপস্থিতির কথা জানান । তখন ভোর প্রায় চারটা । জিয়ার সাথে ফোনে তার কিছু কথা হয় । এরপর তিনি মেজর জলিলকে ফোন দিতে বলেন ।
জিয়ার সাথে মেজর জলিলের কথা হয় ।
ভোরবেলা দেখতে দেখতে সিপাহী বিদ্রোহের প্রবল ঢেউ ১০ম বেঙ্গলে এসে পড়ে । পরিস্থিতি কর্নেল নওয়াজিসের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় ।
আফিসার মেসে বসে খালেদ-হায়দার -হুদা সকালের নাস্তা করছিলেন । হুদা ভীত হয়ে পড়লেও খালেদ ছিলেন ধীর , স্থির , শান্ত ।
হায়দার নির্ভীক নির্বিকারভাবে পরটা মাংস খাচ্ছিলেন । এমন সময় মেজর জলিল কয়েকজন উত্তেজিত সৈনিক নিয়ে মেসের ভিতর প্রবেশ করে । তার সাথে একজন বিপ্লবী হাবিলদারও ছিল ।
সে চিৎকার দিয়ে জেনারেল খালেদকে বলল-"আমরা তোমার বিচার চাই "!
খালেদ শান্তকণ্ঠে জবাব দিলেন ," ঠিক আছে , তোমরা আমার বিচার করো । আমাকে জিয়ার কাছে নিয়ে চলো ।
"
স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বাগিয়ে হাবিলদার চিৎকার করে বললো-"আমরা এখানেই তোমার বিচার করবো । "
খালেদ ধীর স্থির । বললেন, "ঠিক আছে , তোমরা আমার বিচার করো । " খালেদ দু’হাত দিয়ে তার মুখ ঢাকলেন ।
ট্যারর-র-র-র ! একটি ব্রাস ফায়ার ।
মেঝেতে লুটিয়ে পড়লেন সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার জেনারেল খালেদ মোশাররফ যার ললাটে ছিল বীরযোদ্ধার জয়টিকা , মাথায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তমের শিরোপা আর মাথার বাম পাশে ছিলো পাকিস্তানী গোলন্দাজ বাহিনীর কামানের গোলার গভীর ক্ষতচিহ¡ ।
কামরার ভেতরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণত্যাগ করলেন আগরতলা ষড়যন্ত্রমামলার অন্যতম আসামী মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার বীর বিক্রম কর্নেল নাজমুল হুদা ।
কর্নেল হায়দার ছুটে বেরিয়ে যান কিন্তু সৈনিকদের হাতে বারান্দায় ধরা পড়েন । উত্তেজিত সৈনিকদের হাতে তিনি নির্দয়ভাবে লাঞ্চিত হন । তাকে সেপাহীরা কিল ঘুষি লাথি মারতে মারতে দোতলা থেকে নিচে নামিয়ে এনে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয় ।
কি মর্মান্তিক ! আজ পর্যন্ত এই হত্যার বিচারের কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি ।
বর্তমান নবনির্বাচিত সরকারের নিকট দাবী-
খালেদ -হায়দার -হুদা হত্যার বিচার চাই ।
খুনি যে হোন না কেন -
বিনা বিচারে এই হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না
তাই এর বিচার চাই
বিচার চাই
বিচার চাই
বিচার চাই
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।