তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।
অফিস-বাসা-অফিস মোটামুটি এইটাই জীবন। মাঝে মাঝে নিজে শখ করে রান্না করি। কিন্তু খাবার সময় হয় না। রোজকার মতো টিভি দেখাও মোটামুটি লাইফের একটা অংশ।
জার্মান কতোটুকুই বা বুঝি। তারপরও বাংলাদেশে উপর দুটি চ্যানেলে দুইটি অনুষ্টান দেখলাম। যথারীতি বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র, যার কোনই ভবিষ্যত নেই এইসব কথাবার্তা। রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, গরীব মানুষের জীবন সংগ্রাম মোটামুটি চিত্র এইসব ডকুমেন্টের। সামনে নির্বাচন।
আবারো পাঁচ বছরের জন্য দেশ কোন একটি রাজনৈতিক দলের কাছে বন্দি। নির্বাচনি ইশতেহারগুলোতে নেই কোন চমক। নেই দেশকে নিয়ে কোন ভবিষ্যত স্বপ্ন। আমাদের কপালটাই মনে হয় খারাপ। না হলে সবার স্বপ্নগুলো বারবার এভাবে প্রতারিত করবে কেন? হয়তো আমরা জেগে স্বপ্ন দেখি।
নাহলে স্বপ্নকে বাস্তবায়নের কোন ইচ্ছেই নেই আমাদের। হয়তো আমাদের কোন স্বপ্ন দেখানোর স্বপ্ন-মানব নেই। হয়তো আমরা কিছু মাস্তানটাইপের লোকজনকে নেতা বানাই। অনেক হয়তো, হয়তো..........
বিশ্ব অর্থনীতির অবস্হা যে খুবই খারাপ সেটা হয়ত বাংলাদেশে বসে টের পাওয়া যাচ্ছে না। সব প্রতিষ্টানেই ছাটাই আতঙ্ক।
এদেরটা না হয় সময় করে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের কি হবে? যেখানে দেশের বাজেট নির্ভর করে সাহা্য্যের উপর, উন্নয়নের জন্য দরকার বৈদেশিক সাহায্য। সেখানে যদি এদের অর্থনীতি ভালো না থাকে তাহলে সাহায্য আসবে কোথা থেকে?
এইবার ঈদে শুনলাম দেশে গরুর দাম নাকি খুব বেশি। চিন্তা করলাম হওয়ার ই তো কথা। আমরা নিজেরা কোন জিনিসটা কষ্ট স্বীকার করে করি।
আমরা চেয়ে থাকি রেডিমেইট জিনিস পাওয়ার জন্য। দুধে মেলামাইন, মাছ,ফল,সবজি সবগুলোতেই ভেজাল। একজন ফলাবে আর পাঁচজন জিনিস কেনার জন্য বসে থাকবে তাহলে তো জিনিসপত্রে ভেজাল থাকবেই।
মামা কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে গরুর ফার্ম করেছিলেন। ইচ্ছে ছিলো স্হানীয় পর্যায়ে সাপ্লাই দিয়ে পরবর্তিতে আরো বড়ো করে ফার্ম বানানোর।
কিন্তু লোকজন উনার ফার্মের বিশুদ্ধ,টাটকা দুধ থেকে মিল্কভিটা, আড়ং পছন্দ করে। উনি ফার্ম বন্ধ করে ইংল্যান্ড চলে গেলেন। নিজে দেশে থাকতে দেখেছি নিজেদের বাড়িতে বিভিন্ন রকমের শাক সবজি লাগানো হতো। আমরা বিকেলে অথবা স্কুলে যাওয়ার আগে ঐগুলোর পরিচর্যা করতাম। পানি দেওয়া, ঘাস পরিষ্কার এইগুলো ছুটি মকতব ছুটির পরের কাজ।
ছুটির দিনগুলোতে সর্ষে ক্ষেতের ফড়িং ধরা, কাচের বোতলে মৌমাছি ধরা, মাঝে মাঝে মৌমাছির হুলও খাওয়া, পুকুরে শিং মাছ ধরতে গিয়ে শিং মাছের কাটার ব্যথায় চিল্লাফাল্লা। আর এখন বাড়ির ছেলেরা সবাই গায়ে হাওয়া লাগাই বেড়ায়। যেখানে ৩/৪টা টমেটো গাছ লাগালে কয়েকমাস বিরামহীন টমেটো খাওয়া যায় সেখানে বাজার থেকে ৫০/১০০ টাকা কেজি দরে খেলে তো ভেজাল থাকবেই। উর্বর মাটিতে শুধু লাগানোতেই যতো কষ্ট। সেই কষ্টটাও উনারা করতে ইচ্ছুক না।
অবশ্য ইউরো, পাউন্ড ভাঙ্গালে এতো এতো টাকা পাওয়া যায় সেখানে কষ্ট করে লাগানোর দরকারই বা কি? গতবার দেশে গিয়ে বনফুল থেকে আইসক্রিম কিনে মুখে দিয়ে দেখি কি রকম আটার মতো গন্ধ। ক্যাশে দাড়ানো ভদ্রলোককে জিঞ্জেস করলে বলে আমরা খাটি দুধ দিয়ে আইসক্রিম বানাই। কিন্তু ঐটার অব্স্হা দেখে আর খেতে ইচ্ছে করলো না।
দিন তো আর সব সময় সমান যায় না। অটো ইন্ড্রাষ্ট্রি বন্ধের উপক্রম, ব্যাংকের অবস্হা খারাপ।
কখন যে কি হয় বুঝা মুশকিল। অফিস শেষে গতদিন বসের সাথে ক্রিসমাস মার্কেটে গিয়েছিলাম। প্রচন্ড ঠান্ডায় ও বেশ লোকজন । সবাই গ্লোভাইন (গরম মদ) খাচ্ছে। নদীর পাড় দিয়ে হাটার সময় দেখলাম কয়েকটি রাজহাঁস, পাতিহাঁস নদীতে।
হাসগুলো আমাদের দেখে অন্ধকারেই কাছে আসলো। সাথে কোন খাবার ছিলো। ইচ্ছি ছিলো ছবি তুলার। কিন্তু ক্যামেরা সাথে নেই। অবশ্য ক্যামেরা ব্যবহার করা ছেড়ে দিচ্ছি প্রায়।
অনেকগুলো ডিজিটাল ক্যামেরা কেনা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে একটাও আমার নেই। প্রতিবছর দেশে গেলেই রেখে আসতে হয়। সেই দু:খে ভেবেছিলাম আর কিনবো না। তারপরও দুই মাস আগে একটা কেনা হলো।
এত্তো বড়োবড়ো লেন্সেরগুলো আমাকে টানে না। আমার কাছে ছুটো বাক্সতে যতো বেশি টেকনো ততো ভালো। ক্যানোনের ক্যামেরা ভালো লাগলো কিনলাম। কিন্তু মাসখানেক হলো এখনো বাক্সবন্ধি অবস্হায় আছে। কাল ঈদের লেইট পার্টি।
হয়তো ওখানে ইস্তেমাল হতে পারে। মোবাইলের অবস্হাও একই। কয়েক বছর হলো নকিয়ার ৬৩০০ ব্যবহার করতেছি। ছোট, হালকা-পাতলা, ফোন করা যায়, ফোনে কথা বলা যায়, দেখতেও চলনসই। আর কি চাই।
বিরাট বিরাট সেটগুলো কেন যেন ভালো লাগে না। ক্রিসমাসের ছুটিতে যতোটুকু রিলাক্স থাকবো ভেবেছিলাম ততোটুকু থাকা হবে না। কিছু আলগা কাজ এসে জুটছে। শীতে কোথাও বেড়াতে যেতে ভালো লাগে না। বসে বসে ডিভিডি দেখার প্লান আর বোনাস হিসেবে ছোটবোনের ব্লা ব্লা শোনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
হয়তো ১/২ দিন লঙ ড্রাইভে যাবার প্লান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।