একান্তই নিজের কিছু হাবিজাবি চিন্তাভাবনা । । ।
চিনি আমাদের সকলের নিত্যদিনের আহারের অংশ। তবে খুব বেশি পরিমাণ চিনি গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
খাদ্যাভাসে অধিক পরিমাণে চিনি থাকলে তা রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। যা শেষ পর্যন্ত ওজন বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই অনেকেই আজকাল কৃত্রিম মিষ্টিকারকের দ্বারগ্রস্থ হচ্ছেন। যেগুলোতে কম ক্যালোরি থাকার কারনে ওজন বেড়ে যাবার ভয় নেই, অন্যদিকে খাবারের মিষ্টতা অটুট রাখতেও এদের জুড়ি মেলা ভার।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে কৃত্রিম মিষ্টিকারকের পেছনের রহস্য কি এবং এগুলো কাজ করে কিভাবে? কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলোর মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক অথবা ভেষজ উপাদান থাকে যারা খাদ্যের মিষ্টতা চিনির চেয়ে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে রক্তে ক্যালোরির মান একদম নিয়ন্ত্রণে রেখে।
তাই দৈহিক ওজন কমিয়ে আনতে চাইলে অথবা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে এগুলোর বিকল্প পাওয়া দুষ্কর।
ডায়াবেটিসে যারা ভুগে থাকেন অনেকেই এসব কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করে আসছেন তাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে। কারন ঐ একটাই, কারন এগুলো রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ না বাড়িয়ে খাদ্যে মিষ্টতা আনার ক্ষমতা রাখে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, কিছু কিছু কৃত্রিম মিষ্টিকারকযুক্ত খাদ্য দ্রব্যাদি তার রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও পারে। উদাহরণ হিসেবে চিনিমুক্ত দই অথবা চিনিমুক্ত কুকিজ অথবা চকোলেটের কথা বলা যেতে পারে।
এসব খাদ্যে বেশিরভাগ সময় যেসব কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে সরবিটল অথবা ম্যানিটল থাকে, এবং এসব উপাদান রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও পারে। আবার কিছু চিনিমুক্ত খাদ্যের মধ্যে আটা/ময়দা থাকতে পারে যা রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে সহজেই।
বিজ্ঞনীরা অনেক গবেষণা করেছেন এসব কৃত্রিম মিষ্টিকারকদের নিয়ে। এবং উনারা এগুলোর দৈনিক গ্রহণের নিরাপদ মাত্রা স্থির করে দিয়েছেন। যেগুলোতে এস্পারটাম(Aspartame) থাকে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা একদম নিরাপদ নয়।
এবং আপনার ওজনানুযায়ী কেজিপ্রতি দৈনিক ৫০ মিলিগ্রাম গ্রহণ করা যেতে পারে। ধরুন আপনার দৈহিক ওজন যদি ৬৫ কেজি হয় তবে আপনি দৈনিক গ্রহণ করতে পারবেন (৬৫ x ৫০) মিলিগ্রাম অর্থাৎ ৩ দশমিক ২৫ গ্রাম। স্যাকারিন(Saccharin) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলো রান্নার জন্য উপযোগী কিন্তু ওজনানুযায়ী কেজিপ্রতি ৫ মিলিগ্রামের উপরে গ্রহণ করা একদম উচিত হবেনা। এক্সালফেম(Acesulfame K) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলোর ওজনানুযায়ী দৈনিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা হল ১৫ মিলিগ্রাম কেজিপ্রতি। সুক্রালোজ(Sucralose) জাতীয়গুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৫ মিলিগ্রাম কেজিপ্রতি।
সংবাদপত্র এবং ইন্টারনেটে কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলো কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে নানান সময়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগের ভাষ্য ছিল কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলো স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে যার মধ্যে ক্যান্সারের নাম উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আমেরিকার ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে এবং সাধারণ মানুষ নির্দিধায় ব্যবহার করতে পারে বলেছে। তবে যাদের বিরল পিকেইউ(hereditary disease phenylkeronuria)অসুখ রয়েছে তাদের এস্পারটাম(Aspartame) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলোকে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
খাদ্যাভাস থেকে শুধুমাত্র চিনির অপসারণ ঘটালেই যে দেহে ক্যালোরির মান কমে যাবে আমাদের সেই ভুল ধারনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সেইসাথে সবাইকে সচেতনভাবে বিকল্প চিনি অথবা কৃত্রিম মিষ্টিকারকের ব্যবহার করা উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।