বন্ধুদের নিয়ে বাঁচি
তলপেট থেকে গোপনাঙ্গ পর্যন্ত অসংখ্য ছ্যাকার যন্ত্রনা নিয়ে কমলগঞ্জের দরিদ্র কিশোরী শিপা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।
ডাক্তার সিট কেটে দিয়েছে কিন্তু সিপার বাবার সাধ্য নেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা কিংবা সিলেটে নিয়ে যাওয়া
ওর ছবি দেয়া মুস্কিল। এতো ভয়াবহ যে,অনেকে সহ্য করতে পারবেন না!
গৃহকত্রী কর্তৃক নির্মম নির্যাতনের শিকার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের এক দরিদ্র পরিবারের কিশোরী কন্যা শিপা বেগম এখন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে বিছানায় যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।
এক বছর পূর্বে কলিম মিয়া তার ১২ বছরের কন্যা শিপা বেগমকে সিলেট জকিগঞ্জের কামালপুর গ্রামের এনামুল আহমদের বাসায় গৃহ পরিচারিকার কাজে পাঠান। গৃহের কাজে পানি আনতে দেরী হওয়ায় গৃহকর্তী চটে যান শিপার উপর।
রাতে শিপার দুই হাত ও পা বেঁধে বিবস্ত্র করে গ্যাসের চুলোয় রান্নার ছেনী গরম করে তার বুকে স্তনের ওপর, কোমরের পিছনের উভয় অংশ ও দুই পা সহ তলপেট থেকে গোপনাঙ্গ পর্যন্ত অসংখ্য ছ্যাক্ দিয়েছে নির্মম ভাবে নির্যাতন করেছে গৃহকর্তী রানু বেগম। বিভিন্ন সময় তার উপরে চালানো হয়েছে অমানবিক নির্যাতন, যার চিহ্ন তার শরীরের বিভিন্ন অংশে রয়েছে। একটি আঘাতের চিহ্ন শুকাতে না শুকাতেই আবার আঘাত। মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার এই কিশোরীকে জরুরী ভিত্তিতে ঢাকায় নিয়ে প¬াষ্টিক সার্জারী না করালে তার জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে চিকিৎসকদের অভিমত। এদিকে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে শনিবার মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা সিলেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিদের্শ দিয়ে সিট কেটে দিয়েছে।
কিন্তু দরিদ্র পিতার এত টাকা যোগাড় করা কোন মতেই সম্ভব হচ্ছে না। সচেতন মহল এই নাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে অবিলম্বে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেছেন।
জানা যায়, ৩ মাস পূর্বে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পীরের বাজারের জনৈক জামাল মোলা¬¬া শিপা বেগম (১১) কে কাজ দেবার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। পরে শিপার পিতা কলিম উল্যা জানতে পারেন তার বড় মেয়ে ঢাকার জনৈক আউয়াল হোসেনের বাসায় ঝিয়ের কাজ করছে (বাসা নং ১০, এ/২, এ সেক্টর ১১ উত্তরা হাউস বিল্ডিং, ঢাকা)। এই বাসায়ই প্রথমে শিপা বেগমকে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে আউয়াল মিয়া শিপাকে তার আপন বোন রানু বেগমের সিলেট শহরের মীরাবাজারস্থ বাসায় গৃহ পরিচারিকার কাজে পাঠায়। রানু বেগমের স্বামী এনাম আহমদ সিলেট শহরের বন্দরবাজারে মধুবন সুপার মার্কেটের রিমন পাঞ্জাবী হাউসের স্বত্তাধিকারী। তাদের গ্রামের বাড়ি সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ৩নং কাজলশাহ ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে। শিপা সিলেটের বাসা এবং জকিগঞ্জের গ্রামের বাড়ি-দু জায়গায়ই থাকত। কাজে যোগদানের কয়েক দিন এর মাথায় ঐ বাসার গৃহকর্র্ত্রী কাজে বিলম্বের কারণে শিপাকে মাথায় আঘাত করলে অসুস্থ শিপার মাথায় ৭টি সেলাই দিতে হয়।
পরবর্তীতে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কামালপুরস্থ ব্যবসায়ী এনাম আহমদের বাড়িতে বদমেজাজী গৃহকর্ত্রী রানু বেগম পুকুর থেতে পানি আনতে বিলম্ব হওয়ার অপরাধে পরপর দুদিন শিপাকে হাত-পা বেঁধে মুখের মধ্যে কস্টিভ লাগিয়ে রাান্নার কাজে ব্যবহৃত ষ্টিলের গরম ছেনি দিয়ে দিয়ে কিশোরীর তলপেট এমনকি গোপন অঙ্গসহ দেহের বিভিন্ন অংশে ছ্যাকা দিয়েছে। এতে শিপার শারিরীক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটলে অজ্ঞাত পরিচয় এক লোককে দিয়ে গত ২৬ নভেম্বর বুধবার গৃহকর্ত্রী রানু বেগম হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে তার পিতার বাড়িতে শিপাকে পাঠিয়ে। পরে বাড়ীর লোকজন জামাল মোল¬¬াকে খবর দিয়ে নিয়ে শিপাকে তার হাতে তুলে দেয়। জামাল মোল¬া চুনারুঘাট থেকে শিপাকে কমলগঞ্জের শমসেরনগরে নিয়ে আসলেও তাকে বাড়ীতে পৌছে না দিয়ে পালিয়ে যায়। শমসেরনগর থেকে রিক্সা যোগে একা বাড়ি ফেরার পর শিপার সারা শরীরে নির্যাতনের বিভিন্ন চিহ্ন দেখে তার পিতা কলিম উল¬া মেয়েকে প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ও পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, শিপার গোপন অঙ্গ থেকে অকুস্থল আক্রান্ত হওয়ায় তাকে ঢাকায় নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে প¬াষ্টিক সার্জারী করা প্রয়োজন। শিপার পিতা দরিদ্র কলিম উল্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি এবং প্রশাসনিক কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ হাজেরা খাতুন এ অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। কমলগঞ্জ থানার এসআই শামসুুদ্দীন জামাল মোল¬ার (যার মাধ্যমে শিপা সিলেট গিয়েছিল) সিটিসেল মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।
মৌলভীবাজার সদর থানার এসআই শাব্বির আহমদ গতকাল শুক্রবার সদর হাসপাতালে শিপাকে দেখতে যান। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, শিপার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার গা থেকে দূর্গন্ধ বের হচ্ছে। সে এখন যন্ত্রণায় মৃত্যূর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
বিকুল চক্রবর্ত্তী
মৌলভীবাজার থেকে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।