সবকিছুতেই নির্মোক থাকছি, সবকিছুই ইদানীং অর্থহীন মনে হয়; নিজের এই নেতিবাচক প্রবণতায় নিজেই লজ্জিত । :(
এক দোস্ত ল্যাপটপ কিনছে, তাই আর দেরী না কইরাই তারে জবাই দিবার প্রোগ্রাম হইলো। বুফে টুফে খাইয়া আর ভাল্লাগে না, তাই হুদাহুদি টেকা নষ্ট করার চাইতে মুস্তাকিম-মোস্লেম এর চাপ-কাবাব-লুচির উপর দিয়া যাইবার দিলাম। জিনিষপাত্তি কিনলে আমাগো মইধ্যে ১১.১৯% ট্যাকসো খানাপিনা বাবদ সাদকা দিবার নিয়ম (সেইটার উৎপত্তি আরেক কাহিনী,আমার মোজা কিনা হইতে ... ); খাইয়া দেখি ২% ও পার হইলো না বিল! ধুত্তোরি।
এই কাবাব খাইতে গিয়াই মনে পড়লো ‘সাতি’র কথা ।
এইটা ইন্দোনেশিয়ান কাবাব , মুরগীর। চারকোলের আগুনে কেম্নে জানি স্পেশালি বানায়, অর্ডার দিয়া একখান ঘুম দেওয়া যায়। লগে পিনাট এর একটা সস দেয় ঝাল ঝাল, মুখে দিয়া চোখ বন্ধ কইরা বুঝতে হয় অমৃত কি জিনিষ। আহা। এক্ষণে তো আর খাইবার পারুম না তাই জাকার্তায় খাওয়া কিছু খানাদানার ছবি শেয়ার করলাম।
এইটা সেই সাতি । শুনছি মাটন সাতি ও নাকি আছে, সেটা দেয় কুমড়ার আচার দিয়া । আচার বড়ই প্রিয় , কিন্তু ‘কুমড়া’ শুইন্যা বাই বাই।
গোডো- গোডো- বলপোঃ
অল্প অল্প গল্প। এইটা আসলে মিক্সড ভেজিটেবলের একটা আইটেম, লেয়ার দেয়া মনে হয় – একেক চামচে একেকটা স্বাদ ।
গরম গরম খাইতে চমৎকার । ছবিতে যেটা দেখা যাইতেছে ওইটা অতো ভালা লাগে নাই। ঠান্ডা হইয়া গেছিলো মনে হয় তাই।
*
*
কেরাক টেলরঃ
জব্বর একখান খানা । অনেকটা আমাগো বারোভাজার মত।
ডিম , চালের গুড়া , চাল ভাজা , কি কি শুটকির মত , ইছা মাছ (ছোট চিংড়িরে ইছা কওয়াই ভালা) আরো অনেক মসল্লা, জল্পাই আচার সব একটার পর একটা দিয়া বানায়। আঞ্চল দুফানে ঘুরতে গিয়া খাইছিলাম। সেইরম। আহ!
আরেক খান খানা খাইছিলাম, হান্নি কইছিলো ওইটা সুলাওয়াসির ডিশ । মাছেরে কলার মইধ্যে ঢুকাইয়া গ্রীল বানানো হয় , লগে সয়াবিন-ভুট্টা-লেটুস-হাবিজাবির সালাদ, খাইতে হেভী।
নাম ভুইলা গেছি।
এই ছাড়াও নাসি গোরাং , নাসি পাতি (নাসি মানে ভাত) , গোরেঙান (পাকা কলার ঝাল ভাজি ) এইরকম অনেক কিছু খাইছি। নাম ধাম ও ভুইলা গেছি। তয় গরুর চামড়ার ভাজি ( বিনটাং মনে হয় নাম) খাইতে চাইছিলাম। সঙ্গী মুস্তাফিজ ভাই আর মালেয়শিয়ান দুই কলিগ বালান আর বেই-জুর এর বাদ-প্রতিবাদের চোটে পারি নাই ।
মুস্তাফিজের সাফ কথা , বৈদেশে প্রথম আইছে, এক্ষণে আমার লাশ-আধা লাশ লইয়া দৌড়াদৌড়ি করাবার ইচ্ছা ওর বিন্দুমাত্র নাই।
*
এই ফলের নাম রাম্বুটান। জাকার্তায় রাস্তায় রাস্তায় ফেরি কইরা বিক্রি হয়। শুনছি থাইল্যান্ডে ও বেশ জনপ্রিয়। লিচুর মত ফল, একটু কম মিষ্টি।
গায়ে বেশ রোঁয়া রোঁয়া আছে। এইজন্যই নাকি নাম রাম্বুটান।
( খানা-দানার কথা মনে আইলেই তুষার ভাইয়ের কথা মনে আসে। এই পোস্ট টা উনারে উৎসর্গ করা হইলো, খানা দানায় আমাগোরে আগ্রহী করার লাইগ্যা। ক্ষুদ্র উৎসর্গ )
এই ফল নিয়া এক মজার কাহিনী আছে।
একদিন তামান আনগ্রেক এর কাছে থেইকা সত্তুরটা রাম্বুটান কিনলাম দশ হাজার রুপাইয়া দিয়া ( ঘাবড়ানোর কিছু নাই মোটে ছিয়াত্তর টাকা)। হোটেলে আইসা সহকর্মী মুস্তাফিজের জন্য অর্ধেকের মত আলাদা কইরা রাখলাম। তারপর রাতের খাবারের পর পড়ি আর আর একটা একটা করে খাই। খাইতে মজাই লাগে আর খাই। হঠাৎ দেখি বাকি আছে পাঁচ- ছয়টা , মুস্তাফিজের জন্য? খাইয়া ফেললাম ই যখন , অধিকন্তু ন দোষায় ভাইবা বাকীগুলা ও খাইয়া
ফেললাম।
শেষ কয়েক খান রাম্বুটান ......
কাহিনী কারে বলে টের পাইলাম পরের দিন সকালে । পেট ফাঁইপা হইয়া গেলো বেলুন, খাটা আকাড়ায়া ধইরা রাখলাম। নাইলে নির্ঘাত উইড়া যাইতাম। চি চি কইরা হোটেলের ডাক্তার ডাকলাম, কি কি জানি গিলাইয়া কইলো বাথটাবে ঠান্ডা পানি ঢাইলা শুইয়া থাকো।
আহহারে রাম্বুটান... ।
তোর লাইগ্যা হইলাম দিওয়ানা, তুই দিলি যন্ত্রণা!
* দেওয়া ছবিগুলা সংগৃহীত। বাকীগুলা আমার তোলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।