আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেনাবাহিনী থেকে ইসলামি ভূত তাড়ানোর ‘সেকুলার প্লান’ -- ফরহাদ মজহার

আহসান মোহাম্মদ

বাংলাদেশের জনগণ ইসলামের দোষে দুষিত। খুবই বদ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও কার্ল সিওভাক্কো এই দোষ থেকে বাংলাদেশকে কিভাবে মুক্ত করবেন তার একটি থিসিস দিয়েছেন। যেহেতু একজন মার্কিন সামরিক অফিসারের সঙ্গে মিলে এই থিসিস প্রণয়ন করা হয়েছে অতএব, আরো তথ্যবিচার করে আমরা আগের কিস্তিতে আশংকা প্রকাশ করেছি- এই থিসিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার ‘পরিকল্পনা’ই বটে। - অর্থাৎ বাংলাদেশকে ইসলামমুক্ত দেশ হিশাবে কায়েম করা।

হার্ভার্ড ইন্টারনেশনাল রিভিউ নামক পত্রিকায় ১৯ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে যৌথ ভাবে এই বিষয়ে লিখেছেন সজীব ওয়াজেদ জয় ও কার্ল সিওভাক্কো। এতে আমরা উপকৃত হয়েছি। কারণ বাংলাদেশে কী ঘটতে যাচ্ছে বা ঘটবে তার একটা আগাম সংকেত পেয়েছি আমরা। ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট হিশাবে কার্ল সিওভাক্কো 6-52 Air Defense Artillery--র হেডকোয়াটার্স এবং হেডকোয়াটার্স ব্যাটারিতে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিশাবে ইরাকে মার্কিন দখলদারি প্রতিষ্ঠার জন্য শুরম্নর পর্যায়ে যুদ্ধ করেছেন। মনে রাখা দরকার, সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে তার সঙ্গে আলকায়েদার যোগ আছে এবং তিনি গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের অধিকারী।

অথচ পরবর্তীকালে মার্কিন তদন্তেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ দুটোই ছিল মিথ্যা প্রচারণা। সর্বৈব মিথ্যা। বাংলাদেশের বিরম্নদ্ধেও ঠিক একই ভাবে দুটো অভিযোগই উঠেছে। এক· বাংলাদেশ ইসলামি সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে এবং আগামি দিনে ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী’ আওয়ামী লীগকে যদি ক্ষমতায় আনা না যায় তাহলে সেটা ভয়াবহ সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। দ্বিতীয় অভিযোগ, বাংলাদেশেও এখন (ইসলামি) সন্ত্রাসীরা শক্তিশালী বোমা তৈরি করতে সক্ষম।

এই অভিযোগও তোলা হচ্ছে যে বাংলাদেশে আলকায়েদা সক্রিয় এবং ইতোমধ্যে রকেট লঞ্চার ও গ্রেনেডসহ সন্ত্রাসীরা ধরা পড়তে শুরু করেছে। এই অভিযোগ, পাঠকের মনে থাকা উচিত, নতুন নয়। দুই হাজার সালে বিল ক্লিনটন যখন বাংলাদেশ সফর করছিলেন তখনও এই সুনির্দিষ্ট অভিযোগটাই তোলা হয়েছিল। তখন দাবি করা হয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন যদি দূতাবাসের বাইরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোথাও যাবার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে তাঁর জন্য সেটা খুবই বিপজ্জনক হবে। কারণ আলকায়েদা রকেট লঞ্চার দিয়ে তাঁর হেলিকপ্টার ভূপাতিত করতে পারে।

বিল ক্লিনটন মার্কিন দূতাবাসের বাইরে যাননি। তিনি বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে বেরিয়ে সিধা ভারতে চলে যান। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা, গোয়েন্দা তৎপরতা ও প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত সম্পর্ককে আরো পরিণত করার ক্ষেত্রে তাঁর এই সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট কার্ল জে সিওভাক্কো ইরাকে যখন যুদ্ধ করেছেন, তখনকার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি লেখা লিখেছেন। সেই লেখায় তাঁর ইউনিটের বাগদাদে যাবার প্রথম চার দিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

(দেখুন, http://www.airdefenseartillery.com/ online/September202008/6-52Convoy.htm সেখানে তাঁর দায়িত্বের কথা বলতে গিয়ে লিখেছেনঃ As the Headquarters Battery executive officer, I was charged with the details of the route, including building the convoy manifest and order, distributing equipment within the convoy, ensuring that all soldiers knew the route, and coordinating for re-supply. We began by distributing all pluggers (military and civilian Global Positioning Systems), night vision goggles, and SINGCARS radios throghout the convoy order, Waypoints were programmed and everyone learned the route. হেডকোয়ার্টারের ব্যাটারি একসিকিউটিভ অফিসার হওয়ায় তাঁর ইউনিটকে বাগদাদের পথে নিয়ে যাবার পুরো দায়িত্ব ছিল সিওভাক্কোর। তিনিই কনভয়ের সকলকে মারণাস্ত্র বিতরণ করেন। সব সৈনিক ইরাকে যাবার রাস্তা চেনে কি না সেটাও সিওভাক্কোকে নিশ্চিত করতে হয়। কে কোথায় আছে কে কোন অবস্থায় যেন বোঝা যায় তার জন্য সামরিক ও বেসামরিক উভয় ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন তিনি। রাত্রে দেখবার জন্য বিশেষ ধরনের সামরিক গগলসও তিনিই বিতরণ করেন।

ইত্যাদি। তাঁর সফরের কয়েকটি ছবিও আছে তাঁর লেখায়। মার্কিন ৬-৫২ এয়ারডিফেন্স আর্টিলারি ইরাকের নজফে তাদের দখলদারি পতাকা কিভাবে পুঁতে দিচ্ছে সেই ছবিটি এখানে পাঠকদের জন্য দিচ্ছি। সেই দিন হয়তো খুব দূরে নয়, যখন মার্কিন সৈন্যরা বাংলাদেশে ইসলামি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার নামে এই ভাবেই বাংলাদেশের বুকে তাদের নীলকালো তারকাখচিত পতাকা পুঁতে দেবে। কুয়েতের ক্যাম্প ভার্জিনিয়া থেকে যাত্রা শুরম্ন করে ৬০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সিওভাক্কোর ৬-৫২ এয়ারডিফেন্স আর্টিলারি ইউনিট কিভাবে প্যাট্রিয়ট ব্যাটারিগুলো বাগদাদে সাজিয়েছে, সেই ছবিটিও এখানে ছাপছি।

পাঠক আশা করি কার্ল সিওভাক্কো সম্পর্কে খানিক ধারণা করতে পারছেন। বলা বাহুল্য, কার্ল সিওভাক্কো একজন মার্কিন সেনা অফিসার। শুধু ইরাক নয়, তিনি সেনা অফিসার হিশাবে সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও জার্মানিতেও কাজ করেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় আলকায়েদা বা উগ্রবাদী ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে সরব থাকতে পারেন। সন্ত্রাসের বিরম্নদ্ধে তাঁর অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত অবস্থান থাকতেই পারে।

বাংলাদেশকে ভালোবাসেন এমন বহু নাগরিক আছেন যাঁরা কোন প্রকার উগ্রবাদ, সহিংসতা বা সন্ত্রাস বরদাশত করেন না। কিন্তু সিওভাক্কোর মতো একজন মার্কিন সেনা অফিসারের সঙ্গে সজীব ওয়াজেদ জয়ের শুধু বন্ধুত্ব নয়, রীতিমতো আদর্শগত বন্ধুত্ব অবিশ্বাস্যই বলতে হবে। যদি আমরা মনে রাখি, তিনি জন্মসূত্রে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। কার্ল সিওভাক্কো শুধু মার্কিন সামরিক অফিসার নন, তিনি আলকায়েদার প্রচারণা পদ্ধতির ওপর একজন গবেষক। ওয়েস্ট পয়েন্টের কাউন্টার টেররিজম সেন্টার থেকে তাঁর প্রকাশিত থিসিস মার্কিন যুদ্ধ পরিকল্পনার সঙ্গেই সরাসরি সম্পৃক্ত।

রণনীতি ও রণকৌশলের দিক থেকেই তিনি সেই গবেষণাটি করেছেন। যুদ্ধে সরাসরি জড়িত নয় সেই সব বেসামরিক মুনাষজনকে (On Combatant) যুদ্ধের বাইরে রাখার ড়্গেত্রে ১৯৯১ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে আলকায়েদার নীতির যে বিবর্তন ঘটেছে, সেই সম্পর্কে সিওভাক্কোর একটি লেখা পাঠক পড়তে পারেন- 'Small Wars Journal' নামে একটি পত্রিকায়। লেখাটির শিরোনামঃ The Erosion of Non-combatant Immunity within Al Qaeda। আলকায়েদা কিভাবে প্রচারণা চালায় ও জনমত সৃষ্টি করে সেই সম্পর্কে গবেষণা বা সিওভাক্কো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অফিসার হিশাবে যুদ্ধে গিয়ে কিভাবে ইরাক দখল করেছেন ইত্যাদি আমাদের জন্য কোনই গুরুত্ব বহন করতো না, যদি আমরা বাংলাদেশে নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে তার সঙ্গে যৌথভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের লেখাটি হাতে না পেতাম। বাংলাদেশ ইসলামি সন্ত্রাসীদের দখলে চলে যাচ্ছে বা চলে গিয়েছে ইতোমধ্যেই- একমাত্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেই ইসলাম মোকাবিলার পরিকল্পনা তারা হাজির করেছেন।

সিওভাক্কোর সঙ্গে এই পরিকল্পনার মূল সুরটা সামরিক। এর টার্গেট বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী ইসলামপন্থীদের দখলে চলে যাচ্ছে বা গিয়েছে অতএব সোনাবাহিনীকে পুনর্গঠনের জন্য আওয়ামী লীগকে ড়্গমতায় আনা দরকার। এই থিসিস আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। জয়-সিওভাক্কোর সেকুলার পস্নানটা কী? বাংলাদেশকে ইসলামের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে কী করতে হবে? কেন জয়-সিওভাক্কোর পরিকল্পনাকে বাংলাদেশকে ইসলামের হাত থেকে রক্ষা বলছি, শুধু ইসলামপন্থীদের কবল থেকে নয়? বাংলাদেশ ইসলামি আচার-আচরণে এতোই বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে যে জয়-সিওভাক্কো প্রশ্ন করছেন, Can the Awami League stop the growing tide of Islamism in a country that has seen the sale of burkas rise nearly 500 percent in the last five years? The answer is yes if it implements the following secular renewal plan জয়-সিওভাক্কো উদ্বিগ্ন এ জন্য যে বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে বোরখা বিক্রি বেড়েছে ৫০০ গুণ।

বোরখা বিক্রির এই বিচিত্র ও বিস্ময়কর হিশাব কোথায় কিভাবে পাওয়া গেল তার কোন হাদিস দেওয়া হয় নি। পাঠক কৌতুক বোধ করতে পারেন, কিন্তু বাংলাদেশে যে ‘ইসলামিজম’ বেড়েছে তার প্রমাণ হচ্ছে পাঁচ বছরে ৫০০ গুণ বোরখা বিক্রি বৃদ্ধি। খুবই উচ্চস্তরের গবেষণা! জয়-সিওভাক্কো বলছেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা এনে বাংলাদেশে বোরখা বিক্রি বন্ধ করতে হবে। ইসলাম বুঝতে তারা বোরখা ছাড়া আর কিছু বুঝেছেন বলে এই লেখায় মনে হয়নি। বাকিটা সামরিকভাবে ইসলামপন্থীদের মোকাবিলার বয়ান।

কিভাবে এই বোরখায় আচ্ছন্ন বাংলাদেশকে মুক্ত করা সম্ভব? First, it must modernize the curriculum of the madrasses. Secound, It must build proper, secular elementary Schools and hospitals. Third, it should increase the recruitment of secular-minded students into the military from secular cadet academies. Fourth, it must attempt to rehabilitate known extremist clerics. Lastly, and perhaps the most abstract solution, it must push to vanquish Bangladeshi poverty and illiteracy that consistently ranks among the worst in the world. This plan would make the country less hospitable to a growing Islamist movement and help return Bangladesh to its secular roots. একঃ মাদ্রাসা শিক্ষার পাঠ্যক্রম বদলাতে হবে। দুইঃ সঠিক ভাবে ধর্মনিরপেড়্গ প্রাথমিক স্কুল ও হাসপাতাল বানাতে হবে। (ধর্মনিরপেক্ষ ইস্কুল না হয় বোঝা গেল, ‘ধর্মনিরপেক্ষ হাসপাতাল’ কী জিনিস? এটা বুঝলাম না। বাংলাদেশে খ্রিষ্টধর্মে অনুপ্রাণিত বহু মানুষ হাসপাতাল চালাচ্ছেন, বিপুলসংখ্যায় বিদেশি সাহায্য আসছে খ্রিষ্টীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। তাহলে ‘সেকুলার’ হাসপাতালটা কী? তার মানে কি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম অনুসারীরা হাসপাতাল, স্কুল, সাহায্যসংস্থা বা সেবামূলক কাজ চালালে অসুবিধা নাই?) ‘ইসলাম’ নাম নিয়ে বা ইসলামের বরাতে কেউ যেন স্কুল-হাসপাতাল নামক কর্ম করতে না পারে আওয়ামী লীগকে জয়-সিওভাক্কো সেই প্রস্তাবই দিচ্ছেন।

জয়-সিওভাক্কো অবশ্য পরিষ্কার ভাবেই সৌদি আরব ও কুয়েতের টাকায় চলা স্কুল-মাদ্রাসার কথাও বলছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ডিএফআইডি, কানাডিয়ান সিডাসহ সমস্ত পশ্চিমা দেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে অর্থ নিতে পারে, তাহলে সৌদি আরব, কুয়েত বা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোন দেশ থেকে অর্থ এলে অপরাধ কোথায়? অসুবিধা কী? সবধরনের বিদেশি অর্থ বা সাহায্য বন্ধের একটা দাবি অবশ্যই করা যেতে পারে। যেমন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পড়্গ থেকে বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াবার কথা বলা হয়। যদি শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের কথাই ওঠে তখন ‘আধুনিক’ ও ‘মাদ্রাসা’ শিক্ষা উভয়কেই ঔপনিবেশিক, সাম্রাজ্যবাদী ও পরাশক্তির আধিপত্য থেকে মুক্তির কথাও বলা যায়। তা না বলে যদি শুধু মাদ্রাসাকেই টার্গেট করা হয় তখন বুঝতে হবে এটা মার্কিন যুদ্ধ পরিকল্পনার নীতি।

যদি উভয়ের সংস্কারের কথা ওঠে- যেন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অকুতোভয় নাগরিক হিশাবে আমরা তরুণদের গড়তে পারি- তখন শিড়্গাসংস্কারের একটা ইতিবাচক অর্থ দাঁড়ায়। পরাশক্তি মাদ্রাসাকে তাদের সামরিক পরিকল্পনায় বিশেষ ভাবে টার্গেট করে, কারণ তাদের ধারণা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বা পরাশক্তির আধিপত্যের বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধের ড়্গেত্রে মাদ্রাসা ও মাদ্রাসা শিড়্গা গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতএব একে ধ্বংস করাকে তারা যেমন তাদের পররাষ্ট্রনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে, একই ভাবে তাদের যুদ্ধপরিকল্পনার মধ্যেও মাদ্রাসার ছাত্রদের বিশেষ ভাবে টার্গেট করে। এর বিপরীতে আধুনিক শিক্ষা গোলাম ও অপদার্থ ‘ডি-জুইস’ জেনারেশান পয়দা করে। এরা পরাশক্তির স্থানীয় বরকন্দাজের ভূমিকা রাখে।

জয়-সিওভাক্কোর পরিকল্পনা এক দিকে তরম্নণদের এই গোলামির প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা এবং অন্য দিকে মাদ্রাসা শিক্ষার বিরম্নদ্ধে পরাশক্তির যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অধিক কিছু নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইসরাইল, যুক্তরাজ্য বা ইউরোপের বিরম্নদ্ধে জয়-সিওভাক্কোর কোন বক্তব্য নাই, থিসিস হচ্ছে সৌদি আরব ও কুয়েত বা সামগ্রিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আমাদের দুষমন। এইসব দেশ থেকে টাকা ও অর্থ আসার কারণে বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে ৫০০ গুণ বেশি বোরখা বিক্রি হয়েছে এবং সেনাবাহিনীতে মাদ্রাসার ছেলেরা ঢুকে যাচ্ছে। অতএব ঠেকাও। আওয়ামী লীগকে আগামি নির্বাচনে জয়যুক্ত করে আনো।

একমাত্র আওয়ামী লীগই বাংলাদেশে ইসলামের বারোটা বাজিয়ে দিতে সড়্গম। খুবই সুন্দর থিসিস। জয়-সিওভাক্কোর থিসিসের প্রধান দিক হচ্ছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। এই কথা আগেও বলেছি। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে ইসলামপন্থীরা গেঁড়ে বসেছে- এই প্রচার বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে।

ভারতের পত্রপত্রিকায় দেখেছি নাম ধরে ধরে সেনাকর্মকর্তাদের কারা কারা ইসলামি দলের সঙ্গে যুক্ত বা সদস্য তাদের বিরম্নদ্ধে প্রচারণা চলেছে। এইসব পত্রিকা পরিচিত বা বহুল পঠিত পত্রিকা নয়। কিন্তু এই প্রচারণাগুলো চালানো হয়েছে খুবই সফলতার সঙ্গে। তবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ যখন ‘নেগোসিয়েশানের’ জন্য দেখা করেছিলেন, তাকে বাস্তôব অবস্থাটা জিজ্ঞাসা করা কি দরকার ছিল না? যে সকল পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে সে সকল ঠিক বা বেঠিক সেটা কি তার কাছ থেকে জানার সুযোগ ছিল না? সেনাবাহিনীতে “অবিশ্বাস্য হারে ইসলামবাদীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার” ((the astronomical growth of Islamists in the military)) কাহিনী কোথায় পেলেন সজীব ওয়াজেদ জয় ও কার্ল সিওভাক্কো? সেনাবাহিনীকে বিশেষ ভাবে টার্গেট করা ও আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে নিয়ে এসে সেনাবাহিনী পুনর্গঠনের যে পরিষ্কার পরিকল্পনা বা আওয়ামী ’ংবপঁষধৎ ঢ়ষধহ’ আমরা জয়-সিওভাক্কোর থিসিসে পাচ্ছি তা কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা দেখবার জন্য এখন আমাদের আগামি নির্বাচন অবধি অপেক্ষা করতে হবে। হাল্কা ও সহজ চালেই কথাগুলো বলছি।

কিন্তু সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন আগামি নির্বাচনের একটি ইস্যু- সন্দেহ নাই। পারবে কি আওয়ামী লীগ? ২৪ নভেম্বর ২০০৮। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪১৫। শ্যামলী। ইমেইলঃ


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।