রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে আরব খেজুরের পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফলও হয়েছে ব্যাপক। দেশে খেজুরের চাহিদা মেটাতে স্থানীয়ভাবে পরিকল্পিত খেজুর চাষে মনোযোগী হয়েছেন দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা। আরব খেজুরের পরীক্ষামূলক চাষ করে সফল হয়েছে রাঙামাটির রাইখালীর কৃষি গবেষণা কেন্দ্র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম হারুনূর রশীদ ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্যাম প্রসাদ চাকমা।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সুত্রে জানা গেছে, আরব দেশের মেসোপটেমিয়াকে খেজুরের আদিনিবাস হিসেবে ধরা হয়।
তবে বাংলাদেশে যে খেজুর চাষ হয় সেটি বন্য। দেশে খেজুরের চাহিদা মেটাতে ২০০৮-০৯ সালে সৌদি আরব থেকে সরাসরি গাছ থেকে প্রায় কয়েকশ বীজ নিয়ে এসে চারা করে রাইখালীর গবেষণার বাগানে রোপন করা হয়েছে। এসব গাছে প্রচুর ফল ধরে। যার আকার ও আকৃতি খুবই আকর্ষণীয়। সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে আরব খেজুর চাষ কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গবেষণার মাধ্যমে খুব শীঘ্রই এ আরবের খেজুর বাংলাদেশের মাটিতে জাত হিসেবে অবমুক্তায়িত করা হবে। তাদের মতে, এই গবেষণা সফল হলে বাংলাদেশের আর কোনো খেজুরের আমদানির প্রয়োজন হবে না এবং দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে।
রাঙামাটির রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্যাম প্রসাদ চাকমা জানান, সেৌদি আরব থেকে সরাসরি গাছ থেকে প্রায় কয়েকশ বীজ নিয়ে এসে পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও রাইখালীতে চাষ করা হয়। এসব খেজুরের ফুল ও ফলের আকার ও আকৃতি খুবই আকর্ষনীয়। ফলগুলো লম্বায় ৪০০ থেকে ৪.৬০ সে.মি. এবং প্রস্থে ২.০০ থেকে ২.৫০ সে.মি।
এক একটি ফলের ওজন ১২ থেকে ১৫ গ্রাম এবং বীজের ওজন আধা গ্রামের মতো।
এ ব্যাপারে গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম হারুনর রশীদ জানান, আমাদের দেশে খেজুর একটি খুবই অবহেলিত ফল। যার সন্ধান মিলে রাস্তার পাশে আনাচে কানাচে বা পুকুর পাড়ে। পরিকল্পিত খেজুর বাগানের সন্ধান দেশে কোথাও পাওয়া যায়নি। তাছাড়া আমদের দেশের যে খেজুর চাষ হয় সেটি বন্য।
যার কোন তেউড় চারা হয় না। যার আদিনিবাস ভারত উপমহাদেশ এবং উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম ফিনিক্স সিলভেস্ট্রিস। আরবের খেজুরের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম ফিনিক্স ডেকটাইলিফেরা যা বীজ ও তেউড়ের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়।
তিনি আরো বলেন, খেজুর একটি ভিন্নবাসী উদ্ভিদ যার স্ত্রী ও পুরম্নষ ফুল ভিন্ন ভিন্ন গাছে হয়ে থাকে। ফলের ভালো আকার আকৃতির জন্য পুরুষ ফুলের রেণু খুবই জরুরী।
বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলে স্ত্রী গাছ পাওয়ার অনুপাত খুবই কম। ফলে তেউড়েরর মাধ্যমে খেজুরের বংশবিসত্মার করাই উত্তম যা মাতৃগুণাগুণ বজায় রাখে।
দেশীয় আবহাওয়া মাটি ও পরিবেশের ভারসাম্যকে কাজে লাগিয়ে রাঙামাটির পাহাড়ে আরবের খেজুরর বাগান ও ফলন সম্ভব হয়েছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।