আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাঙামাটির পরিস্থিতি নিয়ে জরুরী আইন শৃঙ্খলা বৈঠক-১৪৪ধারা অব্যাহত, সরকারী কলেজ বন্ধ ঘোষণা

my country creat me a ginipig রাঙামাটির পরিস্থিতি নিয়ে জরুরী আইন শৃঙ্খলা বৈঠক-১৪৪ধারা অব্যাহত, সরকারী কলেজ বন্ধ ঘোষণা স্টাফ রিপোর্টার : রাঙামাটি সরকারী কলেজে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙ্গালী ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় রাঙামাটি শহরে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অর্ধ শতাধিক পাহাড়ি-বাঙ্গালী আহত হয়েছে। বিক্ষুদ্ধ জনতা মোটর সাইকেলে আগুন, দোকান ও গাড়ি ভাংচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সরকারী কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

আহতদের মধ্যে রাঙামাটি সিএমএইচে ৩৮ জন, রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ১২জনকে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। শহরে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেনা বাহিনী ও র‌্যাব টহল বাড়ানো হয়েছে।

উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বিকেলে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, চট্টগ্রাম জিওসি মেজর জেনারেল সাব্বির আহমেদ. জেলা প্রশাসক, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে জরুরী আইন শৃঙ্খলা বৈঠক হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজে এক বাঙ্গালী ছাত্রকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ী ও বাঙ্গালী ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে কয়েকশ বহিরাগত পাহাড়ি যুবক লাটিসোটা, দা-কিরিচ নিয়ে কলেজে অতর্কিত হামলা করে। পাহাড়িরা তান্ডব চালিয়ে ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে বাঙ্গালী ছাত্রদের মারধর করে। এসময় কলেজে অনার্স ১ম বর্ষের মধ্যবর্ষ পরীক্ষা চলছিলো। আহত কলেজ ছাত্র হাসান মুরাদ জানায় অস্ত্রধারী পাহাড়ি যুবকরা পরীক্ষার হলে হামলা করে খাতা ছিড়ে ফেলে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের এলোপাতারি মারধর করে।

আতংকে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা দিগবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। বহিরাগত পাহাড়ি যুবকরা কলেজ অধ্যক্ষের রুমসহ পুরো কলেজে ভাংচুর চালায়। পরে ঐ বহিরাগতরা কলেজের বাইরে এসে দোকানদার ভাসমান তরকারি ব্যবসায়ীদের পিটিয়ে আহত করে। আহত কলেজ হোস্টেলের পাহাড়াদার রমজান আলী (৬০) জানান কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই বহিরাগত পাহাড়িরা যেখানে যাকে পাচ্ছে তাকে পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে। এদিকে কলেজে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়।

মহুর্তেই সংঘর্ষ শুরু হয় শহরের বনরূপা, কাঠালতলী, ত্লছড়ি বাজারে। বনরূপায় পাহাড়িরা রাস্তায় বেরিয়ে আসলে বাঙ্গালীরা পাল্টা হামলা চালানোর চেষ্টা চালালে ব্যাপক ইটপাটকেল ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। সেখানে উত্তেজিত জনতা পাঁচটি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবলছড়ি বাজরের ব্রিজের গোড়ায় পাহাড়ি-বাঙ্গালী মুখোমুখি অবস্থান নিলে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

বিকেলে রাঙাপানি এলাকায়া একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয় পাহাড়ি যুবকরা। এদিকে রাঙামাটি টিটিসিতে এক বাঙ্গালী ছাত্র নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে কলেজ গেইট এলাকায় বাঙ্গালীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সাথে আধাঘন্টা বাঙ্গালীদের ইটপাটকেল ছুড়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনতে লাটিচার্জ ও কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে রাঙামাটি উপজেলা পরিষদে ইউএনডিপির উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি কর্মশালা শেষে বের হওয়ার সময় উত্তেজিত বাঙ্গালীরা তাদের উপর হামলা চালায়।

এতে কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহত হয়। বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি বিশ্বকল্যাণ চাকমা জানান, কিছু বাঙ্গালী যুবক অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে আহত করে। সংঘর্ষ চলাকালে শহরে যান চলাচল ও দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা আটকা পড়ে। গাড়ি বন্ধ থাকায় আহতদের যথাসময়ে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয়নি।

পরে সেনাবাহিনীর সহয়তায় আহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়। বিকেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিভিন্ন এলাকায় আটকা পড়া সাধারণ মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি ফিরে যায়। কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে দুপুরে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরী বৈঠক হয়েছে। বৈঠক থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। বহিরাগত পাহাড়িদের হামলার ঘটনাকে পরিকল্পিত মনে করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজের অধ্যক্ষ বাঞ্চিতা চাকমা জানান, হামলার কারণ খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কলেজে সাধারণ ছাত্রদের উপর পাহাড়িদের হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ। দুপুর ১২টা ৫ম মিনিটে প্রশাসন রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। বিকেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে শহরের সংঘর্ষ ও কয়েকজন নিহত হওয়ার গুজব বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সেখানে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

ঐসব এলাকায় সেনা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সুপার মাসুদ-উল হাসান জানান, শহরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে আছে। Click This Link  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.